ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফিরে আসবে রেশমের হারানো ঐতিহ্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯
ফিরে আসবে রেশমের হারানো ঐতিহ্য রেশমের বাম্পার ফলন পেয়ে মহা খুশি চাষি। ছবি: বাংলানিউজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: দীর্ঘদিন ধরে রেশম চাষের সঙ্গে জড়িয়ে থাকলেও লাভের মুখ দেখেননি তেমন একটা। রেশম চাষ করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বার বার। কিন্ত বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে চালিয়ে গেছেন রেশম চাষ। এ বছর রেশমের বাম্পার ফলন পেয়ে মহা খুশি তিনি ও তার পরিবার।

হাসি মুখে কথাগুলো বলছিলেন ভোলাহাট উপজেলার চরধরমপুর গ্রামের রেশম চাষি সমরুদ্দিন।

রেশমের গুটি বস্তাভর্তি করতে করতে তিনি জানান, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের ডিজি স্যার আব্দুল হাকিম ও পিডি স্যার আব্দুল মান্নান যোগদান করার পর থেকে তার মত ভোলাহাট উপজেলার ১৬০ জন চাষি রেশমের বাম্পার ফলন পেয়েছেন।

এতে মহা খুশি তারা।

একই মত চরধরমপুর গ্রামের রেশম চাষি বজলুর রশিদ, সায়েদা খাতুন, ধরমপুর গ্রামের তোফাজ্জুল হক, বজরাটেক গ্রামের হামিদুলের। তারাও এবছর রেশমের বাম্পার ফলন পেয়ে খুশিতে আত্মহারা।

এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদ্য যোগদানকারী রেশম বোর্ডের কর্মকর্তারা রেশমের সুদিন ফিরিয়ে আনতে রেশম চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। আদর্শ পদ্ধতিতে রেশম চাষের পরার্মশ দিয়েছেন। সরকারি বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাসহ জীবাণুমুক্ত ডিম সরবরাহ করেছেন। ফলে এক বছরের ৪টি বন্দ অগ্রণী, চৈয়তা, জৈষ্ঠি ও ভাদরি বন্দে রেশমের বাম্পার ফলন পেয়েছেন চাষিরা।

চাষিরা জানান, এর আগে কর্মকর্তাদের গাফলতির কারণে ও কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখায় ফলন বিপর্যয় হতো। এর আগে এ ৪টি বন্দে ১শ’ ডিমে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ কেজি ফলন পাওয়া গেলেও বর্তমান পদ্ধতি অবলম্বন করে এখন ফলন পান ১শ’ ডিমে ৯০-৯৫ কেজি। আগে মণ প্রতি দাম মাত্র ৮-৯ হাজার টাকা পাওয়া গেলেও এখন কৃষক দাম পাচ্ছেন ১৪-১৫ হাজার টাকা করে। আর এবছর রেশমের দাম পাওয়ায় যারা রেশম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তারাও রেশম চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

বার বার লোকসানের কারণে রেশম চাষ ছেড়ে দেওয়া সাবিরুদ্দিন জানান, আগ্রহী চাষিদের মধ্যে উন্নতমানের তুঁত চারা সরবরাহসহ আর্থিক সহায়তা দিলে রেশম চাষ আগের ঐতিহ্য ফিরে পাবে, বাড়বে রেশম চাষিদের পরিবারে স্বচ্ছলতা। রেশমের বাম্পার ফলনে চাষিদের মধ্যে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে তাই তারও রেশম চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

তিনি আরও জানান, তার মত অনেক রেশম চাষি আবারও রেশম চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে ভোলাহাট রেশম বোর্ড ফার্ম ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম জানান, জীবাণুমুক্ত ডিম সরবরাহ, নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিদর্শন করে পরামর্শ দেওয়ার কারণে এ বছর রেশমের বাম্পার ফলন হয়েছে। রেশম চাষিদের দাবি এভাবে চলতে থাকলে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে রেশমের আগের ঐতিহ্য। রেশম চাষিদের ঘরে ঘরে ফুটবে সুখের হাসি।

ভোলাহাট উপজেলা এক সময় যেমন রেশম চাষের জন্য বিখ্যাত ছিল, এ ধারা অব্যাহত থাকলে আবারও সে ঐতিহ্য ফিরে পাবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।