ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

৪৫০ টাকায় গরুর মাংস, তবে...

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৯ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
৪৫০ টাকায় গরুর মাংস, তবে... দোকানে গরুর মাংস কাটছেন এক ব্যবসায়ী

ঢাকা: রমজানে গরুর মাংসের দাম ৪৫০ টাকা কেজি নির্ধারণ করে দিয়েছিলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। কথা ছিল প্রথম রমজান থেকেই ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করবেন। যদিও রমজানের প্রথম দিনে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া কাউকে সিটি করপোরেশনের বেঁধে দেওয়া দামে মাংস বিক্রি করতে দেখা যায়নি। অধিকাংশ দোকানে দেখা যায়নি সিটি করপোরেশন নির্ধারিত মূল্য তালিকা।

তবে রমজানের দ্বিতীয় দিন শনিবার (১৯ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে মাংসের দোকানে সিটি করপোরেশনের মূল্য তালিকা দেখা গেলেও মাংস বিক্রির ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্নতা। ৪৫০ টাকা কেজি দরে মাংস কিনতে চাইলে ক্রেতাকে অবশ্যই প্রতিকেজি মাংসের সঙ্গে ৩০০ গ্রাম হাড় ও চর্বি নিতে হবে।

হাড়-চর্বি না নিলে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকায় মাংস কিনতে হবে।  

রাজধানীর খিলগাঁও কাঁচাবাজার, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কাঁচাবাজার, ফকিরাপুল কাঁচাবাজার, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে এ চিত্র মিলেছে।
 
সরেজমিন দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি মাংসের দোকানেই বর্ধিত দামের তালিকা টাঙানো রয়েছে। কেউ কেউ আবার মূল্য তালিকা উল্টো করে রেখেছেন। এসব বাজারে মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন গরুর দাম বেশি, তাই মাংসের দামও বেশি। ৪৫০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করলে আমাদের লোকসান হবে। আমরা সিটি করপোরেশনের দামের সঙ্গে মিলে মাংস বিক্রি করবো, তবে সঙ্গে হাড়- চর্বি নিতে হবে।
 
বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বাংলানিউজকে বলেন, বাজার মনিটরিংয়ে আমাদের সদস্যরা যাওয়া শুরু করেছেন। সিটি করপোরেশনও তদারকি করবে। ব্যবসায়ীরা বর্ধিত দাম রাখছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।
 
বাজারে দেখা যায়, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কাঁচাবাজারে রিপনের মাংসের দোকানে ৫০০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি হচ্ছে। এ প্রতিবেদক ক্রেতা সেজে কথা বললে ২০ টাকা কমে অর্থাৎ ৪৮০ টাকায় বিক্রি করতে রাজি হন রিপন। সিটি করপোরেশনের দামের কথা জানালে তিনি বলেন, আমরা পাবো কোথায়? বেশি দামে এনে কম দামে বিক্রি করতে পারবো না।

এ বাজারের অপর মাংস ব্যবসায়ী সৈয়দ নবী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখন গরু কিনে আনার সময়ই মাংসের দাম ৪৬০ টাকার ওপরে পড়ে যায়। কিন্তু সিটি করপোরেশন যে দামের তালিকা দিয়েছে এতে লাভের কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই হাড়-চর্বি মিলিয়ে (এক তৃতীয়াংশ) বিক্রি করছি। এতে হয়তো লোকসান কিছুটা কমবে।
 
রফিক নামের এক ক্রেতার অভিযোগ, ৪৫০ টাকায় কিনলে এরা হাড়-চর্বি দিচ্ছে অনেক। তাই বাধ্য হয়েই ৪৮০ টাকা কেজি দরে মাংস কিনেছি। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে মূল্য নির্ধারণে কোনো লাভ হয়নি। ব্যবসায়ীরা কম নিচ্ছেন না।
 
ফকিরাপুল বাজারের মাংস ব্যবসায়ী রানা বলেন, যে ব্যবসায়ীরা মেয়রের সঙ্গে মিটিং করে মাংসের দাম নির্ধারণ করেছেন তারা এখন ব্যবসা করেন না। তারা নিজেরা জানেন না এখন গরুর দাম কত? মাংসে কত টাকা লাভ হয়?
 
তিনি বলেন, আমরা নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করবো তবে প্রতি কেজিতে ৩০০ গ্রাম হাড়-চর্বি নিতে হবে। না হলে তাদেরকে ৪৮০ টাকা দামেই মাংস কিনতে হবে।
 
তবে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব জানান, দাম কার্যকরে সিটি করপোরেশনের মনিটরিং হবে। আমরা মাঠে থাকবো। আশা করছি সব ঠিক হয়ে যাবে বলে বাংলানিউজকে জানান তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৮ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।