ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ৮৯ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৫
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ৮৯ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু

ঢাকা: শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু জানিয়েছেন, বিদায়ী বছরে অর্থাৎ ২০১৪ সালে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে (বিসিক) ৮৯ হাজার ৩৭৫ জনের নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। বছরটিতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে মোট বিনিয়োগ হয়েছে ১৬ হাজার ৭৩৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা।


 
শনিবার (১০ জানুয়ারি) সকালে শিল্পমন্ত্রণালয়ে বর্তমান সরকারের এক বছরে শিল্পমন্ত্রণালয়ের অর্জন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
 
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এক বছরে শিল্পমন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও অর্জন তুলে ধরে বলেন, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ও দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যেও শিল্পখাত কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান ৩২ শতাংশে এবং শিল্প শ্রম শক্তির পরিমাণ ২০ শতাংশে উন্নতি হয়েছে। জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান ৪০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হবে। এ লক্ষে শিল্পনীতি ২০১৫ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 
২০১৪ সালের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে যে বিনিয়োগ হয়েছে তার ২ হাজার ৮১২ কোটি টাকা বিনিয়োগকারীদের নিজস্ব তহবিল থেকে। বাকি টাকার মধ্যে ৪ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা ঋণ সংশ্লিষ্ট ইকুইটি এবং ৯ হাজার ৪২১ কোটি টাকা ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠাণের ঋণ। এ বিনিয়োগের ফলে শুধু বিসিক শিল্পনগরীতে প্রায় ২৩ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
 
এছাড়া বিসিকের ৭৪টি শিল্পনগরীতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের প্রায় ১৮ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। এ বিনিয়োগের ফলে ২০১৪ সালে কারখানাগুলোতে প্রায় ৪২ হাজার ৫০৯ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে রফতানি হয়েছে প্রায় ২৩ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকার পণ্য সামগ্রী। যা মোট রফতানি আয়ের ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
 
মন্ত্রী জানান, সরকার দায়িত্ব নিয়ে ২০১৪ সালে ইরি-বোরোর পিক সিজন সুষ্ঠুভাবে সার ব্যবস্থাপনা করেছে। সার পরিবহণ, বিপণন ও বিতরণে দেশের কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। কৃষকদের সুলভ মূল্যে সার দিতে ইউরিয়া সারের মূল্য ২০ টাকা থেকে কমিয়ে প্রতি কেজি ১৬ টাকা করা হয়েছে। ডিএপি সারের মূল্য ২৭ টাকা থেকে ২৫ টাকা করা হয়েছে। ফলে দেশে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে।
 
আমু বলেন, বিসিক শিল্পনগরীর প্লট বরাদ্দ নিয়ে শিল্প স্থাপন করেনি এ ধরনের ৫৭টি প্লট বাতিল করা হয়েছে। বাকি প্লটগুলোও চিহ্নিত করে বাতিল করা হবে। বাতিল করা প্লাটগুলোর মধ্যে ২৭টি প্লট ২০ জন নতুন উদ্যোক্তাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
 
শিল্পমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বন্ধ কারখানা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শিগগির চট্টগ্রাম কেমিক্যাল কমপ্লেক্স (সিসিসি) পুনরায় চালু করা হবে। খুলনা নিউজ প্রিন্ট মিলস্ এবং খুলনা হার্ডবোর্ড মিলস্ পুনরায় চালু করতে কারখানা দু’টি পরিদর্শন করেছি। সুন্দরবনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করায় মিল দু’টি স্থানীয় কাঁচামাল থেকে চালানো সম্ভব না। তাই নতুন প্রযুক্তিতে এগুলো পুনরায় চালুর ব্যাপারে বিদেশি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এছাড়া ঢাকা লেদার কোম্পানি লিমিটেড পুনরায় চালুর বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্চে।
 
রাজধানী থেকে ট্যানারি স্থানান্তরের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সিইটিপি ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে সকল কাজ শেষ করা হয়েছে। সিইটিপির ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে বাকি ৪০ শতাংশ চলতি বছরের মার্চের মধ্যে শেষ করা হবে।
 
২০১৪ শিল্পমন্ত্রণালয়ের অন্যান্য পদক্ষপের বিষয়ে মন্ত্রী জানান, শাহজালাল সার কারখানা নির্মাণ করা হয়েছে, চিনিশিল্প লাভজনক করতে পণ্য বৈচিত্রকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, আখের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে, চিনিকলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, ‘র’ সুগার থেকে রিফাইন্ড সুগার উৎপাদনের কার্যক্রম চলছে, চিনিকলে প্রেসমাড ও ডিস্টিলারি স্পেন্ট ওয়াস থেকে বায়োফার্টিলাইজার বা জৈব সার উৎপাদন করা হচ্ছে, সুগারবিট থেকে চিনি উৎপাদনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, ২০১৩-১৪ মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদন হয়েছে, শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, সংবাদপত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, ৫৪ জন শিল্প উদ্যোক্তাকে সিআইপি (শিল্প) কার্ড দেওয়া হয়েছে, জাতীয় মেধাসম্পদ নীতি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, স্বয়ংক্রিয় ট্রেডমার্ক নিবন্ধন সেবা চালু করা হয়েছে, বিএসটিআই’র ল্যাবরেটরির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টাইম চালু করা হয়েছে, ভ্রাম্যমাণ ক্যালিব্রেশন সেবা চালু করা হয়েছে, বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, শিল্প ব্যবস্থাপনা দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, প্রধান বয়লার পরিদর্শন করে কার্যলয় থেকে ৪ হাজার ৬১ টি বয়লার পরিদর্শন ও চালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, ৩১৭টি নতুন বয়লার রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) থেকে ৮২৪ জনকে প্রশক্ষিণ দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে, কন্টেইনারবাহী জাহাজ নির্মাণ করা হচ্ছে।
 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব  ফরহাদ উদ্দিন, বেগম পরাগ, সুষেণ চন্দ্র দাস এবং মন্ত্রণালয়ের অধীন সব কর্পোরেশন/সংস্থার চেয়ারম্যান ও প্রধানরা।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৫

** দেশের পরিস্থিতি গত বছরের চেয়ে ভালো
** অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান ৩২ শতাংশ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।