ঢাকা: বেসরকারি খাতে ‘আরিশা ইকোনমিক জোন’ নামে স্পেশাল ইকোনমিক জোন (বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল) করছে দেশের স্বনামধন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মাইশা গ্রুপ।
তৃতীয় বুড়িগঙ্গা সেতু সংলগ্ন, বসিলার ওয়াসপুর ও সাভারের শ্যামপুর মৌজার সমন্বয়ে আপাতত ৮৫ একর জমিতে দূষণহীন আধুনিক সুবিধাসমৃদ্ধ এ জোন করা হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে ৮৫ একর নিয়ে করা হলেও ক্রমান্বয়ে আমিন বাজার পর্যন্ত প্রায় দুইশো একর জমিতে সম্প্রসারিত হবে এ ইকনোমকি জোন।
জোনের চিফ কো-অর্ডিনেটর মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, বেসরকারি খাতে ‘আরিচা ইকোনমিক জোন’ হবে সপ্তম।
সোমবার (১৪ মার্চ) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) মাইশা গ্রুপকে এ জোনের প্রাক-যোগ্যতা সনদ দেবে বলে জানা গেছে।
মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ সব সুবিধা থাকবে এ জোনে। ইতোমধ্যে প্রায় ৬৫ একর জমিতে বালু ফেলে ডেভলপিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এ জোন জাতীয় সংসদ ভবন থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে। ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
‘বিদ্যুতের কোনো সমস্যা থাকবে না। এখানে সিএলসি পাওয়ার কোম্পানি নামে মাইশা গ্রুপের ১০৮ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ প্রায় শেষ। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। এ কেন্দ্র থেকে ইকোনমিক জোনে ৩০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। এর ফলে বিদ্যুতের সমস্যা থাকবে না। ১০৮ মেগাওয়াট করে আরও দু’টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। সরকারের কাছে দূষণহীন ইকোনমিক জোন করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবন্ধ। ’
তিনি বলেন, বাংলাদেশি একজন তরুণ কনসালটেন্টের সহায়তায় মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের দুইটি কনসালটেন্ট গ্রুপ যৌথভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই করছে। সুইমিংপুল, হেলিপ্যাডসহ আধুনিক সুবিধা সম্বলিত একটি রেস্ট হাউজ তৈরি করা হবে। ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল খেলার দুইটি মাঠও তৈরি করা হয়েছে।
এ জোনে আধুনিক আগুন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তায় থাকবে পুলিশ স্টেশন। কাস্টমস হাউজ, ব্যাংক, বীমা, হাসপাতাল থাকবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, সব সুবিধা থাকায় ইতোমধ্যে এ জোনে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করে ভারত, জার্মানি, বেলজিয়ামসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ এ জোন পরিদর্শন করেছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। সহসাই চুক্তি হবে। বিশ্বের যতো উন্নত কোম্পানি রয়েছে তাদেরকে আমরা এখানে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সুবিধা দেবো।
‘বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আমরা বেশি উৎসাহ দিচ্ছি। কারণ, বড় কোম্পানির বিনিয়োগের সব পরিবেশ আমরা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। বিমানের পার্টস, আইসিডি, ফুটওয়্যার অ্যাসেম্বলি, ফ্যাশন ডিজাইন অ্যাসেম্বলি, অটোমোবাইল, এগ্রোসহ সব ধরনের আধুনিক কারখানার সুযোগ থাকবে। ’
চীন, তাইওয়ানসহ বিশ্বের যেসব দেশে অত্যাধুনিক ইকোনমিক জোন যেভাবে গড়ে উঠেছে, আরিশা ইকোনমিক জোনও সেভাবে গড়ে উঠবে বলে জানান তিনি।
জাপানের কারুটা এ জোনের অবকাঠামো উন্নয়ন ও মার্কেটিং করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কোম্পানিটি ভিয়েতনাম, হংকং, চীনসহ বিভিন্ন দেশে আধুনিক ইকোনমিক জোনের কাজ করেছে।
বেজা সূত্র জানায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেসরকারি খাতের ছয়টি ইকোনমিক জোনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এগুলো হলো- মেঘনা ইকোনমিক জোন, মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন, একে খান ইকোনমিক জোন, বে-ইকোনমিক জোন, আমান ইকোনমিক জোন ও আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোন।
বেজা’র চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরনের আধুনিক ইকোনমিক জোনকে আমরা স্বাগত জানাবো। অনেক কোম্পানি আগ্রহ দেখাচ্ছে। যতো ইকোনমিক জোন হবে, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে- ততো কর্মসংস্থান তৈরি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৬
আরইউ/এসএস