ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বন্ধ ২০ কারখানা

চিংড়ি রফতানি কমেছে ৩১৫ কোটি টাকা

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
চিংড়ি রফতানি কমেছে ৩১৫ কোটি টাকা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: সময়টা ভালো যাচ্ছে না চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের। এক বছরের ব্যবধানে চিংড়ি রফতানি কমেছে ৩১৫ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, পুঁজি হারিয়ে বন্ধ হয়েছে অন্তত ২০টি চিংড়ি শিল্প কারখানা।

সম্প্রতি বাংলাদেশের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ইপিবি’র তথ্য মতে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে চিংড়ি রফতানি হয়েছিলো ৫৫০ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ডলার। এক বছরের ব্যবধানে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চিংড়ি রফতানি কমে দাঁড়ায় ৫০৯ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলার। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩১৫ কোটি টাকা।

রফতানির এই অধো:গতির ফলে অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়ে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন বলেও জানায় ইপিবি।

রফতানি কমে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে ডলার ও ইউরোর মূল্যমানের অস্থিরতাকে দায়ী করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) তথ্য বলছে, চিংড়ি রফতানি কমে যাওয়ায় পুঁজি হারিয়ে অন্তত ২০টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশে গত অর্থবছরে প্রায় ৫০টি চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ কারখানা সচল থাকলেও ২০১৪-১৫ অর্থবছরের শেষে সক্রিয় চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ কারখানার সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫টিতে। এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ১০ লাখ শ্রমিক পড়েছেন বিপাকে।

বিএফএফইএ’র সভাপতি এস এম আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, চিংড়ি শিল্প বর্তমানে কঠিন সময় পার করছে। ইউরো ও ডলারের দরপতনের কারণে আমাদের চিংড়ির দাম বর্হিবিশ্বে প্রায় ৩০শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ কমে গেছে। অনেক ব্যবসায়ীর ক্ষতির পরিমাণ এতো বেশি যে, তারা কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এমন কারখানা আছে প্রায় ২০টি।

তিনি জানান, এ শিল্পের সঙ্গে প্রায় দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। ২০টি কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ বেকার হয়েছেন। কেউবা আবার অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

চিংড়ি শিল্পের এই দুঃসময়ে সরকারকে সংশ্লিষ্টদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

এজন্য নগদ প্রণোদনা রফতানির ওপর ৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা ও সরকারি সহায়তা চেয়েছেন চিংড়ি ব্যবসায়ীরা।
 
অন্যদিকে, ইউরো ও ডলারের দরপতনের পাশাপাশি ভিনদেশি ‘ভেনামি’ মাছের প্রভাবে রফতানি অনকেটা কমেছে বলে মনে করছেন চিংড়ি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ওরিয়েন্টাল ফিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল বাকি।
 
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভেনামি’ নামে এক প্রজাতির মাছ আছে যা দেখতে অনেকটা চিংড়ির মতো। কিন্তু ‘ভেনামি’র দাম চিংড়ির তুলনায় কয়েকগুণ কম। ফলে ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশের চিংড়ির ক্রেতাদের ‘ভেনামি’ মাছের চাহিদা বেড়েছে।

আব্দুল বাকি বলেন, ইউরো ও ডলারের দাম টাকার বিপরীতের কমে যাওয়ায় ওইসব বাজারে বাংলাদেশি চিংড়ির চাহিদা কিছুটা কমেছে। যার কারণে কমেছে রফতানি। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক কারখানা। এ সময় সরকারের সহায়তা ছাড়া আমরা কিছুতেই আর সামনে এগোতে পারবো না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহ-সভাপতি শুভাশীষ বসুর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
ইউএম/টিআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।