ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পঞ্চগড়ে তেজপাতার বাণিজ্যিক চাষ বাড়ছে

রাজিউর রহমান রাজু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৫
পঞ্চগড়ে তেজপাতার বাণিজ্যিক চাষ বাড়ছে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পঞ্চগড়: সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তেজপাতার বাণিজ্যিক চাষ। ব্যাপক চাহিদা ও বাজারমূল্য ভালো থাকায় এতে আগ্রহ বাড়ছে এ অঞ্চলের চাষিদের।



অর্থকারী ফসল হিসেবে তেজপাতার চাষ হচ্ছে এখন  পঞ্চগড়ের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। এরইমধ্যে পঞ্চগড়ে উৎপাদিত তেজপাতা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পূর্বে যেসব উঁচু জমিতে অন্যান্য চাষাবাদ হতো না কিংবা দীর্ঘদিন ধরে পতিত থাকতো। এখন সেসব জমিতে তেজপাতার চাষ হচ্ছে। বাজারমূল্য ও চাহিদার কারণে দিন দিন ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাড়ছে তেজপাতা বাগান ও চাষির সংখ্যা।

পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, তেজপাতার চারা গাছ রোপণের দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাতা সংগ্রহ করা যায়। বছরে দুই থেকে তিনবার বাগান থেকে পাতা সংগ্রহ করা হয়।

গত অর্থবছরে জেলার ৪৩ হেক্টর জমিতে তেজপাতার চাষ হয়েছে। চলতি বছর তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৯০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে তেজপাতা বাগানের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিনশ।

এদিকে, পঞ্চগড়ে চাষকৃত তেজপাতা অধিক সুগন্ধি এবং ওজনে ভারী হওয়ায় অল্প পরিশ্রম  ও সময়ে লাভের মুখ দেখছেন তেজপাতা চাষিরা।
 
এছাড়া পঞ্চগড়ের মাটি তেজপাতা চাষের উপযোগী হওয়ায় দিনদিন বেড়েই চলছে এর আবাদ। ফলে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে মসলা তৈরির কাঁচামাল ও ওষধি পণ্য  হিসেবেও তেজপাতা সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।  

জেলার বোদা উপজেলার বেংহাড়ি-বনগ্রাম ইউনিয়নের ফুলতলা এলাকার তেজপাতা চাষি আনিসুর রহমান জানান, দুই বছর আগে তিন একর জমিতে তেজপাতার চাষ শুরু করেন তিনি। এবার প্রথম বাগানটি ৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন।

তিনি জানান, এ জমি অনেক উঁচু হওয়ায় দীর্ঘদিন পতিত ছিল। অন্য কোনো আবাদ হতো না। এখন থেকে এ জমির তেজপাতা বছরে দুইবার বিক্রি করতে পারবেন তিনি।

সদর উপজেলার জালাসীপাড়া এলাকার চাষি মো. শাহজালাল জানান, তিনি সাড়ে চার বিঘা জমিতে তেজপাতা চাষ করেছেন। ব্যবসায়ীরা এসে এসব বাগান থেকেই কেজিপ্রতি কাঁচা পাতা ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে  কিনে নিয়ে ‍যায়। এছাড়া চুক্তিতে পুরো বাগানের ‍পাতাও বিক্রি করা যায়।

পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক স ম আশরাফ আলী বাংলানিউজকে বলের, অল্প খরচে ও অল্প পরিশ্রমে তেজপাতা চাষ অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় এটা পঞ্চগড়ের কৃষকদের মধ্যে নতুন প্রেরণা তৈরি করেছে। ফলে দিন দিন উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন চাষিরা। পঞ্চগড় কৃষি বিভাগ প্রতিনিয়ত কৃষকদের নানা পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করছে।

পঞ্চগড়ের তেজপাতা দেশের মসলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।