ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

১৫ দিনের মধ্যেই সাভার প্রস্তুত চান ট্যানারি মালিকরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৭
১৫ দিনের মধ্যেই সাভার প্রস্তুত চান ট্যানারি মালিকরা এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয় সাভারের চামড়া শিল্পপল্লী- দাবি মালিকদের

ঢাকা: আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে সাভারে স্থানান্তরিত চামড়া শিল্পপল্লীতে সকল সুবিধা চান মালিকরা। এছাড়া শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশাধে ব্যাংক থেকে নেওয়া আগের ঋণের সুদ মওকুফ ও নতুন করে ঋণের দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছেন তারা।

সোমবার (১০ এপ্রিল) সরেজমিনে হাজারীবাগে ঘুরে দেখা গেছে, মালিক-শ্রমিকরা সমাবেশ করছেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন আন্দোলনে যাওয়ার।

সরকার ইতোমধ্যে হাজারীবাগের সব ট্যানারির পরিসেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে সব কারখানা। সর্বশেষ রোববার (০৯ এপ্রিল) পর্যন্ত বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

মালিকদের দাবি, পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি সাভারের ট্যানারি শিল্প। সেখানে ইতোমধ্যে বিনিয়োগ করেছেন অনেক মালিক। কিন্তু গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সংযোগসহ সকল সুবিধা না দেওয়ায় উৎপাদনে যেতে পারছেন না মালিকরা। ফলে দুই দিক থেকে নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত মনে করছেন তারা।

প্রথমত, সেখানে উৎপাদনে যেতে না পারায় ক্ষতি হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এজন্য কোনো বরাদ্দও আসেনি।

আবার হাজারীবাগে যেসব কারখানা চালু ছিল, বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত মনে করছেন তারাও। আবার কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ শ্রমিক নিজেদেরকে সংকটাপন্ন বলে ভাবছেন।

এ অবস্থায় মালিক-শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সমাবেশে তাদের দাবি, সামনে ঈদ আসছে। শ্রমিকদের বেতন কিভাবে হবে? সাভারে উৎপাদনে যেতে না পেরে যে ক্ষতি হয়েছে, সেটিই  বা তুলে আনবেন কিভাবে? তাই ব্যাংকের সুদ মওকুফ ও নতুন ঋণ সুবিধার দাবি তাদের।

এছাড়া হাইকোর্ট সরকারকে যে ১৫ দিনের মধ্যে সাভারের চামড়া শিল্প নগরী প্রস্তুত করতে বলেছেন- সেই ১৫ দিনের মধ্যেই তা প্রস্তুত করার আল্টিমেটামও দিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা।

অন্যথায় মতিঝিলের বিসিক ঘেরাও করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। এছাড়া ঋণের সুদ মওকুফ ও নতুন ঋণ সু্বিধা পাওয়ার দাবিতে আগামী বুধবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীতে কালো পতাকা মিছিল করবেন তারা।   আগামী শনিবার (১৫ এপ্রিল) মতবিনিময় সভা করে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন মালিক-শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা তো সাভারে যেতেই চাই। কিন্তু সেখানে সকল সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। অথচ কারখানা স্থাপন করেও উৎপাদনে যেতে পারিনি। এদিকে হাজারীবাগের কারখানাও বন্ধ। তাই আমরা নতুন ঋণ চাই। আগের ঋণের সুদ মওকুফ চাই। সামনে ঈদ, কিভাবে শ্রমিকের বেতন হবে? আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি’।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের এক নেতা বলেন, ‘কয়েক লাখ শ্রমিক বেকার। আগেও অনেক শ্রমিক বেকার হয়েছেন। হয়তো এটি সাময়িক। কিন্তু তিন-চার বা পাঁচ মাসে যে ক্ষতি হচ্ছে, সেটি কিভাবে পোষাবো? মালিকরা না বাঁচলে আমরা কিভাবে বাঁচবো?’

‘এখান থেকে সাভারে স্থানান্তরিত হতে গেলেও সবকিছু নিয়ে যেতে হবে। এখানে অনেকটা স্থিতিশীল হয়ে এসেছিল জীবনযাত্রা। ওখানে ঘর ভাড়া থেকে শুরু করে সবই নতুন করে করতে হবে। এতে ক্ষতি হবে। কাজেই এ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। না হলে আমরা আরও সংকটের মুখে পড়বো। তাই সবাই মিলে একসঙ্গেই এ আন্দোলনে নেমেছি আমরা’।

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সাভারের ট্যানারি শিল্পে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের সংযোগ দিতে রোববার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৭
ইইউডি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।