ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল হলো কেনাকাটার ক্ষেত্রে বহুল প্রতীক্ষিত কার্যক্রম। এদিন পশ্চিমা ব্যবসায়ীরা অবিশ্বাস্য মূল্যছাড়ে রকমারি পণ্য বেচে থাকেন।
অফলাইন-অনলাইন
ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল এর ধারণা মূলত দোকানভিত্তিক হলেও প্রযুক্তির কল্যাণে এখন তা ভার্চুয়াল জগতেও চলে এসেছে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাডোবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই অনলাইনেই রেকর্ড ৭৯০ কোটি ডলারের পণ্য কেনাবেচা হয়। ২০১৬ সালের তুলনায় যা ১৮ শতাংশ বেশি।
গত বছর ২৩ নভেম্বর থেকে বিশ্বজুড়ে বেচাকেনা শুরু হলেও ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিনে এই লেনদেনের পরিমাণ ছিলো প্রায় ১ হাজার ৯৬২ কোটি ডলার। আর এই লেনদেনের প্রায় ৪০ শতাংশই করা হয় স্মার্টফোন থেকে।
ব্ল্যাক ফ্রাইডের অনলাইন কেনাবেচায় নেতৃত্ব দিচ্ছে দুই ই-কমার্স জায়ান্ট আমাজন এবং আলিবাবা। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আমাজনের মুনাফা এতোটা হয় যে, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোসের ব্যক্তিগত সম্পদের মূল্য ১০০ বিলিয়ন (১০ হাজার কোটি) ডলার ছাড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশে ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল
বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশে হতে যাচ্ছে ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল। পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থানীয় আউটলেটে এ মূল্যছাড় উপভোগ করা যাবে। বাংলাদেশে আলিবাবার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান দারাজ ডটকমের মাধ্যমেও বেচাকেনা করতে পারবেন গ্রাহকেরা।
ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল ও এর ইতিহাস
প্রতি নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে পরবর্তী দিন শুক্রবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী হয় ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল। ১৯২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্টাল চেইন শপ মেসি সর্বপ্রথম মূল্যছাড়ে সেলের আয়োজন করে। সেসময় এটি ‘মেসি’জ থ্যাংকস গিভিং ডে প্যারেড’ নামে পরিচিত ছিলো। এই প্যারেডে সান্তা ক্লজেরা সড়ক দিয়ে প্যারেড করতে করতে যেতেন আর মানুষদের মাঝে উপহার বিতরণ করতেন। সেই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এই দিনটিকে জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন বা থ্যাংকস গিভিং হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে।
একবার যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় এই দিনে কেনাকাটার জন্য এতো বিপুলসংখ্যক মানুষ সড়কে নেমে আসে যে, শহরটি কার্যত অচল হয়ে যায়। পছন্দের পণ্য কম দামে কিনে নিতে গ্রাহকদের মধ্যে সংঘর্ষের মতো ঘটনাও ঘটে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জনপ্রিয়তা
ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেলের ধারণা যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভাবিত হলেও কয়েক দশক পর দেশটির বাইরেও তা জনপ্রিয় হতে শুরু করে। ১৯৫২ সাল পর্যন্ত দিবসটিকে ‘ক্রিস্টমাস শপিং সিজন’ নামে জানা হতো। আশির দশকে এটি বিশ্বজুড়েও জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু করে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৮
এসএইচএস/এইচএ/