ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাগেরহাটে সোনালী ব্যাংকের সরবরাহ করা নোটে গরমিল, অভিযোগ রূপালীর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৫
বাগেরহাটে সোনালী ব্যাংকের সরবরাহ করা নোটে গরমিল, অভিযোগ রূপালীর ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাগেরহাট: ব্যাংক থেকে ব্যাংকে সরবরাহ করা এক হাজার টাকার একটি প্যাকেটে (দশ বান্ডিল, যার প্রতি বান্ডিলে থাকার কথা ১ হাজার টাকার ১শ’ নোট) এক হাজার টাকার নোটের বদলে পাওয়া গেছে ১১৮টি একশ' টাকার নোট। রোববার বাগেরহাটে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।



ওই প্যাকেটে মোট দশ লাখ টাকা থাকার কথা থাকলেও ১১৮টি এক হাজার টাকার নোটের বদলে সেখানে ১শ’ টাকার নোট থাকায় প্যাকেটটিতে ঘাটতি তৈরি হয় মোট ১ লাখ ৬ হাজার ২০০ টাকা।

রোববার (১২ জুলাই) বাগেরহাটের সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখা থেকে রূপালী ব্যাংক বাগেরহাট শাখায় সরবরাহ করা টাকায় এ গরমিল ধরা পড়ে।

এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ক্যাশ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে রূপালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের অভিযোগ, সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ক্যাশ কর্মকর্তাসহ ওই ব্যাংকে কর্মরত একটি অসাধু চক্র ঈদকে সামনে রেখে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনার কোনো সুরাহা করতে পারেনি।

শহরের রাহাতের মোড়ে অবস্থিত রূপালী ব্যাংক বাগেরহাট শাখার কর্মকর্তা (ক্যাশ) আব্দুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, রোববার শিক্ষকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার জন্য ব্যাংকে বড় ধরনের টাকার চাহিদা তৈরি হয়। সকাল ১১টার দিকে তিনি তার শাখার জন্য পঞ্চাশ লাখ টাকা (৫ প্যাকেটে ৫০ বান্ডিল) আনতে শহরের রেলরোডে অবস্থিত সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে পঞ্চাশ লাখ টাকা নিয়ে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নিজ ব্যাংকে ফিরে আসেন তিনি ও ব্যাংকের প্রহরী আব্দুস সাত্তার।

ক্যাশে টাকা বের করে গোণার সময় একটি প্যাকেটের দশটি বান্ডিলের প্রত্যেকটিতে বেশ কিছু একশ' টাকার নোট পাওয়া যায়। গণনা করে সেখানে মোট ১১৮টি একশ' টাকার নোট পাওয়া যায়। এতে, ওই প্যাকেটে মোট ১ লাখ ৬ হাজার ২০০ টাকার ঘাটতি হয়।

আব্দুল কাদের বলেন, এ ঘটনার পর তিনি শাখা ব্যবস্থাপক এস এম হাবিবুর রহমানকে বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত টাকার প্যাকেটসহ সোনালী ব্যাংকে ফিরে ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপক শেখ মুজিবুর রহমানকে ঘটনাটি জানান।

এ সময় সোনালী ব্যাংকের ক্যাশ ইনচার্জ আবুল খায়ের নূরুল ইসলাম টাকার বান্ডিলে দুই দফা পিন মারার দাগ থাকার কারণ দেখিয়ে ঘাটতির টাকা পূরণ বা বদলে দিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ করেন আব্দুল কাদের।

রূপালী ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার শাম্মী ফারহানা বলেন, সোনালী ব্যাংক থেকে আনা টাকার বান্ডিল গুণতে গিয়ে অসামঞ্জস্য ধরা পড়ে। টাকার বান্ডিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের শটিং ব্যান্ড ও ক্যাশ লেবেল লাগানো ছিল।
 
এ ব্যাপারে রূপালী ব্যাংক বাগেরহাট শাখার ব্যবস্থাপক এস এম হাবিবুর রহমান নাম বলেন, সোনালী ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিকল্পিতভাবে রোববারের এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

তবে সোনালী ব্যাংকের ক্যাশ ইনচার্জ আবুল খায়ের নূরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা এসেছে। রূপালী ব্যাংকের চেক পেয়ে ওই টাকা থেকেই তাদের ৫০ লাখ টাকা দেওয়া হয়।
 
সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখার শাখা ব্যবস্থাপক শেখ মুজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রূপালী ব্যাংককে দেওয়া টাকায় একটি সমস্যা হয়েছে। এক হাজার টাকার বান্ডিলে একশ' টাকার নোট পাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। তারা সকাল ১১টার দিকে টাকা নিয়ে গেছে। আমার কাছে অভিযোগ করেছে পৌনে একটার দিকে। বিষয়টি আসলে কি হয়েছে তা আমরা খুঁজে দেখার চেষ্টা করছি।

সোনালী ব্যাংক জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আশুতোষ মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন,এই টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এসেছে। সমস্যাটি কোন পর্যায়ে হয়েছে তা আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধির সামনে সোমবার ওই টাকা গুণে সমস্যার উৎস চিহ্নিত ও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা নিয়ে কেউ চলে যাওয়ার পর অভিযোগ করলে তা আইনানুগভাবে গ্রাহ্য নয়। তবে বিষয়টি যেহেতু আরেকটি ব্যাংকের সঙ্গে এবং টাকার পরিমাণ বড় তাই আমরা বিষয়টি যথাযথভাবে সমাধানের চেষ্টা করবো।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৫     
এমজেড/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।