ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘বিজিএমসির অদক্ষতায় পাটকল শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৯
‘বিজিএমসির অদক্ষতায় পাটকল শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া’ টিইউসির সভাপতি শহিদুল্লাহ চৌধুরী, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজিএমসি) অদক্ষতার কারণেই পাটকল শ্রমিকদের শত শত কোটি টাকা মজুরি বকেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) সভাপতি শ্রমিক নেতা শহিদুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, বিজিএমসি পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের কারো পাটশিল্প সমন্ধে সাধারণ ধারণাটাও নেই। যার ফলে একদিকে শ্রমিকদের শত শত কোটি টাকা মজুরি বকেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠানটির দায়-দেনাও রয়েছে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা।

বুধবার (১ মে) সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন এ শ্রমিক নেতা।

পাটশিল্প বিষয়ে তিনি বলেন, পাটশিল্পে অগ্রগতি যেমন আছে, তেমনি অবনতিও আছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন পাটকল সফলতার সঙ্গে অগ্রসর হচ্ছে। এমনকি তারা ভারতের পাটশিল্পের যে আন্তর্জাতিক বাজার ছিলো, সেটাও ব্যক্তিমালিকানাধীন পাটশিল্প দখল করেছে। এখন পাটের আন্তর্জাতিক বাজার বাংলাদেশের হাতে।

টিইউসি সভাপতি বলেন, সঙ্কটটা সৃষ্টি হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত খাত বিজিএমসি থেকে। ২০০৯, ১০, ১১, ১২ এ চারবছরকে বলা হয় পাটশিল্পের স্বর্ণযুগ। কারণ তখন ভালো ম্যানেজমেন্টের পাশাপাশি কারখানা পরিচালনায় অভিজ্ঞ লোক ছিলো। তখনকার পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকিরও কিছু ভালো উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এছাড়া পাটশিল্পে প্রধানমন্ত্রীর কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে। কোনো লোকসান হয়নি। ২০১৩ সালে লতিফ সিদ্দিকির মন্ত্রিত্ব যাওয়ার পর, বিজিএমসিতে যারা এ সাফল্য এনেছিলো তাদের সরে যেতে হয়। এরপর যারা আসে বিজিএমসির পরিচালনার দায়িত্বে তারা পাটশিল্পকে ধংসের চরম জায়গায় নিয়ে গেছে।

টিউসির সভাপতি বলেন, ২০১৩ সালের পর উৎপাদন যেখানে দৈনিক সাড়ে আটশ টন হওয়ার কথা, সেখানে উৎপাদন ২৫০ থেকে ৩০০ টনে নেমে আসে। যেখানে এক টাকাও দায়-দেনা ছিলো না। সেখানে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আড়াই হাজার কোটি টাকা দায়-দেনায় পর্যবসিত হয় রাষ্ট্রায়ত্ত পাট শিল্প। যার ফলে পাটকল শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তারা দুই মাস, তিন মাস বেতন পায় না। অর্থের অভাবে তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। চরম দূরাবস্থার মধ্যে দিয়ে শ্রমিকরা দিনাতিপাত করছেন। এমন অবস্থায় নতুন যে পাটমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি ব্যবসায়ী হলেও পাট সমন্ধে অনভিজ্ঞ। আর বিজিএমসির যে আমলারা দায়িত্বে আছেন তারাও অনভিজ্ঞ। যার ফলে পাট শিল্পের বর্তমান এমন অবস্থা।

পাটকল শ্রমিদের সঙ্কট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে পাটশিল্পের সঙ্কট এবং পাটকল শ্রমিকদের সঙ্কট একীভূত হয়ে গেছে। তাই শিল্প এবং শ্রমিকদের সঙ্কট সমাধানে একসঙ্গে উদ্যোগ নিতে হবে। আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটশিল্পের ওপর যথেষ্ট সহানুভূতি আছে। তাই তিনি হস্তক্ষেপ করলে এ সমস্যার সমাধান হবে। পাশাপাশি অভিজ্ঞ লোকদের পরামর্শের মাধ্যমে আমাদের পাটশিল্পকে বাঁচানো সম্ভব।

বাংলাদেশের সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৯
আরকেআর/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।