ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইইউ রেক্স সিস্টেমে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশের রফতানিকারকরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮
ইইউ রেক্স সিস্টেমে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশের রফতানিকারকরা ইইউ লোগো

ঢাকা: ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) 'দ্য রেজিস্টার্ড এক্সপোর্টার সিস্টেমে (রেক্স)' যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। এ পদ্ধতিতে ইইউভুক্ত বাজারে জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস (জিএসপি) সনদ নিতে পারবেন রফতানিকারক নিজেই। আগামী বছরের (২০১৯) শুরু থেকে বাংলাদেশের রফতানিকারকরা এ সুবিধা নিতে পারবেন। 

পরীক্ষামূলকভাবে এ পদ্ধতি চলবে পুরো বছর। এর ফলে ইইউতে শুল্কমুক্ত সুবিধা বা জিএসপি সনদ নিতে রফতানিকারকদের আর রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোতে (ইপিবি) যেতে হবে না।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইইউ বিভিন্ন দেশকে জিএসপি সুবিধা দেয়। ইইউভুক্ত দেশের আমদানিকারকরা বিনা শুল্কে বা সামান্য শুল্কে এসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে পারে। এ সুবিধা পেতে রফতানিকারকদের রফতানি চালানের বিপরীতে দেশের নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ থেকে জিএসপি সনদ নিতে হয়। যেখানে পণ্যের কাঁচামাল, উৎপাদনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য থাকে। বাংলাদেশের রফতানিকারকদের জিএসপি সনদ দেয় ইপিবি।

বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হলে রফতানিকারকদের সময়, শ্রম ও খরচ বাঁচবে। পাশাপাশি রফতানি খাত ডিজিটাল হলে পণ্য রফতানি বাড়বে। আমাদের রফতানির বড় পাঁচটি খাতের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, চামড়া খাত, প্লাস্টিক, ফুট ওয়েয়ার এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাত৷ এ মুহূর্তে এসব খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির জন্য প্রস্তুত নয়। তাদের সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণসহ কর্মশালার মাধ্যমে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর মধ্যে দেশের তৈরি পোশাকসহ অন্য খাতের প্রায় ১০ হাজার রফতানিকারক ইইউতে পণ্য রফতানি করেন। পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অধিকাংশই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির জন্য প্রস্তুত।

ইপিবি সূত্র জানায়, রেক্স হচ্ছে জিএসপি সনদের জন্য ইইউর চালু করা একটি অনলাইন বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি। যেখানে একটি দেশের রফতানিকারকরা নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান থেকে নিবন্ধন নিয়ে নিজেদের পণ্যের জিএসপি নিজেরাই ইস্যু করতে পারবেন।  বাংলাদেশের রফতানিকারকদের নিবন্ধন দেবে ইপিবি। ইপিবি রফতানিকারকদের একটি রেক্স নিবন্ধন নম্বর ও পাসওয়ার্ড দেবে। তবে রফতানিকারকরা নিবন্ধন নম্বরের মাধ্যমে রেক্স পদ্ধতির সার্ভারে প্রবেশ করে নিজেরাই সনদ ইস্যু করবেন। রফতানিকারকদের ইস্যু করা সনদ যাচাই-বাছাই করতে পারবে ইপিবি।

জানা গেছে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২২টি দেশ এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে রেক্স পদ্ধতিতে যুক্ত হচ্ছে। এরইমধ্যে বিশ্বের ৫১টি দেশ পরীক্ষামূলকভাবে এ পদ্ধতিতে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে পার্শ্ববর্তী ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলংকা রয়েছে। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ইইউ এ পদ্ধতি চালু করে। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জিএসপি সুবিধা পাওয়া দেশগুলো পরীক্ষামূলকভাবে রেক্স পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এরপর ভুলত্রুটি সংশোধন করে নিতে আরও ছয় মাস সময় পাবেন রফতানিকারকরা। ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে পূর্ণমাত্রায় চালু হবে রেক্স। এরপর ইইউভুক্ত ২৭টি দেশ এবং নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডে রফতানিতে রেক্স পদ্ধতি ব্যবহার বাধ্যতামূলক হবে। তবে ছয় হাজার ইউরোর কম রফতানির ক্ষেত্রে এ পদ্ধতির ব্যবহার দরকার হবে না।  

ইপিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাণিজ্য সহজীকরণ করতে ইইউ 'রেক্স' পদ্ধতি চালু করেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের যেসব দেশ জিএসপি সুবিধা পাচ্ছে, সব দেশই এ পদ্ধতি অনুসরণ করতে বাধ্য। যে কারণে বাংলাদেশও এ পদ্ধতি চালু করছে। বাংলাদেশে বর্তমানে তৈরি পোশাকসহ অন্য খাতের প্রায় ১০ হাজার রফতানিকারক ইইউতে রফতানি করেন।

উল্লেখ্য, রফতানিকারকরা ইপিবি থেকে ৩০০ বা ৫০০ টাকায় ফরম কিনে সেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সনদের আবেদন করেন। ইপিবি যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে সনদ দিয়ে থাকে। প্রতি বছর চার থেকে সাড়ে চার লাখ জিএসপি সনদ ইস্যু করে ইপিবি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮
জিসিজি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।