ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাচ্চুকে তৃতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৮
বাচ্চুকে তৃতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: বেসিক ব্যাংক থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুকে তৃতীয়বারের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার  (৮ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে দুদক কার্যালয়ে আসেন জাতীয় পার্টির সাবেক এই সংসদ সদস্য।

এর আগে রোববার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন সই করা নোটিশে বাচ্চুকে সোমবার সকাল ৯টায় দুদক কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়।

এছাড়া ১৭ ডিসেম্বর তৃতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের কথা থাকলেও সেসময় ‘অসুস্থতার’ কারণ দেখিয়ে এক মাসের সময় চেয়ে দুদকে আবেদন করেন বাচ্চু।  

এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ও ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কমিশন।  

তবে দুদকের দ্বিতীয়বার টানা সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল হাই বাচ্চু তার দায় স্বীকার করে নেন। ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় তিনি কিছুই জানেন না। পর্ষদই সবকিছু জানে। বোর্ডে যেসব ঋণ প্রস্তাব আসতো তা সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামের মাধ্যমেই উপস্থাপন করা হতো। ফলে তিনি তাকে বিশ্বাস করে ভুল করেছেন। যা তিনি পরে বুঝতে পারেন। তবে পর্ষদের ওপর দায় চাপালেও তিনি নিজেও একজন পর্ষদ সদস্য যা নিজেই বলেন। ফলে তিনি নিজেই নিজের কথার ফাঁদে পড়ে যান।

এদিকে ২৪ ডিসেম্বর বাচ্চু ও তার পরিবারের ১০ সদস্যের যাবতীয় ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে স্বাক্ষর করেন দুদকের উপ-পরিচালক শামসুল আলম। ‌

এছাড়া বাচ্চুর ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্নার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ক্রাউন প্রোপার্টিজ, বিএম কম্পিউটার্স এবং ইডেন ফিসারিজ লিমিটেডের আর্থিক লেনদেনের তথ্যও চেয়েছে কমিশন। ঋণ জালিয়াতির অর্থ ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এসব তথ্য চাওয়া হয়েছে।  

শুধু তাই নয়, বাচ্চু ও তার ছোট ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না বেসিক ব্যাংক থেকে ঋণ মঞ্জুর করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পেয়েছে দুদক। আর সেই অভিযোগটি আমলে নিয়ে গত ২১ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলমকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর অনুসন্ধান তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। এই অভিযোগটি ১৩ ডিসেম্বর দুদকের অভিযোগ শাখায় জমা পড়ে। এরপর কমিশনের নির্ধারিত বৈঠকে অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।

প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনায় ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিনদিনে ৫৬টি মামলা করেন দুদকের অনুসন্ধান দলের সদস্যরা। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় এসব মামলায় আসামি করা হয় ১৫৬ জনকে।  

৫৬ মামলার আসামিদের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা আছেন ২৬ জন। বাকি ১৩০ জন আসামি ঋণগ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও সার্ভে প্রতিষ্ঠান। তবে কোনো মামলায় বাচ্চুকে আসামি করেনি দুদক। এমনকি গতমাসে আরও একটি মামলা করলেও দুদক সেই মামলাও বাচ্চুকে আসামি করেনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৮
এসজে/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।