ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যাংকের স্থিতিশীলতার জন্য রাজনৈতিক দৃঢ়তা প্রয়োজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
ব্যাংকের স্থিতিশীলতার জন্য রাজনৈতিক দৃঢ়তা প্রয়োজন ছবি : দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ব্যাংকের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, দৃঢ়তা ও পেশাদারিত্ব প্রয়োজন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুরোপুরি স্বাধীনতা ও ব্যবস্থাপনার নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব থাকতে হবে।



শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে ‘ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ: রিফর্মস অ্যান্ড গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক গোলিটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ অভিমত দেন।

ওয়ান ব্যাংকের সহায়তায় দ্য ঢাকা ফোরাম (টিডিএফ) এ বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন টিডিএফ’র সদস্য সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশে নিযুক্ত জর্ডানের রাষ্ট্রদূত মাসুদ আজিজ, টিডিএফ’র সদস্য ফারুক সোবহান, অশোক দাস গুপ্ত, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বীরু পক্ষপাল, প্রথম আলোর যুগ্ম-সম্পাদক আবদুল কাইয়ুমসহ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের পদস্থ ও সাবেক কর্মকর্তারা।

বক্তারা ব্যাংকগুলোর বিভিন্ন ত্রুটি তুলে ধরে পরামর্শ দেন। তারা বলেন, আমাদের দেশের বড় সমস্যা; এখানে অনেক বেশি ব্যাংক। তাও আবার বেশিভাগই পরিবারতান্ত্রিক বা রাজনৈতিক। মালিক রাজনীতি করতে পারে, কিন্তু ব্যাংক পরিচালনায় সেটার প্রতিফলন থাকতে পারবে না। ব্যাংকিংয়ের জন্য পেশাদারিত্ব বড় ব্যাপার। ঋণ দেওয়ার সময় রাজনৈতিক বিবেচনার চেয়ে যোগ্যতার প্রতিযোগিতাকে প্রাধান্য দিতে হবে।

বাংলাদেশের রাস্তা নিয়মতান্ত্রিক হলে অর্থনীতিও নিয়মতান্ত্রিক (স্থিতিশীল) হবে। রাস্তায় যে হারে যানজট-অনিয়ম, এভাবে চলতে থাকলে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা থাকবে না, যোগ করেন বক্তারা।
 
মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকিংয়ের অবস্থা যথেষ্ট ভালো। তাতে অর্থনীতি কলাপ্স করার মতো সুযোগ নেই। এ নিয়ে প্যানিক সৃষ্টি করাও ঠিক হবে না।

তিনি বলেন, ব্যাংকিংয়ে নিয়মতান্ত্রিকতা ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কর্তৃত্ব ও স্বাধীনতা দিতে হবে। মনিটিরিং ও ব্যবস্থাপনা দু‘টো বিভাগকে পৃথক করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বড় সমস্যা হলো; অনেকগুলো ব্যাংক। কিন্তু সে তুলনায় ব্যবসা ক্ষেত্র কম। দেশে রাজনৈতিক সরকার থাকতে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকবে না, এটা কঠিন। তারপরও লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সহানুভূতি নয়, প্রতিযোগিতা ও প্রাপ্তিযোগ্যতা বিবেচনা করতে হবে।

ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং ডিসিপ্লিনের জন্য শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছা নয়, রাজনৈতিক দৃঢ়তাও থাকতে হবে। রাজনীতির চেয়ে বড় হলো, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা লবিষ্টদের চাপে থাকে, এগুলোর সুযোগ দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, এতোগুলো ব্যাংক, সবাই একই কাজ করে। নতুন নতুন কাজ করতে হবে। খালি ধনীদের ঋণ দিলে হবে না, গরিবদেরও তুলতে হবে। উদ্যোক্তা সৃষ্টি করাও ব্যাংকের দায়িত্ব। বুদ্ধি আছে, এমন লোকদের ধরে উঠিয়ে দিতে হবে। গরিব অল্প টাকাটাও পায় না, আর ধনীরা পেতে পেতে সব নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, চ্যালেঞ্জ আছে, কিন্তু সমাধান অসম্ভব নয়। নন পারফরমিং লোন (এনপিএল) সিন্দাবাদের বুড়োর মতো আমাদের মাথার ওপরে বসে আছে। কতোগুলো অর্থ ঋণ আদালত করে এগুলো কমাতে হবে। ভালো লোকদের পুরস্কার ও খারাপ লোকদের দ্রুত ও দৃশ্যমান শাস্তি দিতে হবে। এজন্য সাহস লাগবে। সবার সহায়তাও পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
এসইউজে/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।