ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সুপারশপ বন্ধে হাফ ছেড়ে বাঁচবে মধ্যবিত্ত!

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৬
সুপারশপ বন্ধে হাফ ছেড়ে বাঁচবে মধ্যবিত্ত!

ঢাকা: বাংলানিউজের পাঠক ও ফেসবুক বন্ধু মিলটন সরকার মন্তব্য করেছেন, ‘সুপারশপ বন্ধ হলে মধ্যবিত্তরা হাফছেড়ে বাঁচবে!’ সুপারশপের নামে ঢাকা শহরে পরিচালিত চেইনশপগুলো একদিন বন্ধ রাখার খবরে এই মন্তব্য তার।

রোববার সুপারশপগুলো ঘোষণা দিয়ে বন্ধ রাখে বাংলাদেশ সুপারমার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসওএ)।

মূলত এসব সুপারশপে নিম্নমানের খাদ্যপণ্য বিক্রি আর ইচ্ছামাফিক মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া বিভিন্ন ব্যবস্থার প্রতিবাদেই এই ধর্মঘট।

এ বিষয়ে নিয়ে শনিবার রাতে বাংলানিউজ প্রকাশ করে ‘আবদার বটে!’ শিরোনামে একটি খবর। সামাজিক মিডিয়ায় যা ভাইরাল হয়ে ছড়ায়। সেখানেই আসতে থাকে শত শত মন্তব্য। এই মন্তব্যকারীদের মধ্যে মিলটন সরকার একজন। যিনি বলেছেন, এমনটা হলে মধ্যবিত্তরা হাফ ছেড়ে বাঁচবে।

শিমু খান নামে একজন ফেসবুক বন্ধু বিএসওএ’র ওপর চড়াও হয়েছেন এই বলে যে, এই তথাকথিত সুপারশপ মালিকেরা ক্রেতাদের সামান্য তোয়াক্কাও করে না। এদের প্রতিবাদের সাহস কোথা থেকে আসে সেই প্রশ্ন তুলে তিনি বরং এসব প্রতারণার ব্যবসা বন্ধের আহ্বান জানান।

বাংলানিউজের খবরে নারীদের মন্তব্যগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে। কারণ নারীরাই এসব সুপারশপে কেনাকাটা বেশি করেন। আর প্রতারণার শিকারও তারাই বেশি হন।

সাবরিনা মজুমদারের কথাই ধরুন। তিনি লিখেছেন, চোরের মায়ের বড় গলা। ... চুরিতে ধরা পড়লে আবার আন্দোলন করে। এসব মালিকদের লাইসেন্স বন্ধ করা উচিত। বাংলাদেশে অনেক ধনী আর সৎ লোক আছেন, তাদের উচিত ওদের মালিকানা কিনে সৎ ভাবে সুপারস্টোর চালানো। অন্তত ১১ ফেসবুক বন্ধু এই মন্তব্যটি পছন্দ করেছেন।

সাবরিনার সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন লিখন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এই সব তথাকথিত সুপারশপগুলোর লাইসেন্স বন্ধ করা উচিত। তবে তিনি শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন, এমনটা আসলে করা হবে না।

টিটু চৌধুরীকে মনে হলে অনেক বেশিই ক্ষুব্ধ। তিনি লিখেছেন প্রতিদিন তিন বেলা করে এই সব দোকানে অভিযান চালানো দরকার৷

টিটু অবশ্য এও বলেছেন, সাধারণ মানুষ এসব সুপার শপে যায় না। তাই এতে সাধারন মানুষের কোন ভোগান্তি নেই। বরং তারা খুশি ৷

সুজন চৌধুরীর জিজ্ঞাসা, এগুলো যখন ছিলনা তখনকি মানুষ বাজার করেনি? তিনিও টিটুর সঙ্গে এই মর্মে একমত যে, প্রতি দিন তিন বেলা এসব সুপারশপে হানা দেওয়া উচিত।

সুপারশপ মালিকদের বাটপার বলতেও ছাড়েননি তিনি। প্রশ্ন তুলেছেন, তাদের দোকান বন্ধ থাকলে কি পাবলিক না খেয়ে থাকবে? আরও বলেছেন, এতে বরং তারাই না খেয়ে থাকবে!

