ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

হচ্ছে উৎসে কর ইউনিট ও ইলেক্ট্রনিক ব্যবস্থা

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৫ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১৬
হচ্ছে উৎসে কর ইউনিট ও ইলেক্ট্রনিক ব্যবস্থা

ঢাকা: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মোট রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫৮ শতাংশ যোগান দেয় উৎসে আয়কর ও মূসক। প্রায় ৬০টি খাত থেকে এ রাজস্ব আহরিত হয়।

উৎসে কর ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকর করতে একটি নতুন ‘উৎসে কর ইউনিট’ স্থাপন ও ‘ইলেক্ট্রনিক’ উৎসে কর ব্যবস্থা প্রচলন করতে যাচ্ছে এনবিআর।

গত ০২ জুন আগামী অর্থবছরের (২০১৬-১৭) জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনকালে এমন ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ ঘোষণার পরপরই কাজ শুরু করেছে এনবিআর।

প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ কর রাজস্বের গড়ে ৫০ শতাংশ উৎস করের মাধ্যমে আহরিত হয়, যা বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় বেশ কম’।

উদাহরণ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বেতন-ভাতা খাতে উৎসে করের মাত্র ৪ থেকে ৫ শতাংশ আদায় হয়। উন্নত দেশগুলোতে এ হার ৩০ শতাংশের ওপরে’।

চলতি অর্থবছর বাজেটে উৎসে কর খাতের ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের জন্য ‘পৃথক উৎসে কর অঞ্চল’ গঠনের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী, যা নিয়ে কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

বর্তমানে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ থেকে সর্বনিম্ন দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রায় ৬০টি খাত থেকে উৎসে কর আদায় করে এনবিআর।

৫২টি খাত থেকে ৫৪ শতাংশ উৎসে আয়কর আর ২ শতাংশ উৎসে মূসক থেকে আদায় হয়। এর মধ্যে রয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, শেয়ার হস্তান্তর, সেবা, ইন্স্যুরেন্সের কমিশন, ব্যাংক আমানতের সুদহার, কনসালটেন্ট ফি, সম্পত্তি হস্তান্তর, জনশক্তি রফতানি, ঠিকাদার বিল, সিকিউরিটিজের সুদ আয়, চিকিৎসকদের ফি, রয়েলটি ফি, সিগারেটের ব্যান্ডরোল, ইট প্রস্তুতকারক, গৃহসম্পত্তি আয় ইত্যাদি।

এনবিআর সূত্র জানায়, রাজস্বের ৫৮ শতাংশ উৎসে কর থেকে আহরিত হলেও এ কর ব্যবস্থাপনায় নেই নির্দিষ্ট স্বতন্ত্র কর অঞ্চল ও কর ইউনিট।

এছাড়া এ কর কর্তনে নেই আধুনিক ব্যবস্থাপনা। ফলে বছরের পর বছর ধরে এ খাত থেকে সরকার প্রকৃত রাজস্ব আহরণ করতে পারছে না।

সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান এ কর আদায় করে না। এ নিয়ে এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান সচিব, সিটি মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিয়ে সহযোগিতা চান।

একই সঙ্গে একটি স্বতন্ত্র উৎসে কর অঞ্চলে গঠনে অর্থমন্ত্রীকে সুপারিশ করেন। পরে অর্থমন্ত্রী আগামী অর্থবছরের বাজেটে উৎসে কর অঞ্চল গঠনের প্রস্তাব করেন।

সূত্র জানায়, স্বতন্ত্র উৎসে কর অঞ্চল, উৎসে কর ইউনিট ও এ কর আদায়ে ইলেক্ট্রনিক ব্যবস্থাপনার প্রচলন করা হলে উৎসে কর ফাঁকি রোধ ও আহরণের মাত্রা বেড়ে যাবে।

এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী স্বতন্ত্র উৎসে কর অঞ্চল গঠনের কাজ প্রায় শেষ পর‌্যায়ে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী উৎসে কর ইউনিট ও ইলেক্ট্রনিক ব্যবস্থাপনা প্রচলনের ঘোষণা দিয়েছেন’।

‘ঘোষণার পর পরই আমরা কর ইউনিটের কাঠামোসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আশা করি, আগামী অর্থবছরে কর অঞ্চল ও কর ইউনিট গঠন এবং ইলেক্ট্রনিক ব্যবস্থাপনা চালু হয়ে যাবে’- বলেন মো. নজিবুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৬
আরইউ/এএসআর

** ‘রং বদলাচ্ছে এনবিআর, সবুজ গাঢ় সবুজ হচ্ছে’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।