ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

লিচুর হিসাব ৮০টায় ১০০!

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৬
লিচুর হিসাব ৮০টায় ১০০! ছবি: দীপু-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সবে রং ধরেছে লিচুতে। আকারেও বাড়েনি বেশি।

তবু ভোক্তার চাহিদা মেটাতে বিক্রেতারা বাজারে তুলছেন গ্রীষ্মের রসালো এ ফলটি। ক্রেতারা দরদাম করে দেখে-শুনে কিনছেনও। কিন্তু কিনতে গিয়েই যত বিপত্তি। স্বল্প সময়ের এ ফলটি কেনার ক্ষেত্রে বিক্রেতারা চালাচ্ছেন স্বেচ্ছাচারিতা।

শ’ হিসেবে কিনতে গেলে গুনে কেনা যাবে না। আবার কিনতে হবে শ’ হিসেবেই। টক-মিষ্টি পরীক্ষা করে কিনতে গেলেও দিতে হবে বাড়তি দাম। না খেয়ে কিনলে মিলছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা কমে।

এরকম অদ্ভুত নিয়ম চালু করেছেন রাজধানীর লিচু বিক্রেতারা। কুড়িলের জোয়ার সাহারা বাজারে এক ফল ব্যবসায়ীর দোকানে লিচু কিনতে গেলে এ নিয়মের কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, ভাই লিচুর ব্যবসাটাই হচ্ছে দুই নম্বরি ব্যবসা। দুই নম্বরি না করলে লিচুর ব্যবসা করা যায় না।

১শ লিচুর দাম জিজ্ঞেস করলে তিনি প্রথমে বলেন আড়াইশ টাকা। দরদাম করে ঠিক হলো ২শ টাকা। পরে গুনে নিতে চাইলে বলেন, গুনে নেওয়া যাবে না। লিচু গুনে বিক্রি হয় না। এভাবেই ১শ নিতে হবে। কমও থাকতে পারে আবার বেশিও থাকতে পারে।

গুনে নেওয়া যাবে না তাহলে শ’ হিসেবে বিক্রি করছেন কেন জানতে চাইলে তার স্পষ্ট জবাব, গুনে লিচু বিক্রি করতাম না। এইডা দুই নম্বরি ব্যবসা। দুই নম্বরি না করলে ব্যবসা করা যাবে না। আর গুনে দেবো, যদি একদাম ৩শ টাকা দেন।

গুনে নেওয়া এবং দামের প্রসঙ্গে না গিয়ে খেয়ে টক না মিষ্টি পরীক্ষা করে নিতে চাইলে বলেন, খেয়ে নেওয়া যাবে না। খেয়ে নিতে গেলে একদাম দিতে হবে আড়াইশ টাকা।

কেমিক্যাল দেওয়া কি দেওয়া না জানতে চাইলে বলেন, সেইডা বলতে পারি না। সব লিচুই তো কয় দিনাজপুর, রাজশাহীর। কে যাচাই করবো। ওইডা বলতে পারি না। পছন্দ হইলে নেন, না হলে না নেন।

এতোগুলো কন্ডিশন মেনে সত্যি কারও পক্ষে এই লিচু আর নেওয়া সম্ভব বলে মনে হয় না।

লিচুর সংখ্যা বিভ্রাট কমবেশি রাজধানীর সব বাজারেই। রামপুরা বাজার থেকে লিচু কিনেছেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি ৫০টি লিচু কিনতে গিয়ে গুনে দেখি সাতটা কম। গুনে না নিলে প্রতি আঁটিতেই এরা হয়তো এভাবে কম দিয়ে ক্রেতাকে ঠকায়।

এই অভিযোগ প্রায় সব ক্রেতার। প্রতি শ’য়ে ১৫ থেকে ২০টি লিচু কম থাকবে এটাই যেন স্বাভাবিক। আর গুনতে গেলেই দাম বেশি। গুনতে না দেওয়ার কারণও কম থাকা।

এছাড়া সামনে গুনে দিলেও গোনায় এ ধরনের মারম্যাপ থাকে বিক্রেতাদের। নিপুণভাবেই তার সফলও হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৬
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।