মজা করেছেন আবদুর রহমান। তিনি চেইন সুপারস্টোরগুলো অবিলম্বে খুলে দেয়ার দাবি করেছেন, তবে কেনাকাটার জন্য নয়। ঘোরাফেরার জন্য। নয়তো ঘরে থেকে কারো দমবন্ধ হবার যোগাড় হলে তার দায়-দায়িত্ব কে নেবে? প্রশ্ন তার।

আর সুমন ইসলাম মত দিয়েছেন প্রতিদিনই এদের জরিমানা করা উচিত।

তারেক আহমেদ এই খবরটিকে ‘ভালো একটা নিউজ’ আখ্যা দিয়ে লিখেছেন যে এই নিউজ তৈরি করেছে,অবশ্যই তাকে অভিনন্দন জানাই।

ফেসবুক নাম বর্ণিল দিগন্ত। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে এসব সুপারশপ স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
 
আর আরিফুর রহমান সজীবের মুখেও প্রতিধ্বনিত হলো সাবরিনা মজুমদারের কথা। তিনি লিখেছেন চোরের মা'র বড় গলা। এই সুপার শপ গুলো ভ্যাট এর নামে যে অর্থ নেয় সে গুলো আদৌ জমা পরে কিনা তা জানার খুব ইচ্ছা। আর যদি সঠিক ভাবে জমা দেয় তাহলে তারা সরকার থেকে কেন পুরস্কার পায় না? সবগুলো চোর আর এদের গলার সুর বড়!’

আবদুল্লাহ আল মামুন তো সরাসরি লিখেছেন, আলমাস সুপার শপে নকল পণ্য বিক্রি হয়। নিজেকেই এর ভুক্তভোগি বলেছেন তিনি। আর দাবি করেছেন, এসব সুপারস্টোর বন্ধ করাই ভালো।
 
মন্তব্যকারীদের মধ্যে মোহাম্মদ আবদুস সালাম অবশ্য সুপার মার্কেটের পক্ষে। তিনি লিখেছেন, সুপার মার্কেট সংশ্লিষ্টদের কারো সাথে আলাপ করে দেখেন। তারপর বুঝবেন, এরা ক্রেতাদের নিয়ে কতটা ভাবে। যারা কাদা-পানি ব্যবহারে অভ্যস্ত, তারাই লোকাল বাজারের জয় গান করবে।

কিন্তু অনুপমা হকের কথা শুনুন। তিনি অভিযোগ তুলেছেন মীনাবাজারের বিরুদ্ধে। লিখেছেন- এত বাজে গন্ধ মীনাবাজারের মধ্যে, ঢুকলেই বমি আসে।

রিনা রহমান জানিয়েছেন, বন্ধ রাখার খবরেই তিনি বরং খুশি। আর আবদুল্লাহ আল মাহবুবের মত, সুপারস্টোর বন্ধ থাকা ভালো খবর, এখন তিনি তাজা খাদ্যপণ্য কিনতে পারবেন।

মোমেনুল বাবু মত দিয়েছেন, পূঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার কারণে এইসব ‘ধান্দাবাজির’ ব্যবসা রমরমা চলছে।

মামুন নামে এক ফেসবুক বন্ধু লিখেছেন, এই সব সুপারশপ সারাবছর বন্ধ থাকলেও কোন অসুবিধা নেই । একই মত জসিম উদ্দিনের। তিনি লিখেছেন, এতে জনগণের কোন ক্ষতি নাই। আরো লাভ।

শহিদুল ইসলাম সোহেলেরও একই মত, বন্ধ রাখাই ভালো কাজ।

আহমেদ মোজাফ্ফরের মতে, বাজারে কাঁদা পানির মধ্য থেকে মাছ , শাঁক-সবজি কিনুন ঠকবেন না, পচাঁ ও খেতে হবে না। আভিজাত্য দেখাতে গিয়ে আমাদের ঠকতে হয় অহেতুক।

মোহাম্মদ আক্তার হোসেনের মত, জরিমানার পরিমান কম হওয়াতেই এরা বার বার ক্রেতা ঠকাতে পারছে।

তিনি বলেন, জরিমানা যদি হয় তাদের  এক ঘন্টার আয় তাহলেতো এমন হবেই। কোটি টাকা জরিমানা অথবা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দিলেই সঠিক কাজটি হবে।
অপর পাঠক শহীদুল ইসলাম অবশ্য এক্ষেত্রে ন্যুনতম জরিমানা ৫ লাখ টাকা হওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন।

একই ধরনের মত রুমানা নাসরিন রুমুর। তবে তার বক্তব্য, টাকা জরিমানা না করে এক মাসের জন্য বন্ধ করে দিলে এদের জন্য সঠিক শাস্তি হবে। মানুষের সাথে বেঈমানি করে ওরা পার পেয়ে যাচ্ছে।

মোহাম্মদ জাবেদের মন্তব্য,  আমরা যারা কাদা নোংরা পরিবেশে বাজার করি, তাদের এসবে কোন মাথা ব্যথা নাই।

আর কামরুল হাসানও বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে।

এইসব মন্তব্য থেকেই নিশ্চিত হয়, সুপারশপগুলোর ওপর সাধারণ মানুষ ও ক্রেতা সত্যিই ক্ষুব্ধ। সে কারণেই অভিজ্ঞমহল মনে করছে, বন্ধ রেখে বা ধর্মঘট করে নয়, সুপারশপগুলোকে সেবার মান বাড়িয়েই টিকে থাকতে হবে।

বাংলাদেশ সময় ১৮৪৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৬
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।