ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে তথ্য আদান-প্রদান সহজের পরামর্শ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৯
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে তথ্য আদান-প্রদান সহজের পরামর্শ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দুই দেশের কর্মকর্তারা-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: বাংলাদেশ ভারতের বাণিজ্য বাড়ানোর পাশাপাশি চোরাচালান, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান সহজীকরণের পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য খন্দকার মুহাম্মদ আমিনুর রহমান। তিনি বলেন, উভয় দেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীনের পর ভারতই হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। উভয় দেশ চায় বাণিজ্য বাড়াতে। এক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলো রয়েছে তা আস্তে আস্তে সমাধান করা হচ্ছে।

রোববার (৩১ মার্চ) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (সিআইআইডি) এবং ভারতের ডিরেক্টর অব রেভিন্যু ইন্টেলিজেন্সের (ডিআরআই) মহাপরিচালক পর্যায় বৈঠকের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে একথা জানান তিনি।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য খন্দকার মুহাম্মদ  আমিনুর রহমান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতে ডিরেক্টরেট অব রেভিন্যু ইন্টেলিজেন্সের মুখ্য মহাপরিচালক দেবী প্রসাদ দাস। এসময় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবদুল হাকিম, শামীমা আক্তার, যুগ্ম পরিচালক শাকিলা পারভীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দুইদিনের বাংলাদেশ ও ভারতের কান্টমস গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (সিআইআইডি) ডিজিসহ ১৩ জন এবং ভারতের ডিরেক্টর অব রেভিন্যু ইন্টেলিজেন্সের (ডিআরআই) মুখ্য পরিচালকসহ আটজন অংশ নিয়েছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার আমিনুর রহমান বলেন, বর্তমান বিশ্বে তথ্যই হলো বড় শক্তি। তাই তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে দুই দেশের কাস্টমস ইন্টেলিজেন্সের মধ্যকার এই দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক। বৈঠকে চোরাচালান, অর্থপাচার, মানিলন্ডারিং, শুল্ক ফাঁকি ও সন্ত্রাস প্রতিরোধসহ জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের দিকেই এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমেই সম্ভব চোরাচালান, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও জাতীয় নিরাপত্তা। তাই ডিজি পর্যায়ের এই বৈঠক এখন সময়ের দাবী। এই বৈঠকের মাধ্যমে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে আমরা একটি আধুনিক, সমৃদ্ধ, যুগোপযোগী, দক্ষ ও সক্ষম কাস্টমস বিভাগ গঠন করতে পারবো।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেবী প্রসাদ দাস বলেন, বাংলাদেশ ভারতের বাণিজ্যিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনেকদিনের। এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদারকরণের জন্যই প্রথম ডিজি পর্যায়ে বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের বর্তমানে বাণিজ্যিক গ্রোথ ২৩ শতাংশ। আর বাণিজ্যিক ভলিউম ৮-১০ বিলিয়ন।  

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ৩১টি স্থলবন্দর রয়েছে। এর প্রায় সব বন্দর দিয়ে চোরাচালান, মানিলন্ডারিং হয়। এই চোরাচালান বন্ধে তথ্য আদান-প্রদান জরুরি। আমাদের সঙ্গে সার্ক চুক্তি আছে। সাসেক চুক্তিও আছে তা আরও কার্যকর করতে বাণিজ্য বাড়াতে হবে।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, ট্রেড বেজড মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে কাস্টমস গোয়েন্দা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় এই দ্বি পাক্ষিক বৈঠক সময়ের দাবী। দুই দেশের আলোচনার মাধ্যমে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত আসবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশই বাণিজ্য সহজীকরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। প্রথমবারের মতো এই আলোচনা বা বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখন থেকে প্রতি বছর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর এ বৈঠক বাংলাদেশে। আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা ত্বরিৎ খালাস, নিরাপদ সীমান্ত, বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, পারক্রুসার কেমিক্যালের অবাধ পরিবহন চলাচল মনিটরিংপূর্বক নিরাপত্তামুলক ব্যবস্থা গ্রহণ, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, তথ্য সহযোগিতা ইত্যাদির উপর গুরুত্ব আরোপ করা বা অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বৈঠকে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৯
জিসিজি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।