কৃত্রিম উপায়ে পাকানো এসব টমেটো সৈয়দপুর পৌর বাজার, রেলওয়ে গেট বাজার, টার্মিনাল বাজার, আদানির মোড়, চৌমুহনী, হাজারিহাট, পোড়ার হাট, ক্যান্ট বাজার ও নিচু কলোনিসহ প্রতিটি পাড়া-মহল্লার বাজারে ও ফেরিওয়ালারা বিক্রি করছেন। মুখের স্বাদ নিতে বাড়ির গৃহিণীসহ সবাই কিনছেনও।
সরেজমিনে পৌর সবজি বাজারে গিয়ে জানা গেছে, এ টমেটোর পাইকারি দর ৩৫/৪০ টাকা। শুরুতে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন খুচরা বিক্রেতারা ৬০/৭০ টাকায় বিক্রি করছেন। এই শীত মৌসুমে টমেটো পাকে না। কিন্তু সে ধারণা না থাকায় এসব টমেটো কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা।
আড়ত মালিকরা জানান, প্রায় এক মাস ধরে কৃত্রিম উপায়ে পাকানো এসব টমেটো এখানে আসছে। গোদাগাড়ির মোকাম মালিকরা একটা দর বেঁধে দিয়ে পাঠাচ্ছেন। সেই টমেটো খুচরা দরে বিক্রি করছেন তারা।
সবজি বাজারের গোল্ডেন আড়তের মালিক মকসুদ আলম জানান, অগ্রিম টাকা ছাড়াই চাহিদানুসারে ট্রাকে করে টমেটো পাঠান গোদাগাড়ির মোকাম মালিকরা। স্থানীয় টমেটো না ওঠা পর্যন্ত এসব টমেটোই বিক্রি হচ্ছে।
আড়ত মালিক আফতাব আলম জানান, এখানে ওষুধ ও কেমিক্যাল ব্যবহারে টমেটো পাকানো হয় না। ওখানকার ব্যবসায়ী ও কৃষকরা এ কাজ করছেন। এতে ১৫/২০ দিন টমেটো রেখে বিক্রি করা যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোমায়রা মণ্ডল জানান, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজির আবাদ করেছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে শীতের শাক-সবজি বাজারে উঠলেও টমেটো উঠতে আরও মাস দেড়েক অপেক্ষা করতে হবে। শীত ও কুয়াশায় টমেটো পাকে না। ফলে লাল ও হলুদ বর্ণ আসে না।
সৈয়দপুর কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুনীল কুমার দাস বলেন, এক ধরনের হরমোন জাতীয় ওষুধ মিশ্রিত পলিথিনে মোড়ানো সংরক্ষণ পদ্ধতিতে টমেটোকে লাল করা হয়েছে, যা অবশ্যই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। ক্রেতারা না বুঝে তা কিনছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম জানান, অপরিপক্ক এসব টমেটোয় সব খাদ্য উপাদান ঠিকমতো তৈরি হয় না। এভাবে কাঁচা টমেটো পাকানোর কারণে ভিটামিন ও স্বাদ দু’টিই নষ্ট হচ্ছে। যা খেয়ে কিডনি ড্যামেজ, পেটের সমস্যা, লিভার ও ক্যান্সারের মতো কঠিন রোগ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৭
এএসআর/