ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আর্থিক সেবা সন্তোষজনক না হলেও উন্নত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৫
আর্থিক সেবা সন্তোষজনক না হলেও উন্নত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, দেশে কার্যরত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রদান করা সেবা সন্তোষজনক না হলেও অনেক উন্নত। মেজর সেবা ব্যাংক থেকে দেওয়া হলেও এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সরকারি সেবা আগের চেয়ে ৩-৪ গুণ বেড়েছে।



মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ‘ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনের ‘এক্সেস টু ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।  

ইনস্টিটিউট অব মাইক্রো ফাইন্যান্স এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্রঋণের ২৭ শতাংশ সুদ নেওয়া একজন দরিদ্র মানুষের জন্য খুবই কষ্টকর। যদিও ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেবা দিতে অনেক খরচ হয়। ব্যাংকের বাইরে যেসব প্রতিষ্ঠান সেবা দিচ্ছে তারা যদি ব্যাংকের মতো উদ্ভাবনী কার্যক্রম গ্রহণ করে, তাহলে এ সেবার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে ৮০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে সেবা আর্থিক সেবা পাচ্ছে।  

সেমিনারে ‘এক্সেস টু ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউট অব মাইক্রোফাইন্যান্সের নির্বাহী পরিচালক এম এ বাকী খলিলী।

প্রবন্ধে তিনি বলেন, দেশের ৮৮ শতাংশ পরিবার আর্থিক বাজারের সেবা পেয়ে থাকে। এর মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ ব্যাংকের সেবা পায়। ৭৯ শতাংশ পরিবার পায় ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান ও মহাজনের কাছ থেকে। ২৫ শতাংশ শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই ঋণ পান না। ব্যাংকঋণ পান ধনী ও উচ্চ উপার্জনক্ষম শিক্ষিত ব্যক্তিরা। ৪২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, তারা ঋণ পাওয়ার জন্য উপযুক্ত নয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,  ৫২ শতাংশ পরিবার বিমা সেবা সম্পর্কে জানলেও সেবা নিচ্ছে মাত্র ১২ শতাংশ পরিবার। প্রতারণার ভয়েও এ সেবা নিতে অনেকেই আগ্রহী নয় বলেও উল্লেখ করেন খলিলী।

প্যানেল আলোচকের বক্তব্যে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব হোসেন বলেন, প্রচলিত আর্থিক সেবার ব্যপ্তি বাড়লেও তা সমাজের গভীরে যেতে পারেনি। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিয়ে যতোটা বক্তব্য শুনছি বা যে প্রচারণা রয়েছে ততোটা বাস্তবে হয়নি।

ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণ পদ্ধতি পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রামীণ ব্যাংক মডেলের বাইরে বের হতে পারছে না। ঋণ প্রকল্পের মেয়াদ সেবা গ্রহীতার চাহিদামতো করতে হবে। অনেকের টাকার প্রয়োজন হয় একমাসের জন্য। এক বছরের প্রকল্প থাকায় তারা মহাজনের কাছ থেকে টাকা নেন।

এক  বছরের কম বা বেশি মেয়াদে পশুপালন, মাছ চাষ ইত্যাদি এসেছে যেখানে কম সময়ের জন্য বা কৃষি যন্ত্রপাতি খাতে বেশি সময়ের জন্য ঋণ দেওয়া যেতে পারে।

সভাপতির বক্তব্যে ইনস্টিটিউট অব মাইক্রোফিন্যান্সের চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, দারিদ্র্য নিরসনে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রশিক্ষণের সমানভাবে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক উন্নয়ন প্রয়োজন। কারণ, রাজনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া মানব উন্নয়ন সম্ভব নয়।

এর আগে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে ‘রিটার্ন টু মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড এক্সেস টু ফিন্যান্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউট অব মাইক্রোফাইন্যান্সের সহযোগী গবেষক ফারাহ মুনির। এতে প্যানেল আলোচক ছিলেক বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. রাসিদান ইসলাম, পিকেএসএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল কাদের।

দিনব্যাপী এ সেমিনারে দেশে কার্যরত বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৫
এসই/আরআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।