ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আন্দোলনের জেরে আশুলিয়ায় দুই পোশাক কারখানা বন্ধ

সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯
আন্দোলনের জেরে আশুলিয়ায় দুই পোশাক কারখানা বন্ধ

আশুলিয়া (ঢাকা): অবৈধভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও ছাঁটাই শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহালের দাবিতে গত চার দিন ধরে টানা আন্দোলনের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হলো সাভারের আশুলিয়ার দুই পোশাক করাখানা। এছাড়া কারখানা গুলোতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকালে আশুলিয়ার শিমুলতলা এলাকায় অস্থিত ‘নাবা নিট কম্পোজিট লিমিটেড’ ও জামগড়ায় অবস্থিত ‘ইএসকেই ক্লোথিকং লিমিটেড’ নামে দু’টি পোশাক কারখানার সামনে বন্ধের নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়।

এর আগে, রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুই কারখানার শ্রমিকরা কাজ না করে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে আসচ্ছেন।

এরই জেরে সকালে কর্তৃপক্ষ কারখানার সামনে ১৩/১ ধারা মোতাবেক নোটিশ টানিয়ে দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন। তবে বন্ধ দিনগুলোতে শ্রমিকরা বেতন পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়।

নাবা নিট কম্পোজিট লিমিটেডের শ্রমিকরা জানায়, বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) কৌশলে ‘পিসি কমিটি’র সদস্যসহ ৩০ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে কর্তৃপক্ষ। তবে কী কারণে ছাঁটাই করা হয়েছে তা জানানো হয়নি। ছাঁটাইকরা শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছিলেন। বুধবার আন্দোলনের চতুর্থ দিনে কারখানা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।  
কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) আদম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কারখানায় আমরা কাজের অর্ডার পাচ্ছি না। কারখানায় কাজ নাই বললেই চলে, সে কারণেই ৩০ জনকে সব পাওনাদি পারিশোধ করে দিয়ে ছাঁটাই করা হয় ও কারখানায় মোবাইল নিষিদ্ধ করা হয়। এর প্রতিবাদে শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ পালন করতে থাকে কয়েদিন যাবৎ। এ কারণে ১৩/১ ধারা অনুযায়ী কারখানার সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। কারখানার শৃঙ্খলা না ফেরা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
এদিকে ‘ইএসকেই ক্লোথিকং লিমিটেড’ কারখানার শ্রমিকরা জানায়, বেতন-ভাতা ঠিকমতো না দেওয়া ও গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ৩০ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করার প্রতিবাদে রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) কাজ বন্ধ করে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংর্ঘষে চার নারী আহত হন। সেই সংঘর্ষ ও ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে টানা চারদিন শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। এজন্য সকালে কারখানার সামনে বন্ধের নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এজিএম) নজরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের (বিটিজিডব্লিউএল) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক সরোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনের সবাই চেষ্টা করে খুব দ্রুত এর সমাধান করা উচিৎ। শ্রমিক অসন্তোষের জের ধরে যেন কোনো কুচক্রী মহল সুবিধা ভোগ না করতে পারে৷ খুব দ্রুত কারখানা দু’টির কাজ চালু করার জন্য প্রশাসন, সরকার, বিজিএমইএ ও কারখানা কর্তৃপক্ষকে এক সঙ্গে কাজ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।  

এ ব্যাপারে শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) সানা সামিনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, দুই কারখানায় নিয়ম মেনে শ্রমিকদের ছাটাই করা হয়েছে। এ নিয়ে শ্রমিকরা না বুঝে গত কয়েদিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছিলে। এরই জের বুধবার সকাল থেকে কর্তৃপক্ষ কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করেন৷ আমরা কাজ করছি বিষয়টি সমাধান করার জন্য।

এছাড়া কারখানা দু’টিতে কোনো অপ্রিতকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।