ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নীলফামারীতে বসেছে পশুর হাট, নেই ক্রেতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৯
নীলফামারীতে বসেছে পশুর হাট, নেই ক্রেতা

নীলফামারী: আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বসেছে উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাটগুলোর মধ্যে অন্যতম নীলফামারীর ঢেলাপীর হাট। বিভিন্ন অঞ্চল থেকেই এ হাটে নিজেদের পশু নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। তবে এখনো ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়নি এ হাটে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নীলফামারীর সদর উপজেলা, বড়ুয়া, দশমাইল, রানীরবন্দর, তারাগঞ্জ, পাকেরহাটসহ বিভিন্ন স্থান থেকে খামারি ও বিক্রেতারা গরু, ছাগল, ভেড়া নিয়ে এসেছেন ঢেলাপীর হাটে। কোরবানির পশু পর্যাপ্ত থাকলেও এখনো তেমনভাবে জমে উঠেনি এ হাট।

তবে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরগুলোর মহাজনদের এ হাটে কোরবানির পশু কিনতে দেখা যায়। পশুর বর্তমান মূল্য সহনীয় মনে হলেও গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি বলছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই।

গরু বিক্রি করতে পার্শ্ববর্তী পাকেরহাট থেকে এসেছেন হাসান আলী। তিনি বাংলানিউজকে জানান, ইতোমধ্যে এক লাখ ৪৫ হাজার টাকায় তিনটি গরু বিক্রি করেছেন। বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী তার গরু তিনটি এ দরে বিক্রি করে ঠকেননি, এমন দাবি করলেও আরও কিছুদিন পর বিক্রি করলে পৌনে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারতেন বলেও জানান তিনি।

শহরের নতুন কয়ানিজপাড়া থেকে গরু কিনতে আসা মোকাররম বাংলানিউজকে বলেন, হাটে এসেছি পশুর দাম যাচাই করতে। পছন্দের গরুর অভাব নেই। ঘুরে দেখলাম, সাধ্যের মধ্যে ৫০ হাজার টাকায় মাঝারি আকারের একটি ভালো গরু পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। তবে পরবর্তী দিনে হাটে আরও ভালো গরু উঠতে পারে।  নীলফামারীর ঢেলাপীর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতারা।  ছবি: বাংলানিউজ‘গত বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে। এ হাটে পর্যাপ্ত দেশি গরু রয়েছে। এছাড়া ভারতীয় গরু তেমন দেখা যায়নি এ হাটে। ’

চম্পাতলি থেকে গরু বিক্রি করতে আসা আইজুল বাংলানিউজকে জানান, এখনও স্থানীয় ক্রেতারা আসতে শুরু করেননি। তাই হাটও জমে উঠেনি। যারাই এখান থেকে কিনছেন, তারা বেশিরভাগই বাইরের ক্রেতা। তাদের বেশিরভাগই এখান থেকে কিনে আরও বেশি দামে অন্য শহরে বিক্রি করে থাকেন।  
 
আরেক বিক্রেতা দশমাইলের করিম বাংলানিউজকে জানান, এখনো তো ঈদের দেরি আছে। আগে পশু কিনলে সেটি রাখার ও পালার ঝামেলা আছে। এছাড়া পশুর খাবারের দামও তো এখন বেশি। এসব কিছু ভেবেই ক্রেতারা এখনই পশু কিনছেন না। তবে কিছুদিনের মধ্যেই বেচা-কেনা জমে উঠবে বলে আশা করছি।

হাট ঘুরে দেখ যায়, মাঝারি আকারের গরুর দাম উঠেছে ৪৫ হাজার থেকে ৫৭ হাজার টাকা, ছোট সাইজের গরুর দাম উঠেছে ২৮ হাজার ৪২ হাজার টাকা, আর বড় সাইজের গরুর দাম ৬০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার পশুর মূল্য দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেশিই বলে জানান বিক্রেতারাও।

এবারের পশুর হাটে বাড়তি দাম দেখা গেছে ছাগলেরও। মাঝারি থেকে একটু বড় আকারের খাসি বিক্রি হচ্ছে ১৩ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকায়।

অন্যদিকে এ বছর পশু ক্রয়-বিক্রয়ের খাজনা রশিদের দামও বাড়িয়েছে ইজারাদাররা। গরু প্রতি রশিদ কাটা হচ্ছে সাড়ে ৩শ’ টাকা। যেখানে গত বছর ছিল আড়াইশো টাকা। ছাগলের রশিদে নেওয়া হচ্ছে ১৩০ টাকা, যেখানে গত বছর ছিলো ১২০ টাকা। হঠাৎ রশিদের মূল্য বাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হয় হাটের ইজারাদার কর্মী গোলাম মোস্তফার কাছে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে রশিদের মূল্যও বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে কোরবানির পশু বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ী ও কিনতে আসা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য হাটে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। পাশাপাশি জাল টাকা চিহ্নিত করতে রাখা হয়েছে মেশিন। হাটের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া আছে বলে জানান ইজারাদাররা।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৯
এসএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।