ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মূল সেতুর অগ্রগতি ১৭, নদীশাসনের ১৪ শতাংশ

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৬
মূল সেতুর অগ্রগতি ১৭, নদীশাসনের ১৪ শতাংশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফইল ফটো)

ঢাকা: প্রতিদিনই এগিয়ে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণযজ্ঞ। যতোই সময় গড়াচ্ছে ততোই সেতুর অবকাঠামো দৃশ্যমান হচ্ছে।

চলতি অর্থ বছরের(২০১৫-১৬) ছয় মাসে অর্থাৎ ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পযর্ন্ত স্বপ্নের পদ্মাসেতু প্রকল্পের মূল সেতুর ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ১৭ শতাংশ এবং নদীশাসন কাজের অগ্রগতি হয়েছে ১৪ শতাংশ।

মঙ্গলবার(২০ জানুয়ারি) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৫ পযর্ন্ত ছয় মাসের অগ্রগতির প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। জমা দেওয়া প্রতিবেদনে পদ্মাসেতুসহ সেতু বিভাগের নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের আপডেট তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, ইতোমধ্যে মূল সেতুর ১০টি টেস্ট পাইলের মধ্যে চারটি টেস্ট পাইল ড্রাইভ, ভায়াডাক্টের ১৬টি টেস্ট পাইলের মধ্যে আটটি টেস্ট পাইল ড্রাইভ এবং ৬৪টি অ্যাংকর পাইলের মধ্যে ৩০টি অ্যাংকর পাইল ড্রাইভ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

সব মিলিয়ে মূল সেতুর ভৌত অবকাঠামোর অগ্রগতি হয়েছে ১৭ শতাংশ। গত মাসে যা ছিল ১৬ শতাংশ।

পদ্মাসেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে পদ্মাসেতু প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ১৭ শতাংশ।

এছাড়া নদীশাসন কাজ হয়েছে ১৪ শতাংশ, গত মাসে যা ছিল মাত্র ১২ শতাংশ। এ কাজের জন্য প্রতিদিন ২০ হাজার ৩০০টি ব্লক তৈরি হচ্ছে। এছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেমন অফিস ল্যাবরেটরি, ওয়ার্কশেড, স্টোর হাউজ, লেবারশেড, জেটি ইত্যাদি নির্মাণ কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

তবে এক মাসের ব্যবধানে বাড়েনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুনর্বাসনের কাজ। ১ হাজার ৩৭০টি প্লট ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে। যা গত মাসেও একই ছিল। বাকিগুলো দেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

সেতু প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্ত পুনর্বাসন খাত থেকে ডিসেম্বর মাস পযর্ন্ত মোট ৫৬২ কোটি ২৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত সহায়তা বাবদ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। পুনর্বাসন সাইটগুলোতে এই সময়ের মধ্যে ২ হাজার ৫৯২টি প্লটের মধ্যে ১ হাজার ৩৭০টি প্লট ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় ৬৭ হাজার ৫৫০টি গাছ লাগানো হয়েছে।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে সেতু বিভাগের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে(এডিপি) মোট বরাদ্দ ছিল ৮ হাজার ৮৭১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে অর্থাৎ ২০১৫ সালের ডিসেম্বর নাগাদ খরচ হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।

এগিয়ে যাচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুনর্বাসন করার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পিওএল সংশাধন করা হয়েছে। ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ৪ দশমিক ১৭ একর ভূমি হস্তান্তরের বিষয়ে শর্তযুক্ত অনাপত্তি পাওয়া গেছে, ভূমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে প্রাপ্ত ৪০ একর ভূমির উন্নয়ন কাজ চলমান আছে। পুনর্বাসন সাইটে ভবন নির্মাণসহ নানা নকশার কাজ চলমান আছে। সেই লক্ষ্যে ঢাকার জেলা প্রশাসক বরাবর ৬৫০ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছে।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন টানেল নির্মাণ
সেতু বিভাগ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে অবগত করেছে যে, প্রকল্পের সার্ভিস এরিয়ার জন্য ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া টানেল নির্মাণে চীনা অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের(ইআরডি)মাধ্যমে চীন সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।

তাছাড়া কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের জন্য চট্টগ্রামে দ্রুত অফিস ভাড়া করার কাজ চলমান আছে। প্রকল্পের সার্ভিস এরিয়ার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও চলমান।

এডিপি বাস্তবায়ন ও সেতু বিভাগের কয়েকটি প্রকল্প প্রসঙ্গে সেতু  বিভাগের সচিব  খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম  বাংলানিউজকে বলেন, সেতু বিভাগ এক সঙ্গে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সঠিক সময়ের মধ্যে পদ্মাসেতুর মতো কর্ণফুলী টানেল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সুন্দর মতো সম্পন্ন করবো।

বাংলাদেশ সময়: ০২১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।