ঢাকা: আরও ১০ থেকে ১৫ দিন বেশি দামেই পেঁয়াজ কিনতে হবে ভোক্তাদের। গত দুই সপ্তাহ ধরে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজর দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ টাকা।
বৃহস্পতিবার (০৬ আগস্ট’২০১৫) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
অভিযোগ রয়েছে আমদানি করা এই পেঁয়াজের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়লেও এর সুফল কৃষকের ঘরে যাচ্ছে না। দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ার নেপথ্যে অনেকেই ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটকেও দায়ী করছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমার জন্য আরও ১০ থেকে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে। আশা করছি ১৫ দিনের মধ্যেই পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশিল পর্যায়ে চলে আসবে।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ। এছাড়া ভারতে গত মৌসুমে পেঁয়াজের চাষাবাদ খুবই খারাপ হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। তবে পর্যাপ্ত মজুদ ও বাজার পর্যবেক্ষণের কারণে অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশ কম দামেই পেঁয়াজ কিনতে পারছেন ক্রেতারা।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায় দেশি ও বিদেশি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫২ টাকায়।
বিদেশি পেঁয়াজ আমদানিকারক আশিক এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. নুরুল ইসলামও আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন। নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তান ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া চাহিদা ও সরবরাহের সমন্বয় ঠিক থাকলে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমতে পারে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের পাশাপাশি কয়েকটি দেশে তারা এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খুলেছেন। এতে সামনের সপ্তাহ থেকে আমদানির পরিমাণও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ফলে আশা করা যায় দুই এক সপ্তাহের মধ্যে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমবে। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমলে দেশি পেঁয়াজের দামও কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাণিজ্যে মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, পেঁয়াজের দাম বাড়ার পর থেকেই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তারা যোগাযোগ রাখছেন। এছাড়া বাজার তদাররিকও করা হচ্ছে।
রাজধানীর শাহজাদপুর দক্ষিণ কাঁচা বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবদুল আজিজ বলেন, পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ার কারণে অনেক ক্রেতাই বিরুপ মন্তব্য করেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। দাম কম হলে বিক্রি করতেও সুবিধা, নইলে অনেকেই সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বেশি রাখে।
মহাখালী থেকে পেঁয়াজসহ কাঁচাবাজার করে বাড়ি ফিরছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী পারভেজ আহম্মেদ। তিনি জানান, চাহিদার প্রায় এক তৃতীয়াংশই দেশি পেঁয়াজের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। আমদানির পেঁয়াজের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশি পেঁয়াজের এভাবে দাম বাড়া কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এতে অবশ্যই এক শ্রেণির ব্যবসায়ীদের কারসাজি রয়েছে।
নাটোরের এক পেঁয়াজ চাষি গত মাসেই সব পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি করে দিয়ে অন্য ফসল শুরু করছেন। তিনি জানান, দেশি পেঁয়াজের দাম বাজারে বৃদ্ধি পেলেও তাদের মতো তৃণমূল পর্যায়ের চাষীরা এর কোনো সুফলই পান না। অথচ অনেক সময়ে দাম না কারণে সড়কে ফসল ফেলে দিতে হয় এই চাষীদেরই।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৫
একে/এনএস