ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ চলছে হাজারীবাগের ট্যানারিতে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০১৭
সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ চলছে হাজারীবাগের ট্যানারিতে হাজারীবাগের ট্যানারিতে চলছে বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ; ছবি- শাকিল

ঢাকা: উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজধানীর হাজারীবাগের সব ট্যানারিতে (কারখানা) বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর।

এদিকে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় রাতে হাজারিবাগ এলাকার ট্যানারিগুলোতে ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার মাধ্যমে ট্যানারির মালামাল চুরি যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ট্যানারি ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (৮ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে পরিবেশ অধিদফতর কর্তৃপক্ষ সব ইউটিলিটি সেবা বন্ধ করে দেওয়ার কাজ শুরু করে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন ।

হাজারীবাগ ট্যানারি ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যুৎ-গ্যাস ও পানির লাইন বন্ধ করে দেওয়ায় বেকার হয়ে বসে আছে শ্রমিকেরা৻ কারখানাগুলোর পরিবেশ বেশ অন্ধকার।

বাংলাদেশ ট্যানার্স এ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, পাট শিল্পকে যারা ষড়যন্ত্র করে ধ্বংস করেছিলো, তারাই ট্যানারি শিল্পকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। এ বছর ১২শ’ কোটি টাকা রপ্তানির অর্ডার নিয়েছি আমরা। এভাবে সময় না দিয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দিলে এই বায়ারগুলো কোথায় পাবো। বিশ্বের অন্য দেশ আমাদের ট্যানারি বাজার দখল করে নেবে। আর তিন মাসের মতো সময় দিলে বিশাল ক্ষতি থেকে আমরা বেঁচে যেতাম।

হাজারীবাগ এলাকায় ২শ’টি ট্যানারি কারখানা ছিলো। এর মধ্যে ১৫৪টি কারখানা সাভারে জায়গা পেয়েছে। হাজারীবাগ ট্যানারি কারখানার সবগুলোকেই সাভার ট্যানারি পল্লীতে জায়গায় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো সরকার। তবে প্লট সংকট, ঋণ না পাওয়ায় ৪৬টি ট্যানারি সাভারে এখনও কারখানা করার অনুমতি পায়নি।

মিজানুর রহমান বলেন, ১৫৪টি ট্যানারি কারখানার মধ্যে ৫০ শতাংশ ইতিমধ্যে শিফট করা হয়েছে। বাকিগুলো শিফটিংয়ের কাজ হচ্ছে৻ এর মধ্যে ইউটিলিটি সার্ভিস বন্ধ করে দিলে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়ে যাবেন ব্যবসায়ীরা। সামনে ঈদ আছে শ্রমিকদের বেতন দিতে না পারায় শ্রমিক অসন্তোষও দেখা দিতে পারে বলে জানান তিনি।  

ডমেস্টিক বিদ্যুতের লাইনের দাবি করে তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে দাবি করেছি, কারখানার লাইন বন্ধ করলেও যেন ডমেস্টিক লাইন দেয়া হয়৻ কিন্তু আজকে সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে রাতে ট্যানারি কারখানায় ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হবে। কারখানায় কোটি কোটি টাকার মালামাল রয়েছে; ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রাতে কারখানায় চুরি হওয়ার ভয় রয়েছে।

সমতা লেদার কমপ্লেক্সের পরিচালক আইয়ুব খান বলেন, ট্যানারি কারখানা চাইলেই অল্প সময়ে শিফট করা যায় না। আমরা এখন কোনো কাঁচাপণ্য নিচ্ছি না, আগে যে পণ্য রয়েছে সেগুলোর অর্ডার সম্পন্ন করার সময় তো আমাদের দিতে হবে। একবার বায়ার হাতছাড়া হলে আর পাওয়া যাবে না। তাছাড়া সাভারের ট্যানারি পল্লীর কাজ এখনও শেষ হয়নি। সেখানে গ্যাসের লাইন নেই,বিদ্যুৎ আছে তবে পর্যাপ্ত নয়। এভাবে তো যাওয়া যায় না।

হাজারীবাগে থাকা ট্যানারিগুলো বন্ধ করে সেখানকার গ্যাস-বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সেবা সংযোগ ৬ এপ্রিলের মধ্যে বিচ্ছিন্ন করতে পরিবেশ অধিদফতরকে এক মাস আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার ৬ এপ্রিল। ১০ এপ্রিলের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরকে আদালতে এর অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে হবে। এর ফলে আজ সকাল থেকে পরিবেশ অধিদপ্তর হাজারীবাগের সব ট্যানারিতে (কারখানা) বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করে। এ অভিযান চলবে আগামীকাল দুপুর ২ টা পযর্ন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮,২০১৭
এমসি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।