ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কাঁচামরিচের বাজারে আগুন!

হাসিবুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫
কাঁচামরিচের বাজারে আগুন! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: গত কয়েকদিনের টানা বর্ষায় প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। আর এতেই আগুন লেগে গেছে কাঁচামরিচের বাজারে।



রাজধানীর খুচরা বাজারে কাঁচামরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। পাইকারি বাজারেও মরিচের মূল্য চড়া।
 
মঙ্গলবার দিনগত রাতে (২৬ আগস্ট) কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে বাজারে আনা কাঁচামরিচ ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। রাজশাহী এলাকার মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৩৪-১৩৬ টাকা কেজি দরে, চুয়াডাঙ্গার মরিচ ১৩০-১৩২ টাকা আর ভারতীয় মরিচ প্রতি কেজি মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ৮৫ টাকা পর্যন্ত।
 
কারওয়ান বাজারের নোয়াখালী সবজি ভাণ্ডারের ম্যানেজার মো. ইউনুস বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বন্যা হওয়ায় অনেকের ক্ষেত ডুবে গেছে। ফলে, চাহিদা অনুপাতে কাঁচামরিচ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই, দামও বেশি।
 
তিনি বলেন, গৃহস্থের কাছ থেকে মরিচ কিনতে গেলেও ১২০ টাকার ওপরে দিতে হচ্ছে। আর বেপারির কাছে ১২৫ টাকার নিচে কোনো মরিচ নেই।
 
তবে কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকের হাত থেকে ভোক্তার হাত পর্যন্ত পৌঁছাতে অন্তত পাঁচটি ধাপে মরিচের দাম বাড়ে। এর মধ্যে কারওয়ান বাজারেই বেপারি, আড়ৎদার, পাইকার তিনটি ধাপে মরিচের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তবে কৃষক তার উৎপাদিত ফসল সরাসরি বাজারে বিক্রি করতে পারেন না। তাকেও স্থানীয় আড়ৎদারের মাধ্যমে বিক্রি করতে হয়।
 
এদিকে, বুধবার বিকেলে রাজধানীর হাতিরপুল, নিউমার্কেট, পলাশী কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা দরে।
 
নিউমার্কেটের সবজি দোকানদার রহমত মিয়া বলেন, কাঁচামরিচ বেচে লাভ না; উল্টো লস (লোকসান) হচ্ছে। বেশির ভাগ মরিচ বর্ষার পানিতে পচে যাচ্ছে। এই মরিচ কোনোভাবেই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত থাকবে না। আবার কাস্টমারের কথাবার্তা শুনলে মনে হয়, মরিচ ফাউ এনে, তাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছি। মরিচ তো কিনছি দেড়শ টাকা করে, তাহলে বেচবো কত টাকা দরে!

অপরদিকে, মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই কাঁচামরিচের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতারা বাধ্য হয়ে কাঁচামরিচের বিকল্প শুকনো মরিচের দিকে ঝুঁকছেন। আবার কেউ কেউ কিনলেও নামেমাত্র পরিমাণে কিনে বাসায় ফিরছেন।
 
সবজি কিনতে আসা ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মচারী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পেঁয়াজ-মরিচের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে খাওয়াদাওয়া বাদ দিতে পারলেই ভালো হতো। ২০ টাকায় মরিচ দিয়েছে, গোটা বিশেক। কিছুই বলার নেই।
 
একদিকে বর্ষার পানি, অন্যদিকে বিভিন্ন পর্যায়ের ফড়িয়া ও অতি-মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের লাগামহীন দাম নির্ধারণ,  সব মিলিয়ে আকাশ ছোঁয়ার অপেক্ষায় কাঁচামরিচের মূল্য।

কারওয়ান বাজারে যে কাঁচামরিচের কেজি ১৩০-১৪০ টাকা, ওই কাঁচামরিচই খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে, ২০০ টাকা কেজি দরে। অথচ বাজার তদারকিতে নেই কোনো কর্তৃপক্ষ!
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫
এইচআর/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।