ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যাংককে ‘ট্রেড এক্সপো’, বাংলাদেশকে নতুন করে চিনবে থাইল্যান্ড

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৬
 ব্যাংককে ‘ট্রেড এক্সপো’, বাংলাদেশকে নতুন করে চিনবে থাইল্যান্ড

ঢাকা: আগামী ৩০ মে থেকে ১ জুন থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের কুইন সিরিকিত ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এক্সপো ২০১৬’।

এই আয়োজনে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারী ও দর্শনার্থীদের সামনে মেলে ধরা হবে বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক।

প্রদর্শনীতে সাজিয়ে তোলা হবে বাংলাদেশকে। যে বাংলাদেশকে নতুন করে চিনবে থাইল্যান্ড।

আয়োজনের বিভিন্ন দিক নিয়ে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিমের সঙ্গে কথা হয় থাইল্যান্ডের বিখ্যাত ব্যাংকক পোস্ট পত্রিকার সাংবাদিক ইভোন বনওংপ্রাসেরত এর। ‘শোকেসিং বাংলাদেশ’ শিরোনামে লেখাটি বুধবার (মে ২৫) প্রকাশিত হয় ব্যাংকক পোস্টের অনলাইন সংস্করণে।

‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এক্সপো ২০১৬ সম্পর্কে ব্যাংকক পোস্টকে মুনা বলেন, শুধু ব্যবসায়িক দিকটিই নয়, বাংলাদেশ সম্পর্কে চলে আসা বিভিন্ন ভুল ধারণার অবসানের সুযোগ তৈরি করবে এই ট্রেড এক্সপো।

শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশকে সাংস্কৃতিক গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করাও এই প্রদর্শনীর অন্যতম উদ্দেশ্য বলে ব্যাংকক পোস্টকে জানান মুনা।

৩০ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত ৩ দিন ব্যাপী হতে যাওয়া এই মেলায় বাংলাদেশের ৫৫টি শীর্ষ কোম্পানি  অংশ নিচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত মুনা তাসনিম জানান, বাংলাদেশের সাথে থাইল্যান্ডের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৪ বছর চললেও এর আগে কখনই থাইল্যান্ডে এমন প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেয়নি বাংলাদেশ। অথচ গত কয়েক দশক ধরেই বাংলাদেশে এমন প্রদর্শনীর আয়োজন করে আসছে থাইল্যান্ড।

আসন্ন প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ রপ্তানি পণ্যের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও কানাডায় রপ্তানি করা শুল্কমুক্ত পণ্যগুলোও প্রদর্শন করা হবে বলে ব্যাংকক পোস্টকে জানান রাষ্ট্রদূত।

থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে বিমানে দূরত্ব মাত্র দুই ঘণ্টা। অথচ থাইল্যান্ডের বেশিরভাগ লোকই জানে না যে বাংলাদেশ মায়ানমারের পরই অবস্থিত।

থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ী মহলের বেশির ভাগেরই বাংলাদেশের উৎপাদন ও রপ্তানি সক্ষমতা এবং বাংলাদেশি বিশ্ব স্বীকৃত রফতানি বাজার সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন সাইদা মুনা তাসনিম।

সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে থাই ব্যবসায়ী ও জনগণের সামনে বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্যের নানা দিক তুলে ধরার সুবর্ণ সুযোগ এই প্রদর্শনী-যোগ করেন রাষ্ট্রদূত।

প্রদর্শনীতে থাই বিনিয়োগ অাকষর্ণেরও প্রচেষ্টা থাকবে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ, পর্যটন এবং কৃষি ও পোশাক খাতে বিনিয়োগের জন্য এই প্রদর্শনী থাই বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি মোক্ষম সুযোগ বলে উল্লেখ করেন মুনা তাসনিম।

ব্যবসায়িক দিকের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিভিন্ন দিকও তুলে ধরা হবে প্রদর্শনীতে।

৩০ মে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী দিনে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ফ্যাশন শো। ‘বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড থ্রেডস অব হেরিটেজ ফ্যাশন শো’ শিরোনামের এই অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হবে থাইল্যান্ডের রানী সিরিকিত এবং থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের সকল রেশম শিল্পীর সম্মানে।

থাইল্যান্ডের রেশম শিল্পের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে থাই রাণী সিরিকিতের।

বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের নামকরা ডিজাইনারদের ডিজাইনে রেশম ও মসলিনে প্রস্তুত পোশাক প্রদর্শিত হবে এই ফ্যাশন শো’তে।

 এই ফ্যাশন শো’তে উপস্থাপন হত যাওয়া প্রতিটি পোশাকই থাইল্যান্ডের বিখ্যাত চিত্রালাদা প্রাসাদের সিল্ক প্রজেক্ট শপ এবং বাংলাদেশের খাঁটি রেশম থেকে তৈরি করা বলে জানান রাষ্ট্রদূত সাইদা তাসনিম মুনা।

প্রদর্শনীর আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে এর লোগো। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রদূত মুনা তাসনিম বলেন, বাংলাদেশের মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্ধারিত হয়েছে লোগোর প্রত্যেকটা অংশ।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ধর্মনিরপেক্ষ উদার ধারার প্রতীক হিসেবে লোগোর কেন্দ্রে আছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ।

এছাড়া তরুণ প্রজন্মকে প্রতিনিধিত্ব করতে লোগোতে ব্যবহৃত হয়েছে বৈচিত্র্যময় রং এর ব্যবহার।

লোগোর বামপাশে থাকা বাংলাদেশের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে জাতীয় গৌরবও।

ব্যাংককের সিরিকিত ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ৩১ মে শুরু হবে এই বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এক্সপো ২০১৬।

বাংলাদেশের রেডিমেড গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, বোন চায়না এবং সিরামিক ও টাইলস, ফার্নিচার, অর্গানিক চা ও বিভিন্ন খাদ্য পণ্য, গ্লাস, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, লেদার ও ফুটওয়্যার, ফুড বেভারেজ, হিমায়িত খাবার, পলিমার, প্লাস্টিক, মেলামাইন, মোটর গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ, শিপবিল্ডিং, ইলেক্ট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স,পাটজাত পণ্য, রেশম ও হস্তশিল্প, আইসিটি ও সফটওয়্যার, পর্যটন, হসপিটাল ও মেডিকেল সার্ভিস, কৃষি যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক দ্রব, প্রসাধনী সামগ্রী ও অলঙ্কার উৎপাদন ও রফতানিকারক অর্ধশতাধিকেরও বেশি প্রতিষ্ঠান এই প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে।
**‘থাইল্যান্ডে সাজবে বাংলাদেশ’, ব্যাংকক পোস্টকে রাষ্ট্রদূত মুনা
** ‘রাষ্ট্রদূত মুনা ‘ওমেন অব সাবস্ট্যানস’’

বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৬
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।