ঢাকা: রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে শুক্রবার (০১ জানুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা।
এরইমধ্যে মেলা আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতাবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে বাণিজ্য মেলা সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এসব তথ্য জানান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ মেলার আয়োজন করেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, শুক্রবার শুরু হওয়া এ মেলা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে।
‘গতবারের মতো এবারও মেলায় প্রবেশ মূল্য প্রাপ্ত বয়ষ্কদের ক্ষেত্রে ৩০ টাকা ও অপ্রাপ্ত বয়ষ্কদের জন্য ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ’
এরই মধ্যে ১৩ লাখ ৭৩ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে মেলা মাঠে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল ও প্যাভিলিয়ন বসানো হয়েছে বলে জানান বাণিজ্য মন্ত্রী।
স্টল ও প্যাভিলিয়ন:
ছোট বড় মিলে এবারের মেলায় ১৬৮টি প্যাভিলিয়ন ও বিভিন্ন সাইজের ৩৮৭টি স্টল বসানো হবে। এর মধ্যে ২৬টি ফুড স্টল ও ৫টি বড় সাইজের রেস্টুরেন্ট থাকছে।
এসবের মধ্যে ৬০টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ১০টি জেনারেল প্যাভিলিয়ন, ৩টি রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন, ৩৮টি ফরেন প্যাভিলিয়ন, ৩৬টি প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৩টি জেনারেল মিনি প্যাভিলিয়ন, ৬টি রিজার্ভ মিনি প্যাভিলিয়ন, ২টি ফরেন মিনি প্যাভিলিয়ন, ৬৪টি প্রিমিয়ার স্টল, ১৬টি ফরেন প্রিমিয়ার স্টল, ২৭৫টি জেনারেল স্টল ও ২৫টি ফুড স্টল এবং ৫টি রেস্টুরেন্ট থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেলায় একটি ই-শপ, একটি শিশু পার্ক, সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্রের আদলে ইকো পার্ক, একটি ই-পার্ক, দুইটি রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, দু’টি মা ও শিশু কেন্দ্র, একটি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, ১৪টি স্পটে গার্ডেন, ১৩টি স্পটে ৫২টি টয়লেট, ৩টি স্পটে ৭৭০টি গাড়ি রাখার জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এছাড়া মেলায় মুসল্লিদের নামাজ পড়ার জন্য একটি মসজিদ ও আনসার এবং বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যদের জন্য দুইটি ডরমেটরিও স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ।
মেলায় কঠোর নিরাপত্তা:
মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি, র্যাব, আনসার ও বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্স নিয়োজিত থাকবে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রঅ।
তিনি বলেন, আগত দর্শনার্থীদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সার্বক্ষণিক মেলা প্রাঙ্গণে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। মেলার বাইরে মাঠের আশপাশের এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত টহলে নিয়োজিত থাকবেন।
এছাড়া মেলা প্রাঙ্গণের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, গেইট, পার্কিং এরিয়া, ও চারপাশে ১০০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এসব ক্যামেরা মনিটরিং করবে বলে জানান মন্ত্রী।
যেসব দেশ অংশ নিচ্ছে:
আয়োজকরা জানান, এবার ৫টি মহাদেশ থেকে ২২টি দেশ মেলায় অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তো আছেই। এবার প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছে ৭টি দেশ।
এগুলো হচ্ছে-ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, মরিশাস, ঘানা, নেপাল, হংকং, জাপান, মরক্কো, ভুটান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
মেলা মাঠে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন:
বিগত বছরের মতো এবারও নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা দিতে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ান স্থাপন করা হয়েছে। এ প্যাভিলিয়নে ফিল্ম প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন ডকুমেন্টরি প্রদর্শন করা হবে।
প্রদর্শিত উল্লেখযোগ্য পণ্য:
মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইরেক্ট্রনিক্স, পাটজাত পণ্য, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ঘড়ি, জুয়েলারি, সিরামিকস, টেবিলওয়্যার, দেশীয় বস্ত্র, ক্যাবল, মেলামাইন, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্ট ফুড, আসবাবপত্র, হস্তশিল্প ইত্যাদি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫
টিএইচ/এমএ