ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঋণ পরিশোধের সক্ষমতায় বেড়েছে বৈদেশিক অর্থছাড়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
ঋণ পরিশোধের সক্ষমতায় বেড়েছে বৈদেশিক অর্থছাড় গত বছরের তুলনায় উন্নয়ন সহযোগীরা ৮২ কোটি ৬৪ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার বেশি অর্থছাড় করেছে।

ঢাকা: চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মেয়াদে বা প্রথম ৫ মাসে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বৈদেশিক অর্থছাড় বেড়েছে। উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পরিশোধে ব্যাপক সফলতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। সামনে পাইপলাইনে থাকা প্রকল্পে অর্থছাড় আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) বৈদেশিক সাহায্যের বাজেট ও হিসাব অনুবিভাগ (ফাবা)।

ফাবা সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, ওই পাঁচমাসে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে রাশিয়া। কারণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে স্বাক্ষরিত মূল চুক্তিতে (জেনারেল কন্ট্রাক্ট) এক লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি (১ হাজার ২৬৫ কোটি মার্কিন ডলার)।

চীন, ভারত, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিশ্বব্যাংকও অর্থছাড় বাড়িয়েছে। ফলে এসব উন্নয়ন সহযোগীদেরকে চুক্তি অনুসারে সঠিক সময়ে ঋণ পরিশোধে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক মানের রেটিং এজেন্সি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল(আইএমএফ), স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর, মোদিস ও ফিট বাংলাদেশের ঋণমানের মূল্যায়ন করেছে। এসব এজেন্সির মূল্যায়নে দেশের ঋণমান সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে।

ফাবা’র প্রধান অতিরিক্ত সচিব ফরিদা নাসরিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রতিনিয়তই উন্নয়ন সহযোগীরা ‍অর্থছাড় বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর প্রধান কারণ, আমাদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বেড়েছে। ঋণ পরিশোধে কোনো ডেট ফেল করে না বাংলাদেশ। এটি বড় অর্জন। বিশ্বের কোনো উন্নয়ন সহযোগী বাংলাদেশকে ঋণ দিতে ভয় করে না, বরং এগিয়ে আসছে নতুন নতুন সংস্থা। আমরা ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে কমফোর্ড জোনে রয়েছি। এসবের কারণেই মূলত অর্থছাড় বেড়েছে’।

‘বর্তমানে প্রকল্পের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ২০০টি। ১০টি মেগা প্রকল্প রয়েছে, এগুলোর বাস্তবায়নের গতি বাড়লে সামনে অর্থছাড় আরও বাড়বে। প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ঋণ পরিশোধে বৈদেশিক অর্থছাড়ও বাড়বে। উন্নয়ন সহযোগীদের নতুন নতুন প্রতিশ্রুতিও পাবে বাংলাদেশ’।

ইআরডি সূত্র জানায়, পাঁচমাসে উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থছাড় করেছে মোট ১৭২ কোটি ৯৬ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণের পরিমাণ ১৬০ কোটি  ৯৫ হাজার মার্কিন ডলার আর অনুদান হচ্ছে ১২ কোটি ৬৭ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে মোট অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ৯০ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণের পরিমাণ ছিল ৮০ কোটি ৬৬ লাখ ডলার ৬০ হাজার এবং অনুদান ছিল ৯ কোটি ৬৫ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার।

ফলে গত বছরের তুলনায় উন্নয়ন সহযোগীরা ৮২ কোটি ৬৪ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার বেশি অর্থছাড় করেছে।

অন্যদিকে পাঁচমাসে সরকারের পক্ষ থেকে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে ৫২ কোটি ৪৮ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে আসল ৪১ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার এবং সুদ ১১ কোটি ২ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পরিশোধ করা হয়েছিল ৪৩ কোটি ৩০ লাখ ৮০  হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে আসল ৩৩ কোটি ৯৩ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার এবং সুদ ৯ কোটি ৩৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

ফলে এক বছরের ব্যবধানে পাঁচমাসে ৯ কোটি ১৭ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার বেশি ঋণ পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ।

তবে ওই পাঁচ মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কিছুটা কমেছে। চলতি সময়ে বৈদেশিক প্রতিশ্রুতি এসেছে ৬৭১ কোটি ৩৮ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৩৪২ কোটি ২৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার।

বাংলা‌দেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ডি‌সেম্বর ১৮, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।