ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আনারস পাতার সুতায় তৈরি হচ্ছে নানা পণ্য

এসএম শহীদ, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
আনারস পাতার সুতায় তৈরি হচ্ছে নানা পণ্য ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মধুপুর (টাঙ্গাইল): খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ উন্নয়ন ও রফতানি আয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় দেশের অর্থনীতিতে কৃষির ভূমিকা অনস্বীকার্য। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার পরবর্তী ধাপে অর্জিত উন্নয়নকে আরও সুসংহত করার জন্য স্থায়িত্বশীল উৎপাদন ব্যবস্থা, কৃষিকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা বড় চ্যালেঞ্জ।



এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্পদের নতুন উৎসের সন্ধান, প্রযুক্তিগত মান সম্পন্ন নতুন পণ্যের উদ্ভাবন ও বিকাশ এবং তা ব্যবহারের বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যেই মধুপুরে আনারসের পাতার আঁশ থেকে নানা পণ্য উৎপাদনে সুতা তৈরির প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলছে।

আনারসের পাতা হতে আঁশ সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত এবং উৎপাদিত আঁশ দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরির কৌশল, দক্ষতা অর্জন এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নসহ পণ্য বাজারজাতকরণ ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা- জ্ঞান লাভ এ প্রশিক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্য।

‘কৃষিজ বর্জ্য হতে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক আঁশ থেকে উৎপন্ন পণ্যের মান উন্নয়নের মাধ্যমে নারীদের আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়ন’- স্লোগানের এ প্রকল্প পরিচালনা করছে বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিডব্লিউসিসিআই)।

মধুপুর উপজেলার জলছত্র এলাকায় প্রকল্প কার্যালয়ের উৎপাদন কেন্দ্রে নির্বাচিত ৫শ’ গ্রামীণ নারী এ প্রশিক্ষণ নিয়েছে। প্রকল্পটিতে আর্থিক সহযোগিতা করছে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পার্টনার সংস্থা হিসেবে আছে ব্যুরো বাংলাদেশ।

প্রশিক্ষণকালেই অংশগ্রহণকারী নারীরা বিভিন্ন আকর্ষণীয় পণ্য যেমন হাতব্যাগ, ভ্যানিটিব্যাগ, গহনার বাক্স, ওয়ালম্যাট, টিস্যু বক্স, কলমদানি, হ্যাট, নারীদের বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কার ইত্যাদি তৈরি করছে।

এ জাতীয় কৃষিজ বর্জ্য থেকে প্রাকৃতিক আঁশ ও সুতা উৎপাদন করে পরিবেশসম্মত পোশাক ও হস্তশিল্প উৎপাদনের মাধ্যমে নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের রফতানি আয় বৃদ্ধির অপার সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।                                        

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বৃহৎ পরিসরে আনারসের পাতা থেকে সুতা ও কাপড় তৈরির মাধ্যমে দেশের  আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব। তবে তার জন্য প্রয়োজন এই খাতের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।
 
প্রকল্পের মধুপুর ইউনিট ম্যানেজার এসএম আজাদ রহমান বাংলানিউজকে জানান, টেকনিক্যাল অফিসার কাজী আলী আহমেদ, ক্লাস্টার নেত্রী সুমা বেগম, লিপি বেগম, আমেনা বেগমসহ  অন্যান্য ক্লাস্টারের নেত্রীরা প্রশিক্ষণ পরিচালনা ও সহায়তা করছেন।

ম্যানেজার আরও জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু হস্তশিল্প সম্প্রসারণের জন্য দেশের চারটি ইউনিট অফিসের মাধ্যমে ২ হাজার সংগঠিত এসএমই নারী সদস্যদের প্রশিক্ষণ চলছে। তিনটি ইউনিট অফিস নরসিংদী, টাংগাইল ও গাইবান্ধায় অবস্থিত এবং ওই তিনটি ইউনিটে কলাগাছ থেকে আঁশ সংগ্রহ করা হয়। এরই মধ্যে প্রশিক্ষণের মাঝপথ অতিক্রম করেছে মধুপুর ইউনিট।

বিক্রয়যোগ্য পণ্য উৎপাদন ও সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা এবং নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্যগুলো উপযুক্ত ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর ওপরই নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট নারীদের স্বপ্নের সত্যিকারের বাস্তবায়ন।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
এসএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।