বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরো ইয়াসু ইজুমি ও জাইকা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা এ আগ্রহের কথা জানান।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য উত্তম জায়গা বলে মনে করে জাপান।
‘বাংলাদেশের কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কার এবং কর সম্পৃক্ত বিষয়ে পড়াশোনার ও গবেষণায় বৃত্তি প্রদান করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্টে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ’
তিনি বলেন, জাপানের কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকে না। তাই জাপানের সঙ্গে কাজ করা অনেক সহজ। জাপান বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। তারা স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ করে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামীতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। তাই এখনই বিনিয়োগের উত্তম সময়। বাংলাদেশ দিনে দিনে শুধু সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অগ্রগতির সব খাতেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। তাই এখনই বিনিয়োগের সুবর্ণ সময়।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, ধারাবাহিকভাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশের প্রাথমিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর বিদেশি উদ্যোক্তাদের আস্থার জায়গা এখন বাংলাদেশ। দেশের অর্থনীতি যেভাবে এগোচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে আগামী বছরই এই বিমানবন্দরে বার্ষিক ৮০ লাখের বেশি আন্তর্জাতিক যাত্রী যাতায়াত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
‘কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতী প্রথম সেতু নির্মাণে জাইকা প্রায় ২৯ বিলিয়ন ইয়েন ঋণ দিয়েছিল। মেট্রোরেলে ঋণ দিচ্ছে জাপান। এটাই দেশের প্রথম ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম। এ প্রকল্পের মাধ্যমে রাজধানীর যানজট কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অত্যন্ত বিশ্বস্ত বন্ধু হলো জাপান। ’
এ সময় জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরো ইয়াসু ইজুমি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী হলো জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। আর উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম বিশ্বস্ত বন্ধু হলো জাইকা। বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পেরে তিনি গর্বিত। বাংলাদেশে যে অর্থ খরচ করে তা শুধু জাইকার নয়, জাপানের প্রত্যেক করদাতার অর্থ এখানে খরচ হয়। এটা সমগ্র জাপানের মানুষের ভালোবাসার প্রতিফলন। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল দেশ।
তিনি বলেন, মেট্রোরেলসহ ছয় প্রকল্পের জন্য ২০০ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন ঋণ সহায়তা দিচ্ছে জাইকা। ঋণ প্যাকেজের আওতায় এ সহায়তা দিচ্ছে সংস্থাটি। ক্রমাগতভাবে এ ঋণ সহায়তা বাড়বে। রাষ্ট্রীয় পর্য়ায়ের সফরে সামনে এ সহায়তা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
‘এই ঋণের সবচেয়ে বড় অংশ যাচ্ছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণে নেওয়া প্রথম প্রকল্পে। মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট, ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহীতকরণ প্রজেক্ট এবং ইমার্জেন্সি ইফিসিয়েনসি অ্যান্ড কনজারভেশন প্রমোশন প্রজেক্ট। এছাড়া রয়েছে কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতি সেতু চলমান প্রকল্প, যমুনা রেলসেতু কর্ণফুলী ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প। ’
বাংলাদেশের মানুষের জন্য জাইকার এ সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান জাপানের রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশ সময়: ০১১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৯
এমআইএস/এমএ