রাজশাহীর পবা উপজেলার আলিমগঞ্জ গ্রামের খামারি হাসান আলী বাংলানিউজকে বলেন, তিনি ৫০ টাকা দরে একেকটি ব্রয়লারের বাচ্চা কিনেছিলেন। একেকটি বাচ্চা বড় করতে সময় লাগে ৩০-৪০ দিন।
এর সঙ্গে রয়েছে ওষুধ, বিদ্যুৎ ও লোকবল খরচ। সব মিলিয়ে একেকটি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে মোট খরচ হচ্ছে ১শ’ ৩০ টাকা। অথচ বাজারে গিয়ে দাম পাওয়া যাচ্ছে ১শ’ ১০ টাকা কেজি। এতে লাভ তো দূরের কথা প্রতিটি ব্রয়লারে ২০ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। খামারে বর্তমানে পাঁচ হাজার বিক্রয়যোগ্য ব্রয়লার মুরগি থাকলেও দাম কমে যাওয়ায় বিক্রি করতে না পারায় হতাশার সুর তার গলায়।
এছাড়া সব খামারি বাজারে গিয়ে সরাসরি মুরগি বিক্রি করতে পারেন না। এজন্য তাদের ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের শরণাপন্ন হতে হয়। ফলে তারা আর্থিকভাবে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
শফিকুল ইসলাম নামে অপর এক খামারি বলেন, অনেক খামারিই বাজারে গিয়ে মুরগি বিক্রি করতে পারেন না। এক্ষেত্রে খামারের মুরগি দুই থেকে তিন হাতবদল হয়। ফলে লাভের একটি অংশ মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে যায়। বাজারে দাম পড়ে যাওয়ায় বর্তমানে খামারিরা ফড়িয়াদের কাছে পাইকারি ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। বাজারে মুরগির দাম না বাড়লে এ দফায় স্থানীয় একেক জন খামারির প্রায় কোটি টাকা ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করেন পবার এ খামারি।
রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, রাজশাহীতে ব্রয়লার, লেয়ার এবং সোনালি মুরগি মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। খামারের অর্ধেকেরও বেশি ব্রয়লার মুরগির।
সব খামারেই বিক্রি উপযোগী ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি রয়েছে। কিন্তু রাজশাহীর বাজারে দাম কমে যাওয়ায় অনেক খামারি মুরগি বিক্রি করতে পারছেন না। আর যারা বিভিন্ন কারণে মুরগি রাখতে পারছেন না তারা লোকসানে বিক্রি করছেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাজশাহীর পোল্ট্রি খামারিরা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন বলেও উল্লেখ করেন পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের এ নেতা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৭
এসএস/জেডএস