ঢাকা: গৃহায়ন শিল্পের বাজার সৃষ্টি ও ক্রেতাদের সুবিধার জন্য আগামী ২১ ডিসেম্বর (বুধবার) থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে ১৬তম ‘রিহ্যাব ফেয়ার ২০১৬’।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাইজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ ফেয়ারের আয়োজন করেছে।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ক্রেতাদের সুবিধার জন্য ২০০১ সাল থেকে সফলভাবে এ মেলার আয়োজন করে আসছি। এ ফেয়ার সাধ ও সাধ্যের মধ্যে ফ্ল্যাট বা প্লট খুঁজে নিতে ক্রেতাদের সহায়তা করবে। আগামী ২১ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পাঁচ দিনব্যাপী এ ফেয়ারে ১৭৫টি স্টল থাকবে। এছাড়া ৩০টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।
সভাপতি বলেন, ২১ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রিহ্যাব ফেয়ার ২০১৬ এর উদ্বোধন করবেন। তবে ক্রেতা দর্শনার্থীরা সকাল ১১টা থেকে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন বলে জানান তিনি। অন্যদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলায় প্রবেশ করা যাবে। মেলায় প্রবেশে সিঙ্গেল এন্ট্রি ফি ৫০ ও মাল্টিপল এন্ট্রি ফি ১০০ টাকা। মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিট দিয়ে একজন দর্শনার্থী সর্বোচ্চ ৫ বার প্রবেশ করতে পারবেন।
তিনি বলেন, টিকিট বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ দুঃস্থদের সাহায্যার্থে ব্যয় করা হবে। এন্ট্রি টিকিটের ওপর প্রতিদিন রাত ৯টায় র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। র্যাফেল ড্র এর প্রথম পুরস্কার ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি, দ্বিতীয় পুরস্কার ডিপ ফ্রিজ, তৃতীয় পুরস্কার মোবাইল ফোন, চতুর্থ পুরস্কার ট্যাব ও ৫ম পুরস্কার ইলেট্রনিক ওভেন। প্রতিদিনই এসব পুরস্কার থাকবে। এবার রিহ্যাব ফেয়ারে ২০টি হাউজিং প্রতিষ্ঠান, চারটি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান কো-স্পন্সর হিসেবে রয়েছে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের জন্য ছাড় দেবে। ক্রেতাদের পছন্দ অনুয়ারী ছাড়ের সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, এ ফেয়ার রিহ্যাবের ১ হাজার ৬৬টি সদস্য প্রতিষ্ঠান ও ক্রেতাদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে। ঢাকায় ১৬তম ফেয়ার। চট্টগ্রামে ৯টি ফেয়ার করা হয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে বিদেশেও আমরা ফেয়ার করে আসছি। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১২টি, যুক্তরাজ্য, দুবাই, ইতালি, কানাডা, সিডনি ও কাতারে ১টি করে ফেয়ার সম্পন্ন হয়েছে।
এসব ফেয়ারের মাধ্যমে দেশ বিদেশে গৃহায়ন শিল্পের বাজার সৃষ্টি ও প্রসারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে রিহ্যাব। ভবিষ্যতেও চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ঝঁকিমুক্ত পরিকল্পিত নগরায়নে রূপান্তর ও আবাসন সমস্যা সমাধানে গত ২৫ বছর ধরে রিহ্যাব সরকারের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে। সরকারের রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান, রড, সিমেন্ট, টাইলসসহ ২৬৯ প্রকার লিংকেজ শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। দেশের অর্থনীতিতে আবাসন খাতের অবদান ১৫ শতাংশ। ৩৫ লাখ শ্রমিকের এ খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এত অবদানের পরও গত কয়েক বছর ধরে এ খাত সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ফেয়ারে অননুমোদিত কোনো প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করতে পারবে না জানিয়ে সভাপতি বলেন, সদস্য ছাড়া অথবা অননুমোদিত কোনো প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকলে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
হয়রানি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রিহ্যাব সদস্য ছাড়া প্রায় ১২শ’ প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসা করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান ও রিহ্যাব সদস্যদের মধ্যে কিছু গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। রিহ্যাব সদস্য হলে আমরা অভিযোগ সমাধানের চেষ্টা করি। সরকার যদি আইন করে দেয় রিহ্যাব সদস্য ছাড়া এ ব্যবসা করতে পারবে না তাহলে প্রতারণা কমে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের প্রথম সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূইয়া, পরিচালক মো. শাকিল কামাল চৌধুরী, কামাল মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৬
আরইউ/জিপি/আরআই