ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আমদানি থাকলেও খেজুরের বাজার চড়া

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১৬
আমদানি থাকলেও খেজুরের বাজার চড়া ছবি- রানা- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

ঢাকা: সারাদিন রোজা রেখে খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙতে চান ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তাই ইফতারে খেজুর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

তবে রমজান সামনে রেখে খেজুরের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে কয়েকগুণ।

সোমবার (০৬ জুন) দেশের বৃহৎ পাইকারি খেজুরের বাজার বাদামতলীতে গিয়ে দেখা যায়, আমদানি থাকলেও দাম চড়া।

বাজার ঘুরে জানা যায়, আরব আমিরাতের ১০ কেজি প্যাকেটের নাগাল খেজুরের দাম ১১০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪০০ টাকা, ইউরোপের ৫ কেজি মরিয়ম খেজুরের দাম ২৪০০-২৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০০-৩০০০ টাকা, ১০ কেজি বরই খেজুরের কার্টন ১২৫০-১৩০০ টাকা থেকে ১৪০০-১৫০০ টাকা, ৬ কেজি প্যাকেটজাত বারারি খেজুর ১৭০০-২০০০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৪০০ টাকা, ৫ কেজি তিউনিশিয়া প্যাকেটজাত খেজুর ১১০০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৫০০ টাকায়।

এছাড়া ফরিদা ৫ কেজি কার্টন ৮৩০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০৫০ টাকা। অন্যদিকে ১০ কেজি কার্টুন সায়ের ৯৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০৫০-১২৫০ টাকা। ১ কেজি জাহিদি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা ছিল ৪৫ টাকা। ১০ কেজি কার্টনের রেজিস বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৫০০ টাকা, যা বিক্রি হতো ১২০০ টাকায়। এক কার্টুন ২৪ প্যাকেট মদিনা খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৪০০ টাকা, যা আগে ছিলো ১৯০০-২১০০ টাকা।

বিক্রি কেমন এমন প্রশ্নের জবাবে বিক্রেতা সুজন বলেন, ভালো, সাধারণত রমজানের সময় দেশে ৪০ প্রকার খেজুরের আমদানি করা হয়। কিন্তু সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ১৫-২০ ধরনের খেজুর। এখন খেজুরের মধ্যে দুবাই থেকে আমদানি করা নাগাল খেজুরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

ক্রেতাদের অভিযোগ দাম বেশি রাখা হচ্ছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের কি করার আছে? আমরা যেমন কিনবো তেমন বিক্রি করবো। লস দিয়ে তো আর পণ্য বিক্রি করা যাবে না। আমরা পাইকার থেকে মাল নিয়ে আসি। তবে কিছুদিন পর দাম কমবে বলে মনে করেন তিনি।

টাঙ্গাইল থেকে খেজুর কিনতে এসেছেন আব্দুর রব। খেজুরের কেমন দাম জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার খেজুরের দাম বেশি। যা যা কিনতে এসেছিলাম তার দাম বেশি হওয়ায় সব নিতে পারছি না। তবে এবার শুরুতে অনেক খেজুর উঠেছে।

স্থানভেদে দামের তারতম্য কেন, এমন প্রশ্নে খেজুর বিক্রেতা কনক দাশ বলেন, পাইকারদের কাছ থেকে আমরা খুচরা বিক্রেতারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দামে খেজুর ক্রয় করি। মোকামে দাম বেশি হলে আমরা কি করবো? তাছাড়া সবকিছুর খরচ মিলিয়ে দাম একটু বেশিই পড়ে। একটু বেশি দাম দিয়ে হলেও ভালো খেজুর কেনার জন্য ক্রেতাদের পরামর্শ দেন তিনি।

খুলনা থেকে খেজুর কিনতে আসা হারিস বাংলানিউজকে বলেন, এবার বাজারে অনেক খেজুর উঠেছে। গতবারের তুলনায় এবার শুরুতেই খেজুর বেশি থাকলেও দাম চড়া। বিক্রেতারা যা দাম চাইছেন তাই দিয়েই কিনতে হচ্ছে।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রমজানে খেজুরের চাহিদা বেশি থাকে। রোজাদাররা খেজুর দিয়ে দিন শেষে রোজা ভাঙেন। কিন্তু বেশি দাম হওয়ায় সবার পক্ষে খেজুর কেনা সম্ভব নয়। তাই সরকারের পক্ষ থেকে যদি বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাহলে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য ভালো হবে।

এ বিষয়ে বাদামতলীর  আমদানিকারক ও ফল মালিক সমিতির সেক্রেটারি  সিরাজুল  ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দেশে খেজুরের চাহিদার পরিমাণ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু এবার খেজুর আমদানি হয়েছে ৩০ হাজার মেট্রিক টন।

তাহলে বাজারে খেজুরের দাম এতো বেশি কেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা পাইকাররা কিন্তু বেশি দাম রাখছি না। যারা মধ্যস্থভোগী তারাই দাম বেশি রাখছেন। এতে আমাদের কিছুই করার নেই। তবে আমরা বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। শিগগিরই দাম সহনশীল পর্যায়ে আসবে।

বাংলাদেশে সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, জুন ০৬,২০১৬
এসজে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।