ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দক্ষ জনবল তৈরিতে বিনিয়োগের আগ্রহ ভারতের

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
দক্ষ জনবল তৈরিতে বিনিয়োগের আগ্রহ ভারতের

ঢাকা: বাংলাদেশে দক্ষ জনবল খাতে বিনিয়োগ করতে চায় প্রতিবেশী দেশ ভারত। কনসালটেন্সি, প্রকৌশল, আইটি, লজিস্টিক, স্কিল্ড ডেভেলপমেন্ট খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মী তৈরির লক্ষ্যে ইনস্টিটিউট গড়ে তুলতে এ বিনিয়োগ করতে চান ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশে সফররত ভারতীয় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে দেখা করে এ প্রস্তাব দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তারা যৌথ বিনিয়োগেও রাজি বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।


 
মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে স্কিল্ড এমপ্লয়মেন্ট মার্কেটের পরিধি চার বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। দেশে মিডিল ক্লাস দক্ষ কর্মীর অভাবে প্রতি বছর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কর্মীরা নিয়ে যাচ্ছেন। এসব বিদেশি কর্মীর বেশিরভাগই ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই এদেশে বাস করছেন। অবৈধ এ কর্মীদের বেশিরভাগই ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে এসে বছরের পর বছর কাজ করছেন এবং হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচারে যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
 
ভারতীয় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি ও শিল্পায়নের পথে বড় বাধা মিডিল ক্লাস কোয়ালিফাইড এমপ্লয়ার। এ ঘাটতি পূরণে এদেশে বিনিয়োগ করতে চান ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় জমি পেলে তাদের বিনিয়োগকারীরা এদেশে একাধিক ইনস্টিটিউট গড়ে তুলতে চান।

যেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ডিপ্লোমা ইনস্টিটিটিউট, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজসহ বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে ‘জব মার্কেটে’ পাঠানো হবে। এতে একদিকে সার্টিফিকেটধারী তরুণদের যেমন দ্রুত কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে, তেমনি নিয়োগদাতাদেরও দুশ্চিন্তা কমবে।
 
ভারতের বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি দিব্য শংকর দাস বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা এদেশে বিভিন্ন সেক্টরের জন্য দক্ষ জনবল তৈরি করতে ইনস্টিটিউট তৈরি করতে চাই। এজন্য সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় জমি চেয়েছি। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ খাতে যৌথ বিনিয়োগেও আমাদের আপত্তি নেই’।
 
তিনি বলেন, কনসালটেন্সি, শিক্ষা, ইঞ্জিনিয়ারিং, ফাইন্যান্স, হেলথ, আইটি, ট্যুরিজম, শিপিং, লজিস্টিকস, স্কিল্ড ডেভেলপমেন্ট ও ট্রান্সপোর্টেশন সেক্টরের প্রতিনিধিরা এ খাতে বিনিয়োগে বেশি উৎসাহী।
 
টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের পরিচালক আর এন লাহিড়ি জানান, প্রতিবেশী দু’দেশের মধ্যে পর্যটন, ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্য, টেকনোলজিসহ অনেক সেক্টরেই পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে উপকৃত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
 
মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতীয় ব্যবসায়ীরা কেবল এদেশে দক্ষ জনবল তৈরিই নয়, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পের চাহিদা পূরণে মেশিনারিজ পার্টস তৈরিতেও যৌথ বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন।
 
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব (অতিরিক্ত) মুন্সী সফিউল হক বাংলানিউজকে বলেন, দেশে দক্ষ জনবল তৈরিতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে মন্ত্রণালয়। তবে বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
 
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশে এরই মধ্যে দু’টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তারা ইচ্ছে করলে সরকার ঘোষিত ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোনের যে কোনোটিতে বিনিয়োগ করতে পারেন। তবে দক্ষ জনবল তৈরির জন্য পৃথক ইনস্টিটিউট গড়ার প্রস্তাবও সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭
আরএম/পিসি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।