সোমবার (৬ জানুয়ারি) মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মহাপরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর কাউন্টডাউন শুরুর দিন আগামী ১০ জানুয়ারি (শুক্রবার) ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওইদিন বাণিজ্যমেলা বন্ধ থাকবে।
প্রসঙ্গত, মেলা শুরুর দিন সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সুপারিশের আলোকে গঠিত নিরাপত্তা উপ-কমিটির সভায় আগামী ১০ জানুয়ারি বাণিজ্যমেলা বন্ধ রাখতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১২ সিটি করপোরেশনের ২৮টি পয়েন্টে, বিভাগীয় শহরগুলোতে, ৫৩ জেলা ও দুই উপজেলা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৮৩টি পয়েন্টে কাউন্টডাউন ঘড়ি বসানো হবে। এসব স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। একই সঙ্গে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। অনুষ্ঠান যাতে বিভিন্ন স্থান থেকে জনসাধারণ দেখতে পায়, সেজন্য টিভি স্ক্রিন বসানো হবে। ১০ জানুয়ারি প্যারেড গ্রাউন্ডে কাউন্টডাউন অনুষ্ঠানে দুই হাজার আমন্ত্রিত অতিথি ও ১০ হাজার দর্শক থাকবেন। দর্শক যারা যাবেন, তারা মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে নাম রেজিস্ট্রেশন করে যেতে পারবেন বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, কাউন্টডাউন উদ্বোধনের দিন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে সেনাবাহিনী, তাদের সহযোগিতা করবে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদসহ প্রশাসন ও নিরাপত্তাকর্মীরা বিষয়টি দেখাশোনা করবেন। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।
ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, এবারের বাণিজ্যমেলায় বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ভোক্তা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের নিয়ে চারটি দল সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। নিরাপত্তার জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে থাকছে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যমেরা। মেলার দুই প্রান্তে দু’টি শিশু পার্ক, দু’টি দৃষ্টি নন্দন ফোয়ারা, একটি ইকো পার্ক, একটি মা ও শিশু কেন্দ্র, একটি বঙ্গবন্ধু প্যাভেলিয়ন এবং একটি ইপিবির তথ্য সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। রয়েছে ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার (ডিজিটাল টাচ স্ক্রিন প্রযুক্তি), যার মাধ্যমে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা নির্দিষ্ট স্টল ও প্যাভিলিয়ন অতি সহজে খুঁজে বের করতে পারেন। এছাড়াও পর্যাপ্ত এটিএম বুথ, রেডিমেট গার্মেন্ট পণ্য, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালী ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। আরও থাকছে তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি, নির্মাণ সামগ্রী ও ফার্নিচার সামগ্রী।
মেলায় সবমিলিয়ে ৪৫০টি স্টল থাকছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬১টি, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৪৭টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১০, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন ৮৫টি, প্রিমিয়ার স্টল ৮৪টি, রেস্টুরেন্ট দু’টি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন আটটি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ছয়টি, বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি, বিদেশি প্রিমিয়ার স্টল ১৭টি, স্ন্যাক্স বুথ আটটি ও ফুড স্টল ৩৫টি। এছাড়া সাধারণ স্টল ৫০টির মধ্যে নারীদের জন্য রয়েছে ২০টি স্টল। বাংলাদেশ ছাড়াও আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলায় ২৩টি দেশের বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। এরমধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভুটান, নেপাল, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপ, জাপান, ইটালি, দুবাই, ডেনমার্ক, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলংঙ্কা, ব্রাজিল, ফিলিপাইন, রাশিয়া, জার্মানি, তাইওয়ান ও হংকং।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২০
জিসিজি/আরআইএস/