ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জ্বালানি তেলে করমুক্তি চায় ‘আন্তর্জাতিক’ জাহাজ 

জেসমিন পাপড়ি, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৬
জ্বালানি তেলে করমুক্তি চায় ‘আন্তর্জাতিক’ জাহাজ 

ঢাকা: এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উপকূলীয় জাহাজ চলাচল করছে। এরইমধ্যে জ্বালানি তেল সংগ্রহের ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি চাইছে ‘আন্তর্জাতিক’ এ রুটের জাহাজ মালিকরা।

তবে কর মওকুফের এ সিদ্ধান্ত অভ্যন্তরীণ নদী পথে চলাচলকারী জাহাজগুলোর ব্যবসা হুমকিতে ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে জাহাজ মালিকদের কর মওকুফের দাবি বিবেচনায় নিতে পেট্রোবাংলাকে অনুরোধ করার কথাও ভাবছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। তবে এক্ষেত্রে ভারত কি করছে সেটিও বিবেচনায় রাখা হবে বলে পররাষ্ট্র ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে।

চলতি বছরের ১৫ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দু’দেশের মধ্যে উপকূলীয় জাহাজ চলাচল উদ্বোধন হওয়ার পর ২১ মার্চ বাংলাদেশ থেকে এমভি হারবার-১ প্রথমবার কন্টেইনার নিয়ে ভারতের উদ্দেশে যাত্রা করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, উপকূলীয় এ চুক্তির অনুযায়ী জাহাজগুলো চলাচলের জন্য বন্দর থেকে কর দিয়ে জ্বালানি সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু জাহাজ মালিকরা দু’দেশের মধ্যকার এ রুটকে ‘আন্তর্জাতিক’ যোগাযোগ উল্লেখ করে তেল সংগ্রহের ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি চাইছে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলে এ ধরনের কর থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সূত্র জানায়, সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় পেট্রোবাংলাকে এমন অনুরোধ করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে এক্ষেত্রে সমস্যার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে অভ্যন্তরীণভাবে চলাচলকারী জাহাজগুলো।  

সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, দু’দেশের পণ্য পরিবহনের আড়ালেই জাহাজগুলো অভ্যন্তরীণ পণ্যও পরিবহন করতে পারে। সেক্ষেত্রে কর দিয়ে জ্বালানি সংগ্রহকারী অভ্যান্তরীণ নদী পথে চলাচলকারী জাহাজগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে নাম না প্রকাশ করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, জাহাজগুলো দু’দেশের পণ্য বহনের আড়ালে অভ্যন্তরীণ পণ্য আনা নেওয়া করলে কিছুটা সমস্যা হবে। তবে তাদের দাবিও একেবারে অন্যায্য নয়। কারণ, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী একটি দেশের জাহাজ অন্য দেশে গেলে আন্তর্জাতিক দর অনুযায়ী জ্বালানি সংগ্রহ করলেও দেশটির কর দিতে হয় না। তবে এ বিষয়টি বিবেচনাধীন। দু’দেশের মধ্যকার যৌথ কারিগরী কমিটির সভায় বিষয়টি তোলা হবে।

তবে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর এম জাকিউর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ভারত কী করছে সেটি নিশ্চিত হয়েই বাংলাদেশ কর অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

খসড়া স্ট্যার্ন্ডাড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী, দু’দেশের মধ্যে চলাচলকারী জাহাজগুলো দ্বিপাক্ষিকভাবে নির্ধারিত স্থানগুলো থেকে তেল সংগ্রহ করতে পারবে। এছাড়া অর্থের বিনিময়ে একই দেশের নির্ধারিত স্থান থেকেও প্রয়োজনীয় তেল সংগ্রহ করার অনুমতি রয়েছে।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, মংলা, খুলনা, পায়রা, নারায়ণগঞ্জ, পানগাঁও এবং আশুগঞ্জ বন্দর আর ভারতের চেন্নাই, কৃষ্ণপাটনম, ভিশাখাপাটনম, কাকিনাদা, পারাদ্বীপ, হলদিয়া এবং কলকাতা বন্দর থেকে দু’দেশের জাহাজ তেল সংগ্রহ করার সুযোগ এসওপিতে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া পরবর্তীতে তেল সংগ্রহের এ বন্দর বাড়ানো বা কমানোর সুযোগও রয়েছে।

এসওপি অনুযায়ী, দু’দেশের মধ্যে উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের জন্য জাহাজের মান সর্বনিম্ন রিভার সি ভেসেল বা আরএসভি শ্রেণী-৪ নির্ধারণ করা হয়েছে। আর আরএসভি শ্রেণী-৩ এর জাহাজগুলো বাংলাদেশের যেকোনো বন্দরে যেতে পারবে। তবে ভারতের সব বন্দরে নয়, শুধুমাত্র কলকাতা এবং হলদিয়া বন্দরে যাওয়ার অনুমুতি পাবে। আরএসভি শ্রেণী-৩ এর হলদিয়া বা কলকাতা বন্দরে যাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে বাংলাদেশ সরকারের ছাড়পত্র ও নিবন্ধনের উপর। যাতে বিমা, অনুকূল আবহাওয়ার বিষয়গুলোও জড়িত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৬
জেপি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।