ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আগাম লাউশাকে চাষিদের মুখে হাসি

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
আগাম লাউশাকে চাষিদের মুখে হাসি

লালমনিরহাট: শীতকালীন সবজি হিসেবে লাউশাক বেশ জনপ্রিয়। সেটা আগাম হলে জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়। চাহিদা থাকায় লালমনিরহাটের লাউশাক চাষিদের মুখে ফুটেছে সাফল্যের হাসি।

চাষিরা জানান, শীতকালীন শাক-সবজি হিসেবে লাউশাক বা লাউয়ের চাহিদা প্রচুর। সেটা শীতের আগে হলে তার চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

বাজারের চাহিদা বিবেচনায় রেখে আগাম চাষে ঝুঁকে পড়েন চাষিরা। ইতোমধ্যে লালমনিরহাটের চাষিরা লাউশাক বাজারজাত করতে প্রায় প্রস্তুত করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে বাজারে উঠবে চাষিদের লাউশাক।  

লালমনিরহাটের সবজি এলাকা বলে খ্যাত আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি, সারপুকুর, ভেলাবাড়ি, সদর উপজেলার বড়বাড়ি, মোগলহাট, কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল, চলবলা, চন্দ্রপুরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিরা শীতকালীন সবজি চাষে উঠে পড়ে লেগেছেন। কেউ সবজি ক্ষেত পরিচর্যায়, কেউ ক্ষেতের জমি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বিভিন্ন জাতের শাক বাজারে উঠলেও লাউশাক স্থানীয় বাজারে তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। তবে কয়েকদিনের মধ্যে বাজারে আসবে শীতের লাউশাক। চাহিদা অনুযায়ী  লাউশাকের বাজার দরও বেশ চড়া। তাই অধিক মুনাফার আশা করছেন চাষিরা।

লাউশাকের ক্ষেত। ছবি: বাংলানিউজ আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের বিভার গ্রামের চাষি হরেন চন্দ্র দুই দোন (২৭ শতাংশে দোন) জমি লিজ নিয়েছেন বছরে ১৫ হাজার টাকায়। সেই জমির প্রায় ১৫ শতাংশে লাউশাক চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ৫ হাজার টাকা। বিক্রিযোগ্য হয়ে উঠেছে তার ক্ষেতের শাক। পাইকাররা দরদামও শুরু করেছেন। কিন্তু চাহিদামত দামে বনিবনা না হওয়ায় বিক্রি করেননি এখনো।  

চাষি হরেন চন্দ্র জানান, শহরের বাজারে আগাম লাউশাকের বেশ চাহিদা। তাই ক্ষেতের শাক তুলে বিভাগীয় শহর রংপুরে বিক্রি করবেন তিনি। সেখানে চারটি লাউ গাছের ডগার দাম ২০ টাকা। সে অনুযায়ী প্রথম দফায় ১৫/১৬ হাজার টাকায় বিক্রি হবে ক্ষেত। একবার কেটে নিলে প্রতিটি গাছে আবারো ২/৩টি করে শাখা বের হবে। সেটাও কেটে বাজারে বিক্রি করবেন। এভাবে চাহিদা অনুযায়ী শাক বিক্রি করবেন তিনি।  

১৫ শতাংশ জমির শাক বিক্রি করে প্রায় ৪৫/৫০ হাজার টাকা আয় করার স্বপ্ন তার। কয়েক বছর ধরে জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি চাষাবাদ করেই সংসার চলছে তার।  

পাশের গ্রাম সবদলের চাষি আফছার আলী জানান, উঁচু জমি সবজি চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত। তাই এসব অঞ্চলের চাষিরা সবজি চাষে বেশ আগ্রহী। বাজারে সবজির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বছর লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। তিনিও চলতি মৌসুমে লিজ নেওয়া দুই দোন জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষাবাদ করেছেন।

লাউশাকের ক্ষেত। ছবি: বাংলানিউজ লাউশাক বর্তমান বাজারে গাছ প্রতি ৩/৪ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। একবার গাছের আগা কেটে নিলে শাখা বের হয় আবার। এভাবে প্রায় এক/দেড় মাস বিক্রি হবে লাউশাক। সবজি চাষাবাদ করেই এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। ছোট মেয়ের লেখাপড়ার খরচসহ সংসার চলে এই সবজি চাষ থেকে আয় করা টাকায়।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক বিদু ভুষণ রায় বাংলানিউজকে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে শাক-সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।