ঢাকা: ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের অনুকূলে জরুরি ভিত্তিতে অতিরিক্ত ৫১০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় অতিরিক্ত এ বরাদ্দ চেয়ে পরিকল্পনা কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পটিতে চলতি অর্থবছরে এডিপি’তে ৩১৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিলো। তবে উপকারভোগী সদস্য ও সমিতির কল্যাণ অনুদান তহবিল, উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণের পর সহায়তা এবং উৎসাহ বোনাসের ব্যয় নির্বাহে আরো অর্থের প্রয়োজন।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের দাবির প্রেক্ষিতে পরিকল্পনা কমিশনে ওই ৫১০ কোটি টাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে সরকারি চাহিদাপত্র (ডিও লেটার) দিয়েছেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ। ফলে চলতি বছরে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৮২৫ কোটি টাকা।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ সূত্র জানায়, তৃতীয়বারে সংশোধিত প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৭৪৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। মূল ব্যয়ের (শুরুতে অনুমোদিত ব্যয়) তুলনায় নতুন প্রস্তাবে ব্যয় বাড়ছে ৭ হাজার ৫৪৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বা ১৭৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদও বেড়েছে আরও চার বছর। পাশাপাশি উপকারভোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৪ লাখের স্থলে হয়েছে ৬০ লাখ। ফলে বছরওয়ারী অতিরিক্ত বরাদ্দও প্রয়োজন বলে মনে করে মন্ত্রণালয়।
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের পরিচালক আকবর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বেড়েছে মূলত উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে। এখন যেহেতু ব্যয় বেশি, সেহেতু প্রতি বছর বেশি বরাদ্দের প্রয়োজন। প্রকল্পের ব্যয় যখন কম ছিল, তখন ৩২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। এখন প্রকল্পের ব্যয় বাড়ায় আরও ৫১০ কোটি টাকার প্রয়োজন। প্রকল্পটির লক্ষ্য পূরণ করতে ২০২০ সালে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার প্রয়োজন।
সমন্বিত গ্রাম উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিটি বাড়িকে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে ১ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় সরকার।
পরবর্তীতে ১ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হলেও মেয়াদ এক বছর কমানো হয়। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকা করে মেয়াদ ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। আবারও ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ছে প্রকল্পের মেয়াদ।
প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো জনশক্তি ও অর্থনৈতিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামে একটি টেকসই কৃষি নির্ভর ইনকাম জেনারেটিং ইউনিটে উন্নীতকরণ। দেশের ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলার ৪৯০টি উপজেলার ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়নের ৪০ হাজার ৯৫০টি ওয়ার্ডে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সর্বশেষ অনুমোদিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ লাখ ৩১ হাজার ৬২০টি হাউজ হোল্ডকে অন্তর্ভূক্ত করে ৪০ হাজার ৫২৭টি গ্রামের উন্নয়ন করা, যা ইতোমধ্যেই অর্জিত হয়েছে। তৃতীয় সংশোধনীতে মূলত প্রকল্পটি সম্প্রসারিত করে ৬০ হাজার ৫১৫টি গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা এবং ৩৬ লাখ ৩০ হাজার ৯০০টি হাউজ হোল্ড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর