বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) সূত্রে জানা গেছে, মীর সিরামিক লিমিটেড ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে অপরিশোধিত উৎসে মূসক কর্তন বাবদ ৯৫ লাখ ১৫ হাজার ৬২৫ টাকা ১৯ পয়সা ফাঁকি দিয়েছে।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত গৃহীত ও অবৈধ রেয়াত বাবদ ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ৬২৬ টাকা ১৭ পয়সার রেয়াত বাতিলের জন্য মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৯ এর উপধারা (২) অনুযায়ী চূড়ান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মোট ১ কোটি ৩৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৫১ টাকা ৩৬ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি উৎঘাটিত হয়েছে।
আরও জানা গেছে, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মূসক-১ প্রদত্ত ঘোষণা অনুযায়ী ১৬ কোটি ৩৯ লাখ ৯২ হাজার ৫১ দশমিক ৪৫ (sft) সিরামিক পণ্য উৎপাদনে মোট উপকরণ ব্যবহার হওয়ার কথা ছিলো ৩৮ কোটি ৫২ লাখ ৩৫ হাজার ৫০৩ দশমিক ১৯ কেজি।
কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় হিসাবে (মূসক ১৬) একই পরিমাণ পণ্য উৎপাদনে উপকরণ ব্যবহার করেছে ২৭ কোটি ৫৬ লাখ ১০ হাজার ১৮৬ দশমিক ৭৮ কেজি। অর্থাৎ মূসক-১ এ প্রতিষ্ঠানটি ১০ কোটি ৯৬ লাখ ২৫ হাজার ৩১৬ দধমিক ৪১ কেজি উপকরণ বেশি প্রদর্শন করেছে।
সেই সাথে প্রাথমিক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে দাবিকৃত ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ৬২৬ টাকা ১৭ পয়সার রেয়াত বাতিল যোগ্য।
শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটির ২০১১-১২, ২০১২-১৩ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরের সিএ ফার্মের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জানা যায় মীর সিরামিক বিভিন্ন সেবা গ্রহণের মাধ্যমে উৎসে মূসক কর্তনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি করেনি। ফলে সরকারের ৮০ লাখ ৬১ হাজার ১৬৪ টাকা ১৮ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
একই সাথে ওই সমেয় প্রতিষ্ঠানটি অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান থেকে কাঁচামাল ক্রয়ের বিপরীতে উৎসে মূসক কর্তনের বিধান থাকলেও সেটা করেনি। ফলে এখানে প্রতিষ্ঠানটি ১৮ লাখ ৫৪ হাজার ৪৬১ টাকা ১ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। যা প্রতিষ্ঠানের নিকট আদায়যোগ্য কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ফাঁকি দিয়েছে।
আরও জানা গেছে, নিরীক্ষা মেয়াদে অবৈধ রেয়াত, অতিরিক্ত রেয়াত এবং উৎসে মূসক বাবদ প্রতিষ্ঠানটি ১ কোটি ৩৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৫১ টাকা ৩৬ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
মীর সিরামিকের এরূপ কার্যক্রম মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৫ এর উপধারা (২), ধারা (৯)এর উপধারা (১) এর দফা (চ) ও দফা (ছ) এবং মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ১৯৯১ এর বিধি ১৮ (ক) ও (খ) এর লঙ্ঘন বলে বিবেচিত।
এ বিষয়ে বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) কমিশনার মো. মতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটিকে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটি নোটিশের জবাব দিয়ে শুনানিতে অংশ নেয়।
কিন্তু শুনানিতে রাজস্ব ফাঁকি হয়নি এমন তথ্য উপস্থাপনে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব অনতিবিলম্বে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭
এসজে/এমজেএফ