ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

১৭ বিমা কোম্পানির দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৬
১৭ বিমা কোম্পানির দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক

ঢাকা: সরকারি-বেসরকারি ১৭ বিমা কোম্পানির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের এক হাজার ৭৮১ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।

দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। এতে সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেনও রয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে অনুসন্ধান কাজের তদারকি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত বিমা কোম্পানিগুলো হলো- পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স, জীবন বীমা করপোরেশন, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, পদ্মা ইসলামী লাইফ, গোল্ডেন লাইফ, সন্ধানী লাইফ, প্রগতি লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, সানলাইফ, প্রাইম ইসলামী লাইফ, মেঘনা লাইফ, ডেল্টা লাইফ, রুপালী লাইফ, হোমল্যাণ্ড লাইফ, প্রোগ্রেসিভ লাইফ, বায়রা লাইফ এবং ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স।

দুদক সূত্র আরও জানায়, আইডিআরএ’র কাছে কোম্পানিগুলোর দাখিল করা তথ্য পর্যালোচনায় সরকারি-বেসরকারি ১৭টি লাইফ-বিমা কোম্পানির মধ্যে অবৈধ ব্যয়ের শীর্ষে ৭টি কোম্পানির কথা বলা হয়েছে। ওই ৭ কোম্পানির মোট অবৈধ ব্যয় করেছে ১ হাজার ৩৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

অবৈধ ব্যয়ের শীর্ষে কোম্পানির মধ্যে পপুলার লাইফ ২৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, জীবন বীমা করপোরেশন ২৭৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ২০০ কোটি ৫১ লাখ টাকা, পদ্মা ইসলামী লাইফ ১৬৬ কোটি ৮৩ লাখ, গোল্ডেন লাইফ ১৬৫ কোটি ২৫ লাখ, সন্ধানী লাইফ ১৫৫ কোটি ৫৯ লাখ, প্রগতি লাইফ ১৪৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা অবৈধভাবে ব্যয় করেছে।

এছাড়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে-সানফ্লাওয়ার লাইফ ৯১ কোটি ২৭ লাখ টাকা, সানলাইফ ৯০ কোটি ৭০ লাখ টাকা, প্রাইম ইসলামী লাইফ ৭৪ কোটি ৪১ লাখ, মেঘনা লাইফ ৬৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ডেল্টা লাইফ ৫৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা, রুপালী লাইফ ৫০ কোটি ২৩ লাখ, হোমল্যাণ্ড লাইফ ৪৮ কোটি ৮ লাখ, প্রোগ্রেসিভ লাইফ ৪২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, বায়রা লাইফ ৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা ও ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স ৭ বছরে ২১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা অবৈধ ব্যয় করেছে।

দুদক সূত্র জানায়, সরকারি-বেসরকারি এই ১৭টি বিমা কোম্পানি ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের নামে অবৈধভাবে ব্যয় করেছে ১ হাজার ৯৭৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে গ্রাহকের অংশ ৯০ শতাংশ বা ১ হাজার ৭৮০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে কোম্পানিরগুলোর দাখিল করা তথ্যে এমন অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ তথ্যানুসারে অবৈধ ব্যয়ের কারণেই অনেক কোম্পানি চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। সময়মতো গ্রাহকদের দাবি পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে গ্রাহকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অনাস্থা। এর মধ্যে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি ২০১২ সাল থেকেই অবৈধ ব্যয় কমিয়ে আনতে বেশ কয়েকবার তাগিদ দিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৬
টিএইচ/এসএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।