ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মার্জিন দ্বিগুণ হলো জ্বালানি তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর 

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৬
মার্জিন দ্বিগুণ হলো জ্বালানি তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর 

ঢাকা: জ্বালানি তেল বিপণনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তিন কোম্পানির মার্জিন বা কমিশন দ্বিগুণ করেছে সরকার।

রোববার (২৪ এপ্রিল) সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পাশাপাশি তেল বিপণনকারী কোম্পানিগুলোর মার্জিনও দ্বিগুণ করা হয়।

 

এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে। যা সোমবার (২৫ এপ্রিল) থেকেই কার্যকর হবে।

প্রতিষ্ঠান তিনটি হচ্ছে-পদ্মা অয়েল, যমুনা অয়েল ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম।  সংশ্লিষ্টদের মতে, মার্জিন দ্বিগুণ করার ফলে পরিচালন আয়ে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনে তেল বিপণনকারী কোম্পানিগুলো আগে ২৫ পয়সা মার্জিন পেত। প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী, এ মার্জিনের হার দ্বিগুণ বা ৫০ পয়সায় উন্নিত করা হয়েছে। ২০১৫ সালে অকটেন ও পেট্রোলে পদ্মা, যমুনা ও মেঘনা অয়েলের মার্জিন ছিল প্রতি লিটারে ৩০ পয়সা, যা এখন থেকে ৬০ পয়সায় উন্নিত করা হয়েছে।  

তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলে কমিশন বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। আগে প্রতি লিটার ফার্নেস অয়েলে তেল বিপণনকারী কোম্পানিগুলোর মার্জিন ছিল ৩৫ পয়সা, যা এখন ৫৫ পয়সায় উন্নিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৩ সালে জ্বালানি তেল বিপণনকারী কোম্পানির মার্জিন বাড়ানো হয়। কোম্পানিগুলোর পরিচালন আয় কমে যাওয়ায় প্রায় এক বছর আগে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) থেকে মার্জিনের হার বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিষয়টি যাচাই বাছাই শেষে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে মার্জিনের হার বাড়ানো হয়েছে।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৪-১৫ হিসাব বছর থেকে পরিচালন আয়ে বড় ধরনের সঙ্কটের মধ্যে পড়ে জ্বালানি তেল বিপণনকারী কোম্পানিগুলো। বিক্রি কমে যাওয়ার পাশাপাশি স্থায়ী খরচ বেড়ে যাওয়ায় কোনো কোনো কোম্পানি পরিচালন লোকসানের মুখে পড়ে।

যদিও অপরিচালন আয়, বিশেষ করে সুদ আয় থাকায় শেষ পর্যন্ত মুনাফায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এবার তেল বিপণনে মার্জিন দ্বিগুণ করায় কোম্পানিগুলোর পরিচালন আয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

সর্বশেষ অর্ধবার্ষিকে পেট্রোলিয়াম পণ্য ট্রেডিং থেকে পদ্মা অয়েলের মোট আয় হয়েছে ৭৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এ আয়ের সিংহভাগই আসে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন, পেট্রোল ও ফার্নেস অয়েল বিপণনে প্রাপ্ত মার্জিন থেকে।  

এর বাইরে বিপিসির পণ্য আমদানি, বেসরকারি বিদ্যুৎ খাত থেকে সেবা মাসুল, জাহাজ ভাড়াসহ অন্যান্য খাত থেকে আসা আয় কোম্পানির পরিচালন মুনাফায় যোগ হয়। যদিও সুদ বাবদ আয়ই কোম্পানির মুনাফার প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তেল বিপণনকারী অপর প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েলের চলতি অর্ধবার্ষিকে পেট্রোলিয়াম পণ্য থেকে মোট আয় হয়েছে ৪০ কোটি ৫৮ লাখ টাকায়, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। তেল বিপণন থেকে আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি স্থায়ী খরচ বৃদ্ধিতে চলতি প্রথমার্ধে পরিচালন মুনাফা আগের বছরের চেয়ে এক তৃতীয়াংশে নেমে আসে। তবে কোম্পানির অপরিচালন আয় বিশেষ করে সুদ বাবদ আয় বাড়ছে। যা কোম্পানিকে মুনাফার ধারায় রাখতে সহায়তা করছে।

তেল বিপণনকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে মেঘনা পেট্রোলিয়াম তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে পেট্রোলিয়াম পণ্য থেকে কোম্পানির মোট আয়ে তেমন পরিবর্তন হয়নি।

২০১৩-১৪ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে পেট্রোলিয়াম পণ্য থেকে কোম্পানির মোট আয় ছিল ৬৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা, যা চলতি বছরের প্রথমার্ধে ৬২ কোটি ৩ লাখ টাকায় নেমে আসে।

 অবশ্য সুদ বাবদ আয় কমে যাওয়ায় কোম্পানির মুনাফা আগের বছরের চেয়ে কিছুটা কমেছে। চলতি প্রথমার্ধে সুদ বাবদ আয় হয়েছে ৯৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যা আগের বছর ছিল ১১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এতে প্রথমার্ধে করপরবর্তী মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১০৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৬
এমএফআই/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।