ঢাকা: পাবনা জেলার রূপপুরের পদ্মাপাড়ে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তুতিমূলক কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। রাশান ফেডারেশনের সহায়তায় ১ হাজার ৬২ একর জমিতে নির্মিত হবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
ভূমি অধিগ্রহণ পর্ব সম্পূর্ণ হয়ে এখন চলছে দেয়াল নির্মাণসহ নানা অবকাঠামোগত কাজ। মাটি ভরাটের কাজও শেষ পর্যায়ে, প্রায় ৯০ শতাংশ।
এখন শুরু হবে মূল প্ল্যান্ট তৈরির কাজ।
মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) অনুমোদিত হতে যাচ্ছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ের ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পটি। এর মধ্যে দু’টি প্ল্যান্টসহ মূল কাজের মোট ব্যয় ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকার পুরোটাই প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ঋণ দেবে রাশিয়া।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উত্থাপন করা হবে মঙ্গলবার।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব তারিক-উল-ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একনেক সভার কার্যতালিকায় রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মঙ্গলবারই উপস্থাপন করবো’।
সূত্র জানায়, ৫০ বছরের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল বিবেচনায় ১ হাজার ২শ' মেগাওয়াট করে দু’টি ইউনিটে ২ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। খরচ পড়বে মেগাওয়াট প্রতি মাত্র ৩ টাকা।
২০১৭ সালেই প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ২০২২ সালে প্রথম ইউনিট ও ২০২৩ সালে উৎপাদনে যাবে দ্বিতীয়টি।
মূল ইউনিট নির্মাণের পাশাপাশি দৈনিক ১ হাজার ৭শ’ ৫০ কিউবেক মিটার পানি এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ৮১ মিলিয়ন কিউবেক মিটার পানির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও এ প্রকল্পের আওতায় করা হবে। ৫০ বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ফুয়েল ও ম্যানেজমেন্টও এর আওতাভূক্ত।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সিরাজুল হক খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘একনেক সভার জন্য আমরাও নোটিশ পেয়েছি। প্রকল্পটি মঙ্গলবার অনুমোদন পাবে বলে আশা করছি’।
ব্যয়ের দিক থেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রকল্প মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ১ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট ‘অত্যাধুনিক’ ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা পদ্মাসেতুর রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার কোটি টাকা। রেলসেতুটি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে মাওয়া হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যাবে।
আর বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মোট ব্যয় ২৮ হাজার ৬শ’ ৫১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি এখন ব্যয়ের দিক থেকে চতুর্থ বৃহত্তম প্রকল্প। ২০১৮ সালের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে বলে মনে করছে সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৬
এমআইএস/ এএসআর