ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বন্ড ব্যবস্থাপনায় ভাড়া অফিস সজ্জায় ১০ কোটি টাকা! 

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৭
বন্ড ব্যবস্থাপনায় ভাড়া অফিস সজ্জায় ১০ কোটি টাকা! 

ঢাকা: বন্ড ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় ‘বন্ড ম্যানেজমেন্ট অটোমেশন’ প্রকল্পের জন্য ভাড়া বাসায় অফিস সাজসজ্জা বাবদ ১০ কোটি টাকা চেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে ভাড়া বাড়িতে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে অফিস সজ্জিত করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।

রাজধানীর শেরে বাংলানগরে নির্মাণাধীন এনবিআরের নতুন ভবনের প্রথম তলায় বন্ড ব্যবস্থাপনায় মত দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এতে যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থের সাশ্রয় হবে, তেমনি এনবিআরের সঙ্গে সমন্বয়ও সহজ হবে।


 
তবে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘যেহেতু ভবনটি এখনও নির্মাণাধীন রয়েছে, সেহেতু বিকল্প হিসেবে ভাড়া বাড়ির সংস্থান ডিপিপি’তে রাখা সমীচীন হবে’।  
  
প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা। চলতি জানুয়ারি থেকে আগামী বছরের জুন মেয়াদে এটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারে অবৈধভাবে শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশের মাধ্যমে সৃষ্ট অসম প্রতিযোগিতা থেকে দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা এবং ব্যবসা পরিচালনায় সময় ও ব্যয় কমানোর পাশাপাশি পুরনো ও নতুন ডকুমেন্ট ব্যবস্থাপনার জন্য ডাটা আর্কাইভ উন্নত করা হবে।  
 
এছাড়া সরকারের আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন ও আয়করসহ প্রযোজ্য শুল্ক করাদি সংক্রান্ত রাজস্ব সুরক্ষিত করা হবে। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট জনবলকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।
 
এনবিআর সূত্র জানায়, দেশের রফতানি নির্ভর শিল্পকে বন্ডেড ওয়ারহাউজ সুবিধা দিতে ২০০০ সালে এনবিআর একটি স্বতন্ত্র বন্ড কমিশনারেট স্থাপন করে। এর অধীনে সংশ্লিষ্ট শিল্পকে সরকার ডিউটি ফ্রি কাঁচামাল আমদানিতে বর্তমানে প্রতি বছর ৩০ হাজার কোটি টাকার শুল্ক সুবিধা দিয়ে আসছে।
 
ফলে বিষয়টি স্থানীয় শিল্পের বিকাশে খুবই স্পর্শকাতর। এ সুবিধার কোনো ধরনের অপব্যবহার কিংবা ত্রুটির ফলে স্থানীয় শিল্প বিকাশে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।  

আর যেহেতু বাংলাদেশে শুরু থেকেই বন্ড ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়ালি পরিচালনা করা হচ্ছে, যেহেতু অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকেই প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়েছে। এ প্রকল্প চালু হলে বন্ড ব্যবস্থাপনায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু করা সম্ভব হবে।  

কিন্তু ৮৩ কোটি টাকার প্রকল্পে ১০ কোটি টাকায় ভাড়া অফিস সজ্জার প্রস্তাব বিতর্কের মুখে পড়েছে।
 
কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার (ঢাকা পশ্চিম) মতিউর রহমান বলেন, ‘বন্ড ব্যবস্থাপনার নিজস্ব অবকাঠামো না থাকায় বাড়ি ভাড়া করে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। এ অর্থে বন্ড অফিস সজ্জিতকরণের ব্যবস্থা করা হবে। ভাড়া বাড়িতে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে অফিস সজ্জিতকরণের যৌক্তিকতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে’।
 
 
প্রকল্পের আওতায় আইসিটি সিস্টেম, হার্ডওয়্যার স্থাপন, আর্কাইভ ও ডকুমেন্ট ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অফিস সরঞ্জামাদি কেনা হবে। যানবাহন কেনা, বাড়তি জনবল নিয়োগ ও পরামর্শক সেবা খাতের ব্যয়ও প্রকল্পে থেকে মেটানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।