ঢাকা: ব্যাংক সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে না আসলে পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশ সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘সরকারি-বেসরকারি পরিকল্পনা প্রণয়ন কর্মশালা: ২০২১ সালের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ১২ থেকে ১৫ শতাংশ সুদ দিয়ে শিল্প করা কঠিন। সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে না আসলে পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশ সম্ভব হবে না। এমন কী ব্যাংকের সুদ সিঙ্গেল ডিজিটে না আসলে দেশের উন্নতিও সম্ভব নয়।
ডিম, দুধ, মাছ ও মাংস সকল বয়সের মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশুর জন্য খুবই দরকারি খাদ্য। তবে ২০২১ সাল নাগাদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে পোল্ট্রিখাত উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।
সেক্ষেত্রে পুষ্টি-স্বল্পতা কিংবা অপুষ্টি দূর করতে ডিম ও মাংস খাওয়ার পরিমাণ অনেক বাড়াতে হবে। পাশাপাশি স্বল্পমূল্যে প্রাণিজ আমিষের যোগান নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।
আগামী প্রজন্মের সুস্থতা ও মেধার বিকাশ এবং বর্ধিত জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন কতখানি বাড়ানো প্রয়োজন এবং এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগের চিত্র সম্পর্কে আলোচনার লক্ষ্যে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
দেশে মাংসের চাহিদা ৬৯.৫১ লাখ মেট্রিকটন। কিন্তু উৎপাদন হয় ৫৮.৬২ লাখ মেট্রিকটন। মাংসের ঘাটতি রয়েছে ১০.৯১ লাখ মেট্রিকটন।
এছাড়া দেশে ডিমের চাহিদা ১৬৫০.৪৮ কোটি। উৎপাদন হয় ১০৯৯.৫২ কোটি। দেশে ডিমের ঘাটতি ৫৫০.৯৬ কোটি বলে জানান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায়।
তিনি বলেন, শুধু চাহিদা পূরণই যথেষ্ট নয়। নিরাপদ খাদ্য এবং ভোক্তার অধিকারের ব্যাপারেও সজাগ থাকতে হবে।
পোল্ট্রি শিল্পকে বিমার আওতায় আনা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।
তিনি বলেন, একটি স্থানে বার্ড ফ্লু হলে দেখা যায় পুরো এলাকার ভাল মুরগিও মেরে ফেলা হয়, এতে খামারিরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে হলে পুষ্টি ও বিনিয়োগ দু’টিই গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সাল নাগাদ পোল্ট্রি শিল্পে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ বাড়াতে এবং পোল্ট্রি শিল্পের অগ্রগতিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে এফবিসিসিআই বলেন মাতলুব আহমেদ।
সভাপতির বক্তব্যে বিপিআইসিসি’র আহ্বায়ক মসিউর রহমান বলেন, পোল্ট্রি শিল্পে বিনিয়োগ ২৫ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করতে হবে।
‘শীঘ্রই হালাল মাংস রপ্তানির প্রস্তুতি নিচ্ছি। এজন্য রপ্তানি ক্ষেত্রে সকল বাধাগুলো দূর করতে সরকারের একান্ত সহযোগিতা চাই। ’
বর্তমানে দেশের মোট মাংসের চাহিদার ৪০-৪৫ শতাংশ আসছে পোল্ট্রি শিল্প থেকে।
এছাড়া বর্তমান চাহিদার শতভাগ ডিম, মুরগি, বাচ্চা এবং ফিড এখন দেশীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে বলেন মসিউর।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিপিআইসিসি’র যুগ্ম-আহ্বায়ক শামসুল আরেফিন খালেদ। এছাড়া পোল্ট্রি শিল্পের উপর প্রেজেন্টেশন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর রিসার্চ ফেলো ড. সুবীর কান্তি বৈরাগী।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
এফবি/আরআই