ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অভিবাসনে সিন্ডিকেট: বছরে পাচার হচ্ছে ২.১ বিলিয়ন ডলার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৯
অভিবাসনে সিন্ডিকেট: বছরে পাচার হচ্ছে ২.১ বিলিয়ন ডলার অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: অভিবাসন খাতে সিন্ডিকেটের কারণে বছরে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা। 

তারা বলেছেন, এ খাতে সুশাসন ফেরাতে সিন্ডিকেট ভেঙে আইনের আওতায় আনতে হবে। তবেই এর সুফল পাবেন অভিবাসীরা।

 

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘অভিবাসন ও সোনার মানুষ সম্মিলন ২০১৯’ শীর্ষক সস্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। অভিবাসন নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা রামরু-এর উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এতে সভাপতিত্ব করেন রামরুর চেয়ারম্যান তাসনিম সিদ্দিকী। আর প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।  


জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সেলিম রেজা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন- সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইসিসিসিএডি) পরিচালক সেলিমুল হক, ট্র্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, মানবাধিকারকর্মী শিরীন লিরা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) অর্জনে অভিবাসন ব্যয়সহ রেমিট্যান্স খরচ কমিয়ে আনতে হবে। দালালদের দৌরাত্ম্য কমাতে তাদের বৈধতা দিয়ে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে।

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, আগামী দশককে অভিবাসন দশক হিসেবে ঘোষণা করা অত্যন্ত সাহসের বিষয়। এজন্য প্রথমে আমাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। অভিবাসীদের যথাযোগ্য সম্মান দিতে হবে। এক্ষেত্রে পুরানো এজেন্সির পাশাপাশি নতুন এজেন্সি নিয়োগ করতে হবে। তাহলে দক্ষতা উন্নয়নে নতুন নতুন দিক প্রকাশিত হবে। আর দক্ষতা উন্নয়ন করা গেলে দেশ ও দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাবে।

টিআইবির ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অভিবাসন প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ জটিল প্রক্রিয়া। আমাদের দেশে অবিবাসন প্রক্রিয়াটি ঢাকা কেন্দ্রিক। এজন্য যেসব অভিবাসী বিদেশে গেছেন তাদের শতভাগ গিয়েছে দালালদের মাধ্যমে।  

‘এসব অভিবাসীরা মাসে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠান। এদিকে বিভিন্ন সিন্ডিকেট ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার পাচার করছে অভিবাসীদের কথা বলে। তাই সিন্ডিকেট ভেঙে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে অভিবাসন খাতের সুফল পাওয়া যাবে না। এজন্য সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। দালালসহ সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। ’

সিপিডির মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভিবাসন খাতকে উন্নত করতে রেমিট্যান্স ব্যয় কমাতে হবে। এজন্য একটি নিদিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে মাপকাঠি তৈরি করে দিতে হবে যে, এর বেশি রেমিট্যান্স পাঠালে খরচ কি পরিমাণ হবে! আর নিচে পাঠালে কী পরিমাণ খরচ হবে!’

তিনি বলেন, আমাদের দেশে দারিদ্রের সঙ্গে অভিবাসন জড়িত। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে। এ বিশেষ অঞ্চলের জন্য সরকারের উচিৎ একটি ফান্ড তৈরি করে দেয়া। যাতে একজন ব্যক্তি সহজে ঋণ নিয়ে বিদেশে যেতে পারেন।

সেলিম রেজা বলেন, অভিবাসীরা সোনার মানুষ। তাদের আমরা অনেক সহায়তা দিতে পারি না। আমাদের লিমিটেশনের কারণে।  সরকার অভিবাসীদের শান্তি, নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা দিতে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। এজন্য সব স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে এক সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চাই।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৯
জিসিজি/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।