ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আন্ডারগ্রাউন্ডে যাচ্ছে ডেসকো’র বৈদ্যুতিক ক্যাবল

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০০ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৬
আন্ডারগ্রাউন্ডে যাচ্ছে ডেসকো’র বৈদ্যুতিক ক্যাবল

ঢাকা: ঢাকা নগরীর বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও সরবরাহ লাইনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আরও নির্ভরযোগ্যতা আনা হচ্ছে। ৩৩ কেভি ওভারহেড ক্যাবলকে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলে রুপান্তরের মাধ্যমে আন্ডারগ্রাউন্ড সার্কিটের বিদ্যুতের লোড ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

বিতরণ ব্যবস্থায় ইনটারাপশন ও ফ্রিকোয়েন্সি কমানো হবে।

এজন্য আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল ও বিতরণ সাব-স্টেশনের সংযোগ স্থাপন করা হবে।

এভাবেই স্বল্প পরিসরে শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) আন্ডারগ্রাউন্ডে বৈদ্যুতিক কাযর্ক্রম। এর আওতায় ডেসকো এলাকায় বিদ্যুতের বিতরণ ব্যবস্থা সিস্টেম এভারেজ ইন্টারাপশন ইনডেক্স (এসএআইডিআই) এবং সিস্টেম এভারেজ ইনটারাপশন ফ্রিকোয়েন্সি ইনডেক্স (এসএআইএফআই) কমানো হবে।

এসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে ‘ডেসকো’র এলাকায়  ৩৩ কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল স্থাপন, ক্ষমতা বর্ধন এবং রুপান্তর’ প্রকল্পের আওতায়।   এতে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৬৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক(এআইআইবি) দেবে ৩৫৮ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ডেসকো। প্রথম ধাপে নগরীর মিরপুর, উত্তরা, টঙ্গী, দক্ষিণখান ও গাজীপুরে বাস্তবায়িত হবে।

১৯৯৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মিরপুর এলাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল ডেসকো। শুরুর সময় লোড চাহিদা ছিল মাত্র ৯০ মেগাওয়াট এবং গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৭১ হাজার ১৬১ জন। সময়ের ব্যবধানে এখন ডেসকো’র আওতা বৃদ্ধি পেয়ে গুলশান, টঙ্গী ও পূর্বাচল মডেল টাউন পর্যন্ত ২৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিস্তার লাভ করেছে। ডেসকো'র বিতরণ এলাকায় তিনটি জোনে (গুলশান, মিরপুর ও উত্তরা) ১৬টি বিভাগ রয়েছে। বর্তমানে ডেসকো’র লোড চাহিদা ৮৫৪ মেগাওয়াট এবং গ্রাহক সংখ্যা ৭ লাখে উন্নীত হয়েছে।

রাজধানী ঢাকায় বিদ্যুতের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রকল্পটি গ্রহণের ফলে ২০২০ সালের মধ্যে লোড চাহিদা হবে ১ হাজার ৯১০ মেগাওয়াট এবং গ্রাহক সংখ্যা হবে প্রায় ১১ লাখ।

বর্তমানে ডেসকো’র আওতায় বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে ২টি ১৩২/৩৩ কেভি ওভারহেড সার্কিটের মাধ্যমে সাব-স্টেশনগুলো সংযুক্ত আছে। এছাড়া ১৫টি সুইচ স্টেশন রয়েছে।   ৮৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘে্যর ১১টি ৩৩ কেভি ওভারহেড দিয়ে সংযুক্ত। ওভারহেড লাইনগুলো পুরতন ও লোড ক্ষমতা অনেক কম।   আন্ডারগ্রাউন্ড সার্কিটের বিদ্যুতের লোড ক্ষমতা ওভারহেড সার্কিটের থেকে ২৫ শতাংশ কম। এ ব্যবস্থায় সিস্টেম লস হয় এবং স্থায়িত্বও কম থাকে।

ডেসকো’র আওতাধীন এলাকায় লাইন ওভারহেড থাকায় গ্রাহক পর্যায়ে লো-ভোল্টেজ সমস্যাসহ বিদ্যুতের সিস্টেম লস বৃদ্ধি পাচ্ছে।   তাই বর্ধিত বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর জন্য বিদ্যমান বিদ্যুৎ ব্যবহার সংস্কার, আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করা হবে।

প্রকল্পের আওতায় ক্যাবল টেন্স  নির্মাণ, ৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘে্যর ৩৩ কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড  ক্যাবল স্থাপন ও টারমিনেশন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া চারটি যানবহন, স্থানীয় পরামর্শক, ও দাফতরিক যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র কেনা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প শক্তি বিভাগ জানায়, প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মঙ্গলবার (২৪ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হবে।

শিল্প ও শক্তি বিভাগের বিদ্যুৎ উইংয়ের যুগ্ন-প্রধান খলিলুর রহমান খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বর্তমানে ডেসকো’র কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ডেসকো’র কার্যক্রমের আওতা বাড়ানোর দরকার। এজন্যই প্রকল্পটি গ্রহণ করতে যাচ্ছি’।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।