ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিনিয়োগ আকর্ষণে ওয়ান স্টপ সার্ভিস দেবে সরকার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৭
বিনিয়োগ আকর্ষণে ওয়ান স্টপ সার্ভিস দেবে সরকার বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব এবং সংস্থা প্রধান (ছবি: পিআইডি)

ঢাকা: লাল ফিতার দৌরাত্ম কমিয়ে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বিনিয়োগকারীদের ভোগান্তি লাঘবে একই ছাদের নিচে সব ধরনের বিনিয়োগ সেবা দেবে সরকার। বিনিয়োগকারীদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস’র এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

রোববার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব এবং সংস্থা প্রধানদের সঙ্গে সভা শেষে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এর আগে বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ১৭ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বল্প সময়ে দ্রুত সেবা দিতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়াধীন।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক গ্রুপ বিশ্বের ১৮৯টি দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে সমীক্ষা চালায়। ২০১৫ সালের সমীক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৪তম। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো ১৭৮তম। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের অবস্থান দুই ধাপ উন্নীত হয়ে ১৭৬ হয়েছে। সপ্তম-পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মেয়াদ শেষে এ অবস্থায় ১৭৬ হতে ১০০ এর নিচে বা ডাবল ডিজিটে আমরা উন্নীত করতে চাই।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত প্রতিবেদন দেশের অভ্যন্তরে ও বহির্বিশ্বে সংশ্লিষ্ট দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ সম্পর্কে এমন শক্তিশালী বার্তা দেয় যা বিনিয়োগকে এবং সামগ্রিকভাবে উন্নয়নকে প্রভাবিত করে। এ প্রতিবেদনে যে ১০টি সাব ম্যাট্রিক্স দ্বারা বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশকে পরিমাপ করা হয়। এসব সাব-ম্যাট্রিক্সের বিষয়ে একটি সম্ভাব্য কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে যার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাসমূহ চিহ্নিত করে তা দূরীকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
 
তিনি বলেন, এসব প্রস্তাবনা এবং কার্যক্রম বাস্তবায়নে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি গ্রহণের বিষয়ে আজকের সভায় আলোচনা হয়েছে। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক দেশসমূহের অভিজ্ঞতার আলোকে গৃহীত এ কার্যক্রম চূড়ান্ত  করতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও প্রতিষ্ঠানসমূহ কাজ করে যাচ্ছে।

এ সময় মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ইনভেস্টররা (বিনিয়োগকারী) যখন এদেশের আসেন, তাদের ব্যবসা শুরুর জন্য অনেকগুলো অনুমতি লাগে, ক্লিয়ারেন্সের প্রয়োজন হয়। যেমন ইনভার্নমেন্টাল ক্লিয়ারেন্স (পরিবেশগত ছাড়পত্র) প্রয়োজন হয়, ফায়ার সেফটি ও ট্রেড লাইসেন্স দরকার হয়। টিন (ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন আইনে, বিধি-বিধানে যে সমস্ত প্রয়োজনীয়তা আছে সেগুলোর জন্য বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। এসব আবেদন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় যেতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়।

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি সময় ও ব্যয় করতে হয়। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা সংক্রমিত হয়। এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা হাল ছেড়ে দেন। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই আমরা একই জায়গায় আমরা সব ধরনের সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। ’

মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে, অতি অল্প ব্যয়ে এবং অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে যাতে বিনিয়োগকারীদের সব সেবা দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থাই আমরা করবো ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে।

বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, ‘ডুইং বিজনেস ইনডিকেটরে যে বিষয়গুলো আসে সেগুলোকে মোটামুটি দশটি ভাগে ভাগ করা যায়। ১০ ভাগের মধ্যে ১০টি ভিন্ন ইস্যু আসছে। যেমন- ব্যবসা শুরু করা, স্থাপনা নির্মাণ অনুমোদন এ বিষয়গুলো। অন্যান্য দেশের তুলনায় ৠাংকিংয়ে আমরা পিছিয়ে আছি। কী করে আমরা এ বিষয়গুলোতে উন্নতি করতে পারি তা ডিটেইল করা আছে। উন্নতি করার কাজে কার কি দায়িত্ব হতে পারে সেই বিষয়গুলো পরিস্কারভাবে আমরা ডিটেইল করেছি। ’

কাজী আমিন বলেন, ‘সভায় আলোচনা হয়েছে বিশ্ব সভায় যদি আমরা আমাদের অবস্থান উন্নত করতে চাই, তাহলে আমাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এ দায়িত্বগুলো নিতে হবে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এ দায়িত্বগুলো পালন করতে হবে। ’

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার দায়িত্বগুলো এবং সেগুলো বাস্তবায়নের কৌশল পরবর্তী সভায় চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানান চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭
আরএম/এজি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।