ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের রাজপথ-রেলপথ অবরোধ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের রাজপথ-রেলপথ অবরোধ আন্দোলনরত শ্রমিমকরা। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: নয় দফা দাবি আদায়ে ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘট ও প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে রাজপথ-রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি শুরু করছেন খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হয়েছে।

শ্রমিকরা নতুন রাস্তা মোড়ে অবস্থান নিয়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক, নতুন রাস্তা মোড় থেকে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সড়ক, বিআইডিসি সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করে রেখেছেন।

এছাড়া তারা বিক্ষোভ মিছিল, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সমাবেশ করছেন।

শ্রমিকদের আন্দোলনে খুলনার শিল্পাঞ্চল উত্তাল হয়ে উঠেছে। সড়ক অবরোধ থাকায় মহাসড়কের যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।

বকেয়া মজুরি পরিশোধ এবং মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের ডাকে খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা এ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন।

আন্দোলনরত শ্রমিক নেতারা বলেন, সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ সুপারিশ বাস্তবায়ন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের পি এফ গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বিমার বকেয়া প্রদান, টার্মিনেশন, বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনঃবহাল, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ী করা, পাট মৌসুমে পাটক্রয়ের অর্থ বরাদ্দ, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করাসহ নয় দফা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিলো। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো এখনও বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা রাজপথে আবার নামতে বাধ্য হয়েছি।

পাটকল শ্রমিক নেতা সোহরাব হোসেন জানান, শ্রমিকরা ৭ থেকে ৯ সপ্তাহের মজুরি না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ, ঘর ভাড়া দিতে পারছে না। এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই তারা আন্দোলনে নেমেছেন।

শ্রমিক নেতারা জানান, ৬ এপ্রিল ঢাকায় বিজেএমসি’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে শ্রমিক লীগ নেতাদের  বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দফা বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় বিকেলে আবারও বিজেএমসি’র চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যদের নিয়ে ছোট পরিসরে বৈঠক করা হয়। কিন্তু সেখানেও দাবি মেনে নেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত তারা দিতে পারেননি। সরকার টাকা দিলে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি দেওয়া হবে বলে জানান কর্মকর্তারা। কিন্তু কবে নাগাদ ওই টাকা পাওয়া যাবে তা নিশ্চিত নয়। যার কারণে তারা আবারও আন্দোলনে নেমেছেন।

বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্র জানায়, খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ৬৪ সপ্তাহের বেতন ও মজুরি ৪৪ কোটি ২০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। এর মধ্যে শুধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে ১২ কোটি ৩৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া রয়েছে ৩১ কোটি ১৮ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ সময়:  ০৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।