ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ধর্মঘটের জের, গরুর মাংসের দোকানে বিক্রি হচ্ছে মুরগি!   

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৭
ধর্মঘটের জের, গরুর মাংসের দোকানে বিক্রি হচ্ছে মুরগি!    ধর্মঘটের জেরে গরুর মাংসের দোকানে বিক্রি হচ্ছে মুরগি;ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানী জুড়ে চলছে মাংস ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট, ৬ দিনের ধর্মঘটের আজ ৫ম দিন। ধর্মঘটে মহানগরীর মাংসের দোকানগুলো বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পেট চলছে না মাংস বিক্রেতাদেরও। তাই জীবিকার তাগিদে গরুর মাংসের দোকানে মুরগি ঝুলিয়ে বিক্রি করছেন তারা। 

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।  

রাজধানীর গাবতলী গরুর হাটে ইজারাদারের অত্যাচার, অতিরিক্ত খাজনা আদায়সহ মাংস ব্যবসায়ীদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির ৬ দিনের ধর্মঘট চলছে।

তবে পেট চালানোর তাগিদে মাংসের দোকানে মুরগি কেটে কেটে বিক্রি করছেন গরুর মাংসের ব্যবসায়ীরা। মুরগির বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে দাম নিচ্ছেন চড়া, কাটা মুরগির মাংস রাখছেন কেজি প্রতি ৩০০ টাকা দরে।

ধর্মঘটের ফলে মাংস কিনতে আসা সাধারণ মানুষ মাংস না পেয়ে পড়ছেন বেশ বিপাকে।  
এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বাজারের মুরগি ব্যবসায়ীরা, সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই মুরগির বাজার চড়া, প্রতি কেজি মুরগিতে ২০ থেকে ৩০ পর্যন্ত দাম বেশি নিচ্ছেন তারা।  

গত সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগির দাম ছিলো ১৩০-১৩৫ টাকা কেজি। এই সপ্তাহে তার দাম ১৫৫-১৬০ টাকা।

পাকিস্তানি মুরগিগুলোরও দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে কেজিপ্রতি ১৯০- ২০০ টাকা করে, আর দেশি মুরগি যেগুলো চোখের মাপে ২০০-২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো সে গুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকা দরে।

মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে গরুর মাংস না থাকায়, মুরগির চাহিদা প্রচুর, যার ফলে বাজারে দাম বেড়ে গেছে।

অন্যদিকে ক্রেতাদের পাল্টা অভিযোগ, এটা একটা সিন্ডিকেট, টাইন হল বাজারের মুরগি কিনতে আসা, সেলিম খান বাংলানিউজকে বলেন, মাংস কিনতে আসা মানুষদের জিম্মি করে মুরগির দাম বাড়িয়েছে। যেহেতু বিকল্প কিছু নেই, তাই ইচ্ছা করেই দাম হাঁকাচ্ছে।

অবশ্য রাজধানীতে অবস্থিত বিভিন্ন সুপার শপে পাওয়া যাচ্ছে গরু বা খাসির মাংস, তবে ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে সেখানেও।  সুপার শপ স্বপ্ন‘তে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৯০ টাকা কেজিতে।  যা স্বাভাবিক সময়ে ছিল ৪২০ টাকা কেজি।   

মাংস ব্যবসায়ীরা বলছেন সাময়িক ভাবে সমস্যা হলেও এর স্থায়ী সমাধান দরকার,এই বিষয়ে টাউন হলের মাংস ব্যবসায়ী বারেক শেখ বাংলানিউজকে বলেন, এই ধর্মঘটে যে শুধু সাধারণ মানুষই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে এমনটা না, আমাদেরও জীবন রুজি চলে এই ব্যবসা দিয়ে।

তবে এভাবে অন্যায় অত্যাচার ও মেনে নেওয়া যায় না। যে পর্যন্ত সরকার বা সিটি কর্পোরেশন ইজারদারদের জিম্মি থেকে আমাদের মুক্ত না করবেন, ততদিন কিছুই করার নেই আমাদের।

অন্যদিকে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল ইসলাম  বলেন, সীমান্ত থেকে গরুর হাট পর্যন্ত ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা গরু প্রতি চাঁদাবাজি  হচ্ছে। সরকারের আদেশ অমান্য করে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছে ইজারদাররা। গত ৮ মাস ধরে গাবতলী গরু হাটে এই অত্যাচার চালানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে এই মাংস ধর্মঘটের মেয়াদ আরও  বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল বারেক বলেন, আজকের মধ্যে কোন সমাধান না হলে প্রেসক্লাবে আমরা আবার একত্রিত হবো, পরবর্তী নির্দেশনা ঐ জায়গা থেকে আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৭
এসটি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।