ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গতি পাচ্ছে পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৫
গতি পাচ্ছে পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: উদ্বোধনের প্রায় দু’বছর পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর (এনবিআর) বিশেষ উদ্যোগে গতি পাচ্ছে পানগাঁও নৌ টার্মিনাল।
 
২০১৩ সালের ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গা তীরের দেশের পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) উদ্বোধন করেন।


 
আগামী তিন মাসের মধ্যে এ টার্মিনাল গতি পাবে। প্রতিবছর এ টার্মিনাল থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে বলে মনে করছেন এনবিআর কর্মকর্তারা।

সূত্র জানায়, এ টার্মিনালের বিভিন্ন দিক বিবেচনায় এনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ইতোমধ্যে ত্রৈমাসিক একটি পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মাধ্যমে এ টার্মিনাল চালু হবে।

এ টার্মিনালে গতি আনতে কৃষি, নৌ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, টেলিযোগাযোগ ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

টার্মিনালে এসব মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পেতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অর্থমন্ত্রণালয়ের সহায়তায় যৌথসভা করার উদ্যোগ নিয়েছে।

সূত্র আরও জানান, আন্তর্জাতিক ও দেশের মধ্যে এ টার্মিনাল ব্যবহারে উৎসাহিত করতে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সঙ্গে সভা করবে।

এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের এ টার্মিনাল ব্যবহারে আগ্রহী করতে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিকভাবে এ টার্মিনালকে পরিচিত করতে থাকছে উদ্যোগ।

সূত্র জানায়, সরকার চট্টগ্রাম বন্দর ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কমাতে বিশ্বমানের এ টার্মিনাল নির্মাণ করে।

পরে নৌমন্ত্রণালয় এ টার্মিনাল ব্যবহারে আমদানি-রপ্তানিকারকদের সুবিধা দিলেও জাহাজ সংকট ও প্রচারের অভাবে কাঙ্খিত সফলতা পায়নি।

সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান এ টার্মিনাল পরিদর্শন করেন।

সূত্র জানায়, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে নৌ টার্মিনাল যে কোন দেশে আমদানি-রপ্তানিতে বিশেষ অবদান রাখছে। এ দিক থেকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে আমদানি-রপ্তানি করা কন্টেনারবাহী পণ্যের ৯০ শতাংশ সড়ক ও ১০ শতাংশ রেলপথে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে আসে।

সড়ক পথে পণ্য পরিবহনে খরচ বেড়ে যায়। চাপ পড়ে সড়কে, থাকে ঝুঁকি। যানজটের ফলে সময়মত পণ্যবাহী কন্টেইনার পৌঁছানো সম্ভব হয় না।

এছাড়া প্রাকৃতিক দুযোর্গ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, কন্টেইনারগুলো সময়মত পরিবহন না পাওয়াতে চট্টগ্রাম বন্দরে লেগে থাকে কন্টেইনার জট।

পণ্য পরিবহনে গতিশীলতা, অর্থ ও সময় সাশ্রয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রায় ১শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে বিআইডব্লিওটিএ এর জমিতে এ টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়।

এ টার্মিনালে প্রতিবছর ১ লাখ ১৬ হাজার কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করা যাবে। প্রতিবছর সরকার এ থেকে রাজস্ব পাবে হাজার কোটি টাকা।

এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, পানগাঁও নৌ টার্মিনাল রাজস্ব আদায়ের একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র।

তিনি বলেন, সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থায় বিশ্বের সব দেশে আমদানি-রপ্তানিতে নৌ-টার্মিনাল (আইসিটি) ব্যবসার অপার সম্ভাবনার ক্ষেত্র।

নৌ-টার্মিনালের গুরুত্বও বেশি। সব দেশ এ সুযোগকে কাজে লাগাতে পারলে আমরা কেন পারব না। এ টার্মিনালের গতির মাধ্যমে আমরাও এ সুযোগ কাজে লাগবো।

চেয়ারম্যান বলেন, প্রচারের অভাবে এ টার্মিনাল পরিচিতি পাচ্ছে না। খুব শীঘ্রই আমদানি-রপ্তানিকারকসহ বিশ্বে টার্মিনাল পরিচিত হয়ে উঠবে।

তিনি বলেন, এ বছরের মধ্যেই টার্মিনাল চালু করা হবে। আমরা একটি ত্রৈমাসিক পরিকল্পনা তৈরি করছি। আশা করি ৩ মাসের মধ্যে এ টার্মিনাল চালু হবে।

আমদানি-রপ্তানিকারকদের এ টার্মিনালে উৎসাহিত করতে এফবিসিসিআই ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করা হবে।

এ টার্মিনালকে আন্তর্জাতিক আমদানি ও রপ্তানিকারকদের কাছে পরিচিত করতে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৫
আরইউ/জেডএম/এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।